Ajker Patrika

গাঁজা গাছ দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব টেকসই বাড়ি

গাঁজা গাছ দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব টেকসই বাড়ি

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজশায়ারে সবুজ মাঠে ঘেরা একটি ফ্ল্যাট। দূর থেকে দেখে মনে হয় শস্যাগার, কিন্তু ভেতরে প্রবেশের পর ডিজাইন আর জাঁকজমক দেখে আপনি চমকে যাবেন। আরও অবাক হবেন যখন জানবেন, বাড়িটা গাঁজার গাছ দিয়ে তৈরি। গাঁজার গাছের খড়ি দিয়ে বানানো বাড়িটিতে বেশ আলো-বাতাস চলাচল করে, সঙ্গে আরামদায়ক তো বটেই। 

এ বিষয়ে বাড়িটির মালিক জেমা ব্যারন বলেন, ‘বাড়িটির দেয়ালগুলো আমাকে ছোটবেলায় পাটখড়ি দিয়ে ঘর বানানোর দিনগুলো মনে করিয়ে দেয়। এমন বাড়িতে বাস করা বেশ আরামদায়ক। গত বছর শীতকালে ২৪ ঘণ্টাই ঘর গরম ছিল, ফলে আমাদের হিটিং মেশিন চালুই করতে হয়নি।’ 

গাঁজাকে এত দিন সাইকোঅ্যাকটিভ মাদক হিসেবে এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকলেও এবার পরিবেশবান্ধব ও টেকসই বাড়িঘর তৈরির নির্মাণসামগ্রী হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।হেম্পক্রিটকে কংক্রিটের মতো টেকসই উপকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কম-কার্বন বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

দ্রুত বর্ধনশীল গাজার গাছ একটি নবায়নযোগ্য সম্পদ। এর কার্বন শোষণ ক্ষমতাও বেশি। যখন বাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, তখন এটিকে সাধারণত ‘হেম্পক্রিট’ বা লাইম হেম্প কংক্রিটে পরিণত করা হয়। এটি তৈরি করা হয় গাঁজার গাছের কাণ্ড, শিকড়, পানি এবং চুনের মিশ্রণে। হেম্পক্রিট ভবনকে শক্তিশালী এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করে। এটি অক্ষত থাকা অবস্থা পর্যন্ত কার্বন শোষণ করতে থাকে। 

সারা বিশ্বের নির্মাণশিল্প এখন কার্বনমুক্ত বাড়ি তৈরির প্রক্রিয়ার দিকে ঝুঁকছে, ফলে টেকসই উপকরণের চাহিদা বাড়ছে। ভবন এবং নির্মাণশিল্প প্রায় ৩৭ শতাংশ বৈশ্বিক কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের জন্য দায়ী। এই শিল্প উৎপাদন প্রক্রিয়ায় গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরিত হয় এমন পদার্থ যেমন—কংক্রিট, ইস্পাত এবং কাচের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।

গাঁজার শণের কার্বন শোষণের মতো গুণকে কাজে লাগিয়ে নানা দেশ নির্মাণশিল্পকে আরও টেকসই ও কার্বন নির্গমন মুক্ত করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

যুক্তরাজ্যের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের জলবায়ু অ্যাকশনের প্রধান ইয়েতুন্দে আবদুল বলেছেন, ‘বিল্ডিং ডিজাইন, নির্মাণ এবং সংস্কারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, এটি হ্রাসে হেম্পক্রিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যা যুক্তরাজ্যকে জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম করবে।’গাঁজার শণের দেয়ালের উচ্চ তাপীয় ভরের কারণে হেম্পক্রিটের ফ্ল্যাট বাড়িতে শীতকালে গরম থাকে।

ইউরোপীয় কমিশনের মতে, এক হেক্টরের গাঁজার বাগান ৯ থেকে ১৫ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে থাকে। গাঁজার গাছ বাড়তেও সময় নেয় মাত্র পাঁচ মাস। যার অর্থ কার্বন শোষণের ক্ষেত্রে সাধারণ বাণিজ্যিক বনায়নের চেয়ে এটি এগিয়ে। মাটি উর্বর করতে এবং মাটি থেকে ভারী ধাতু অপসারণেও গাঁজার গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

তবে নির্মাণশিল্পে গাঁজার শণের ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরুর আগে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সরকারের আইন, প্রযুক্তিগত সনদ এবং গাঁজার চাষ বৃদ্ধি, সরবরাহ, সাশ্রয়ী করার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল এবং অবকাঠামোর পরিবর্তন। 

বর্তমানে গাঁজা গাছের হেম্পক্রিট দিয়ে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাতে স্বল্প বাজেটে বাড়ি তৈরি করছেন পরিবেশ নিয়ে সচেতন স্থপতিরা। এসব অঞ্চলে গাঁজার ওপর নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তাঁরা এটি করতে পারছেন। 

