মো. রাকিবুল ইসলাম

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথম কারণটি হলো সময়ের স্বল্পতা, দ্বিতীয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় না পাওয়া এবং শেষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া।
এর আগে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পদ্ধতি ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিচালনার বিষয়ে ধারাবাহিক সংলাপ করেছে। সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ আটটি রাজনৈতিক দল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পক্ষে মত দেয়। বিএনপি এই সংলাপে অংশগ্রহণ না করলেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও ইভিএম বিষয়ে আপত্তির কথা বলেছে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ ইভিএমের ব্যাপারে আপত্তির কথা জানায়। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন প্রথমে দেড় শ সংসদীয় আসনে ইভিএম এবং বাকি দেড় শ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানায় এবং সেই মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে।
কিন্তু সম্ভবত দেশের বর্তমান বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থায় ইভিএম প্রস্তুত ও কেনার জন্য নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাওয়া যায়নি বলে শেষে কমিশন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তটি কি নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে শাপে বর হলো? উত্তর পেতে হয়তো আমাদের আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবের সংবাদ সম্মেলনে শুধু অর্থসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতৈক্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। এটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে নিশ্চয়ই।
দেশে নির্বাচন ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়াসংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে হুদা কমিশনের সময় থেকেই। এমতাবস্থায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের ঘোষণা কিছুটা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। তবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের করণীয় আছে আরও বেশ কিছু কাজ। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে কমিশন আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু ব্যালট পেপারে হবে, তাই আসন্ন পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হতে পারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের একটি লিটমাস টেস্ট। গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ট্রায়াল হিসেবে কমিশন চাইলে ব্যালটে ভোট গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশন আবার ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন যেহেতু ব্যালটের মাধ্যমে হচ্ছে, সেহেতু বিতর্ক নিরসনে এবং নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থায় আসতে কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও প্রতিজ্ঞার বিষয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা প্রদান করতে পারে। কিন্তু পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা এই আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি করতে পারে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। ইভিএম নিয়ে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ব্যালটের মাধ্যমে হবে, সেহেতু কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে নতুন করে ইভিএম ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি না করাই সমীচীন।
এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে সমর্থন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়। এদিকে ব্যালটে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আপত্তির কথা জানা যায়নি। যদিও মূলত কেবল আর্থিক বিবেচনায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়তো মেনে নিয়েছে দলটি, তবু এটি ক্ষমতাসীন দলের দিক থেকে বড় রকমের সমঝোতা বলা যায়। আবার বিরোধী দলগুলোর প্রধান দাবিগুলোর একটি ব্যালটে ভোট গ্রহণ; সেটিও এক অর্থে পূরণ হয়েছে। এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি।
এই অগ্রগতিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশনের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ যেন বিতর্ক ও আস্থার সংকট তৈরি না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। আবার শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একটি মতৈক্যে না পৌঁছায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য সব কটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব রয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা। ইভিএমের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে সংকট রয়েছে, সেটিও রাজনৈতিক দলসমূহের সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধান হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করতেই পারি। তবে এ ক্ষেত্রে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে।
অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন কিংবা ফর্মুলা আমাদের নিজেদের সংকট সমাধান করতে পারবে না। বিদেশি বন্ধুদেশের রাষ্ট্রদূতেরা নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেন, সেটি যেকোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য বিব্রতকর। এ দেশে অগণতান্ত্রিক সেনাশাসিত সরকারকে অপসারণ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোই। এই ইতিহাস আমাদের রয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আমাদের সংকট সমাধান করেনি কিন্তু। তাই আমাদের রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক সংকট রয়েছে তবে আমরা এখনো বিশ্বাস করি, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের দূরদর্শিতা, সততা এবং দেশের মানুষের প্রতি প্রতিজ্ঞা সমস্ত সংকট দূর করে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, নির্বাচন কমিশনের শক্তিশালী কর্মতৎপরতা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকারিতাই পারে নির্বাচন নিয়ে ঘনীভূত সব সংকট নিরসন করে একটি সুন্দর সমাধান দিতে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন হোক জনগণের আস্থার প্রতীক।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথম কারণটি হলো সময়ের স্বল্পতা, দ্বিতীয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় না পাওয়া এবং শেষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া।
এর আগে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পদ্ধতি ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিচালনার বিষয়ে ধারাবাহিক সংলাপ করেছে। সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ আটটি রাজনৈতিক দল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পক্ষে মত দেয়। বিএনপি এই সংলাপে অংশগ্রহণ না করলেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও ইভিএম বিষয়ে আপত্তির কথা বলেছে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ ইভিএমের ব্যাপারে আপত্তির কথা জানায়। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন প্রথমে দেড় শ সংসদীয় আসনে ইভিএম এবং বাকি দেড় শ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানায় এবং সেই মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে।
কিন্তু সম্ভবত দেশের বর্তমান বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থায় ইভিএম প্রস্তুত ও কেনার জন্য নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাওয়া যায়নি বলে শেষে কমিশন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তটি কি নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে শাপে বর হলো? উত্তর পেতে হয়তো আমাদের আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবের সংবাদ সম্মেলনে শুধু অর্থসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতৈক্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। এটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে নিশ্চয়ই।
দেশে নির্বাচন ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়াসংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে হুদা কমিশনের সময় থেকেই। এমতাবস্থায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের ঘোষণা কিছুটা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। তবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের করণীয় আছে আরও বেশ কিছু কাজ। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে কমিশন আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু ব্যালট পেপারে হবে, তাই আসন্ন পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হতে পারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের একটি লিটমাস টেস্ট। গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ট্রায়াল হিসেবে কমিশন চাইলে ব্যালটে ভোট গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশন আবার ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন যেহেতু ব্যালটের মাধ্যমে হচ্ছে, সেহেতু বিতর্ক নিরসনে এবং নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থায় আসতে কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও প্রতিজ্ঞার বিষয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা প্রদান করতে পারে। কিন্তু পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা এই আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি করতে পারে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। ইভিএম নিয়ে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ব্যালটের মাধ্যমে হবে, সেহেতু কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে নতুন করে ইভিএম ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি না করাই সমীচীন।
এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে সমর্থন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়। এদিকে ব্যালটে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আপত্তির কথা জানা যায়নি। যদিও মূলত কেবল আর্থিক বিবেচনায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়তো মেনে নিয়েছে দলটি, তবু এটি ক্ষমতাসীন দলের দিক থেকে বড় রকমের সমঝোতা বলা যায়। আবার বিরোধী দলগুলোর প্রধান দাবিগুলোর একটি ব্যালটে ভোট গ্রহণ; সেটিও এক অর্থে পূরণ হয়েছে। এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি।
এই অগ্রগতিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশনের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ যেন বিতর্ক ও আস্থার সংকট তৈরি না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। আবার শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একটি মতৈক্যে না পৌঁছায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য সব কটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব রয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা। ইভিএমের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে সংকট রয়েছে, সেটিও রাজনৈতিক দলসমূহের সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধান হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করতেই পারি। তবে এ ক্ষেত্রে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে।
অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন কিংবা ফর্মুলা আমাদের নিজেদের সংকট সমাধান করতে পারবে না। বিদেশি বন্ধুদেশের রাষ্ট্রদূতেরা নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেন, সেটি যেকোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য বিব্রতকর। এ দেশে অগণতান্ত্রিক সেনাশাসিত সরকারকে অপসারণ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোই। এই ইতিহাস আমাদের রয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আমাদের সংকট সমাধান করেনি কিন্তু। তাই আমাদের রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক সংকট রয়েছে তবে আমরা এখনো বিশ্বাস করি, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের দূরদর্শিতা, সততা এবং দেশের মানুষের প্রতি প্রতিজ্ঞা সমস্ত সংকট দূর করে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, নির্বাচন কমিশনের শক্তিশালী কর্মতৎপরতা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকারিতাই পারে নির্বাচন নিয়ে ঘনীভূত সব সংকট নিরসন করে একটি সুন্দর সমাধান দিতে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন হোক জনগণের আস্থার প্রতীক।
মো. রাকিবুল ইসলাম

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথম কারণটি হলো সময়ের স্বল্পতা, দ্বিতীয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় না পাওয়া এবং শেষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া।
এর আগে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পদ্ধতি ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিচালনার বিষয়ে ধারাবাহিক সংলাপ করেছে। সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ আটটি রাজনৈতিক দল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পক্ষে মত দেয়। বিএনপি এই সংলাপে অংশগ্রহণ না করলেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও ইভিএম বিষয়ে আপত্তির কথা বলেছে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ ইভিএমের ব্যাপারে আপত্তির কথা জানায়। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন প্রথমে দেড় শ সংসদীয় আসনে ইভিএম এবং বাকি দেড় শ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানায় এবং সেই মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে।
কিন্তু সম্ভবত দেশের বর্তমান বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থায় ইভিএম প্রস্তুত ও কেনার জন্য নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাওয়া যায়নি বলে শেষে কমিশন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তটি কি নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে শাপে বর হলো? উত্তর পেতে হয়তো আমাদের আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবের সংবাদ সম্মেলনে শুধু অর্থসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতৈক্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। এটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে নিশ্চয়ই।
দেশে নির্বাচন ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়াসংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে হুদা কমিশনের সময় থেকেই। এমতাবস্থায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের ঘোষণা কিছুটা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। তবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের করণীয় আছে আরও বেশ কিছু কাজ। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে কমিশন আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু ব্যালট পেপারে হবে, তাই আসন্ন পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হতে পারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের একটি লিটমাস টেস্ট। গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ট্রায়াল হিসেবে কমিশন চাইলে ব্যালটে ভোট গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশন আবার ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন যেহেতু ব্যালটের মাধ্যমে হচ্ছে, সেহেতু বিতর্ক নিরসনে এবং নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থায় আসতে কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও প্রতিজ্ঞার বিষয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা প্রদান করতে পারে। কিন্তু পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা এই আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি করতে পারে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। ইভিএম নিয়ে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ব্যালটের মাধ্যমে হবে, সেহেতু কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে নতুন করে ইভিএম ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি না করাই সমীচীন।
এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে সমর্থন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়। এদিকে ব্যালটে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আপত্তির কথা জানা যায়নি। যদিও মূলত কেবল আর্থিক বিবেচনায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়তো মেনে নিয়েছে দলটি, তবু এটি ক্ষমতাসীন দলের দিক থেকে বড় রকমের সমঝোতা বলা যায়। আবার বিরোধী দলগুলোর প্রধান দাবিগুলোর একটি ব্যালটে ভোট গ্রহণ; সেটিও এক অর্থে পূরণ হয়েছে। এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি।
এই অগ্রগতিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশনের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ যেন বিতর্ক ও আস্থার সংকট তৈরি না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। আবার শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একটি মতৈক্যে না পৌঁছায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য সব কটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব রয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা। ইভিএমের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে সংকট রয়েছে, সেটিও রাজনৈতিক দলসমূহের সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধান হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করতেই পারি। তবে এ ক্ষেত্রে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে।
অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন কিংবা ফর্মুলা আমাদের নিজেদের সংকট সমাধান করতে পারবে না। বিদেশি বন্ধুদেশের রাষ্ট্রদূতেরা নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেন, সেটি যেকোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য বিব্রতকর। এ দেশে অগণতান্ত্রিক সেনাশাসিত সরকারকে অপসারণ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোই। এই ইতিহাস আমাদের রয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আমাদের সংকট সমাধান করেনি কিন্তু। তাই আমাদের রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক সংকট রয়েছে তবে আমরা এখনো বিশ্বাস করি, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের দূরদর্শিতা, সততা এবং দেশের মানুষের প্রতি প্রতিজ্ঞা সমস্ত সংকট দূর করে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, নির্বাচন কমিশনের শক্তিশালী কর্মতৎপরতা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকারিতাই পারে নির্বাচন নিয়ে ঘনীভূত সব সংকট নিরসন করে একটি সুন্দর সমাধান দিতে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন হোক জনগণের আস্থার প্রতীক।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথম কারণটি হলো সময়ের স্বল্পতা, দ্বিতীয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় না পাওয়া এবং শেষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া।
এর আগে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পদ্ধতি ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিচালনার বিষয়ে ধারাবাহিক সংলাপ করেছে। সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ আটটি রাজনৈতিক দল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পক্ষে মত দেয়। বিএনপি এই সংলাপে অংশগ্রহণ না করলেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও ইভিএম বিষয়ে আপত্তির কথা বলেছে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ ইভিএমের ব্যাপারে আপত্তির কথা জানায়। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন প্রথমে দেড় শ সংসদীয় আসনে ইভিএম এবং বাকি দেড় শ আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানায় এবং সেই মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে।
কিন্তু সম্ভবত দেশের বর্তমান বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থায় ইভিএম প্রস্তুত ও কেনার জন্য নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাওয়া যায়নি বলে শেষে কমিশন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তটি কি নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে শাপে বর হলো? উত্তর পেতে হয়তো আমাদের আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবের সংবাদ সম্মেলনে শুধু অর্থসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতৈক্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। এটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে নিশ্চয়ই।
দেশে নির্বাচন ও ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়াসংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে হুদা কমিশনের সময় থেকেই। এমতাবস্থায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের ঘোষণা কিছুটা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। তবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের করণীয় আছে আরও বেশ কিছু কাজ। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে কমিশন আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু ব্যালট পেপারে হবে, তাই আসন্ন পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হতে পারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের একটি লিটমাস টেস্ট। গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ট্রায়াল হিসেবে কমিশন চাইলে ব্যালটে ভোট গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কমিশন আবার ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন যেহেতু ব্যালটের মাধ্যমে হচ্ছে, সেহেতু বিতর্ক নিরসনে এবং নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থায় আসতে কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও প্রতিজ্ঞার বিষয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা প্রদান করতে পারে। কিন্তু পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা এই আস্থার জায়গায় সংকট তৈরি করতে পারে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে। ইভিএম নিয়ে যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ব্যালটের মাধ্যমে হবে, সেহেতু কমিশন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে নতুন করে ইভিএম ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি না করাই সমীচীন।
এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে সমর্থন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়। এদিকে ব্যালটে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আপত্তির কথা জানা যায়নি। যদিও মূলত কেবল আর্থিক বিবেচনায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়তো মেনে নিয়েছে দলটি, তবু এটি ক্ষমতাসীন দলের দিক থেকে বড় রকমের সমঝোতা বলা যায়। আবার বিরোধী দলগুলোর প্রধান দাবিগুলোর একটি ব্যালটে ভোট গ্রহণ; সেটিও এক অর্থে পূরণ হয়েছে। এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি।
এই অগ্রগতিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশনের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ যেন বিতর্ক ও আস্থার সংকট তৈরি না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। আবার শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একটি মতৈক্যে না পৌঁছায়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য সব কটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব রয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা। ইভিএমের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে সংকট রয়েছে, সেটিও রাজনৈতিক দলসমূহের সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধান হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করতেই পারি। তবে এ ক্ষেত্রে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে।
অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন কিংবা ফর্মুলা আমাদের নিজেদের সংকট সমাধান করতে পারবে না। বিদেশি বন্ধুদেশের রাষ্ট্রদূতেরা নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেন, সেটি যেকোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য বিব্রতকর। এ দেশে অগণতান্ত্রিক সেনাশাসিত সরকারকে অপসারণ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোই। এই ইতিহাস আমাদের রয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আমাদের সংকট সমাধান করেনি কিন্তু। তাই আমাদের রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক সংকট রয়েছে তবে আমরা এখনো বিশ্বাস করি, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের দূরদর্শিতা, সততা এবং দেশের মানুষের প্রতি প্রতিজ্ঞা সমস্ত সংকট দূর করে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, নির্বাচন কমিশনের শক্তিশালী কর্মতৎপরতা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকারিতাই পারে নির্বাচন নিয়ে ঘনীভূত সব সংকট নিরসন করে একটি সুন্দর সমাধান দিতে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন হোক জনগণের আস্থার প্রতীক।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথ
০৭ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথ
০৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথ
০৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। নিঃসন্দেহে এটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পেছনে নির্বাচন কমিশন মূলত তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথ
০৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