হেম্পক্রিট কংক্রিটের মতো স্তরে স্তরে স্থাপন করা যায় না। কাঠ বা পাথরের মতো ভার বহনকারী উপকরণের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এটি পেট্রোকেমিক্যাল-ভিত্তিক উপকরণ ফাইবারগ্লাস এবং ফোম বোর্ডের চেয়ে কার্বন নিঃসরণ কম করে থাকে। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজশায়ারের হেম্পক্রিট দিয়ে তৈরি করা ফ্ল্যাট বাড়ি।

কেমব্রিজশায়ারে ২০২০ সালে ফ্ল্যাট বাড়িটি নির্মাণ করে লন্ডনের গবেষণা ও ডিজাইন স্টুডিও ‘ম্যাটেরিয়াল কালচার’। সংস্থাটির সহপ্রতিষ্ঠাতা সামার ইসলাম বলেছেন, ‘হেম্পক্রিট সবকিছুই করে। উচ্চ তাপধারণ ক্ষমতার কারণে এটি উত্তপ্ত হয় এবং ধীরে ধীরে তাপ ছাড়ে। পাশাপাশি দিনের বেলা বাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি হাইড্রোস্কোপিক হওয়ার ফলে আর্দ্রতা শোষণ করে এবং ছাড়ে।’ 

কেমব্রিজশায়ারের বাড়িটিতে ব্যবহৃত গাঁজার শণ মার্জেন্ট ফার্মের আশপাশের জমি থেকে নেওয়া হয়েছিল। ম্যাটেরিয়াল কালচারস এই প্রকল্পকে ‘চক্রাকার বাস্তুতন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছে। আগে থেকেই করে রাখা প্যানেলের তাকে হেম্পক্রিট বসিয়ে বাড়িটির দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরের ভেতরে হেম্পক্রিটের ওপর কোনো পালিশ দেওয়া হয়নি। এ কারণে বাইরে থেকে দেখতে খড়ের গাঁটের মতো লাগে। অনেকটা পল্লি এলাকার বেড়ার বাড়ির মতো। 

হেম্পক্রিটের একটি অপূর্ণতা হলো এটি বৃষ্টির সংস্পর্শে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ নিয়ে কাজ করছে ম্যাটেরিয়াল কালচারস। প্রতিষ্ঠানটি গাঁজার গাছের ফাইবারকে প্রাকৃতিক চিনির রেজিন দিয়ে তাপীয়ভাবে সংকুচিত করে বৃষ্টি প্রতিরোধী ক্ল্যাডিং প্যানেল তৈরি করছে। 

গাঁজা গাছের শিকড় ছাড়াও বাইরের আঁশযুক্ত ত্বকের ব্যবহারও বেড়েছে। বাস্ট ফাইবার নামে পরিচিত এই অংশ এরই মধ্য মহাকাশ এবং গাড়ি নির্মাণ শিল্পে ফাইবারগ্লাসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ম্যাটেরিয়াল কালচার পূর্ব–সাসেক্সের লুয়েসে নতুন ফিনিক্স প্রকল্পেও গাঁজার শণ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। 

অবশ্য হেম্পক্রিট নতুন কোনো আবিষ্কার নয়; এটি হাজার হাজার বছর ধরে ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। যাইহোক, গত শতাব্দীতে আরও আধুনিক নির্মাণসামগ্রীর উত্থান হয়েছে। তবে গাঁজা বিনোদনে ব্যবহার হওয়ায় এর শণ ব্যবহারে নানা নিষেধাজ্ঞা এসেছে। 

তবে ফ্রান্সে গাঁজা চাষ কখনোই বেআইনি ছিল না, ফলে নির্মাণশিল্পে গাঁজার ব্যবহারে দেশটি বিশ্বে শীর্ষে। ২০ শতকের শেষের দিকে হেম্পক্রিট আধুনিক প্রযুক্তিতে উৎপাদন শুরু হয় দেশটিতে। ফলে এ উপাদান ব্যবহার করে ফ্রান্সে বহু ভবন নির্মিত হয়েছে। 

হেম্পক্রিট দিয়ে ২০২০ সালে প্যারিসে সামাজিক আবাসন প্রকল্পের সাত তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছিল প্যারিসভিত্তিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘ব্রাগো ফ্রেস্কো’। প্রতিষ্ঠানটি আগের দশকেও বিভিন্ন স্থাপনায় হেম্পক্রিট ব্যবহার করেছিল। তবে এই প্রকল্পে এটির ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি। 

ব্রাগো ফ্রেস্কোর সহপ্রতিষ্ঠাতা থিবাউট ব্রাগো হেম্পক্রিটকে ‘স্থাপত্যগুণ সম্পন্ন’ বলে বর্ণনা করেছেন। 

সামার ইসলাম বলেন, যুক্তরাজ্যে বড় পরিসরে গাজার শণ দিয়ে বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প নেওয়ার এখনো কোনো উদ্যোগ নেই। এর জন্য যন্ত্রপাতি খুবই ব্যয়বহুল এবং সবখানে পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে গাঁজার শণের ব্যবসা, অবকাঠামোর উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উপাদানের ব্যবহারে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এটি না হওয়া পর্যন্ত হেম্পক্রিট ব্যয়বহুল এবং দুষ্প্রাপ্য উপাদান থেকে যাবে। 

গাঁজা চাষে নিষেধাজ্ঞা বাতিল ও এর বহুমুখী ব্যবহারের ফলে হেম্পক্রিটের ব্যবহার বাড়ছে। যদিও বর্তমানে প্রাথমিকভাবে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় এর চাষ হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিবেদন বলছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালে শণের জন্য গাঁজার চাষ ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। আর এ সময় ফ্রান্সেই মোট হেম্পের ৭০ ভাগ উৎপাদন হয়েছে। 

গত বছরের নভেম্বরে জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদনে গাঁজার শণ শিল্পের নানা সুবিধার তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘ পরামর্শ দিয়েছে, গাঁজার শণের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে দেশগুলোকে আইনি অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর সীমাবদ্ধতা কাটাতে হবে এবং উৎপাদন ব্যবস্থার সুবিধার্থে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

বিবিসি অবলম্বনে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

হাদিকে গুলি: মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির একাধিক বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’—ধরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ২১টি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন, শেরেবাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩য় ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’ (Climate Justice Assembly 2025)।

বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মোট ১৪টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশিষ্ট পরিবেশবিদ, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও সামাজিক আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জলবায়ু অধিকারভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সম্মেলনের আগে আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর আহ্বায়ক কমিটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাবেশের ঘোষণা দেন অ্যাসেম্বলি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল।

‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫’-এর লক্ষ্য, প্রস্তুতি, অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিসহ দুই দিনের সেশন পরিকল্পনা, র‌্যালি এবং অন্যান্য আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী এই সমাবেশের প্রথম দিন ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ক্লাইমেট র‌্যালিতে অংশগ্রহণ এবং র‌্যালি শেষে ক্লাইমেট জাস্টিজ এসেম্বলি ২০২৫ উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধরার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

দিনব্যাপী প্রোগ্রামে ৩টি প্লান্যারি সেশন থাকবে। বাংলাদেশে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে আসা ভুক্তভোগীরা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেবেন।

দ্বিতীয় দিনে ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় সমাবেশের প্রথম দিনের আলোচনার সারসংক্ষেপ, সুপারিশ ও করণীয় নিয়ে উপস্থাপন করা হবে ‘ড্রাফট অ্যাসেম্বলি ডিক্লারেশন’।

শরীফ জামিল বলেন, ‘প্রান্তিক এবং অপ্রান্তিক সকল মানুষের সচেতনতার মধ্য দিয়েই রূপান্তরের বাস্তবতার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যে এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫।’

ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর আহ্বায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘পরিবেশ ও জলবায়ু বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের পরিবেশকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছে; যা একটি মহৎ কাজ। কোনো কিছুর বিনিময়ে এ কাজের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু এই ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়ন প্রয়োজন। আমার যে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ করতে যাচ্ছি, তাতে অনেক সহযোগীর সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে, তা-ও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সঠিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায্যতার ন্যায্য প্রতিফলন পাওয়া সম্ভব।

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কো-কনভেনর, ক্লাইমেট জাস্টিজ অ্যাসেম্বলি ২০২৫-এর কো-কনভেনর এম এস সিদ্দিকি, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক, শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিলা আজিজ এবং জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫ এর সমন্বয়ক এবং সহযোগী সমন্বয়কেরা।

জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৫-এর আয়োজক ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)। সহযোগী আয়োজক সিপিআরডি, কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিসেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মিশনগ্রিন বাংলাদেশ, ব্রাইটার্স, ওএবি ফাউন্ডেশন, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেবট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অলটারনেটিভ ল কালেকটিভ, আর্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, ফসিল ফুয়েল নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি ইনিশিয়েটিভ, ফসিল ফ্রি জাপান, গ্রিন কাউন্সিল, জাপান সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি, এলডিসি ওয়াচ, মাইনস, মিনারেলস অ্যান্ড পিপল, নেটজভের্ক এনার্জিভেন্ডে, ফিলিপাইন মুভমেন্ট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট ফর ইকুটেবল ডেভেলপমেন্ট, রিভারফক্স, সিডব্লিউটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

হাদিকে গুলি: মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির একাধিক বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তর-পূর্ব জাপান, সুনামি সতর্কতা জারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

হাদিকে গুলি: মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির একাধিক বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, দিল্লির অবস্থা বিপজ্জনক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির বায়ুমান ৩৮৫, যা বিপজ্জনক বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভিয়েতনামের হ্যানয়, ভারতের কলকাতা, কুয়েতের কুয়েত সিটি ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৫, ২৪৬, ২১৭ ও ২১১।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

হাদিকে গুলি: মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির একাধিক বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা ১৫.৫

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা কমছিল। তবে আজ শুক্রবার শীত বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সেটি কমে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৩ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ৩৩ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

হাদিকে গুলি: মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির একাধিক বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত