Ajker Patrika

নাট্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: গল্প আড্ডায় কিছুক্ষণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ ও মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ ও মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরে পদার্পণ করল নাটকের দল ‘নাট্যকেন্দ্র’। গত শুক্র ও শনিবার রাজধানীর মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে দুই দিনের অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছে নাট্যদলটি।

১০ অক্টোবর ছিল নাট্যকেন্দ্রের পঞ্চদশ প্রযোজনা ‘পুণ্যাহ’ মঞ্চায়ন। ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় প্রীতিসম্মিলন ও কথোপকথন। উপস্থিত ছিলেন তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ, মোশাররফ করিম, ইউসুফ হাসান অর্ক, ইকবাল বাবু, সাইফ আহমেদ প্রমুখ। তারিক আনাম খানের সঞ্চালনায় নাট্যকেন্দ্র নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন দলের সদস্য ও অতিথিরা। মূল অনুষ্ঠান শেষে গান, গল্প, আড্ডায় মেতে ওঠেন নাট্যকেন্দ্রের সদস্যরা।

নাট্যকেন্দ্র নিয়ে তারিক আনাম খান বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল, বড় করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনটা করব। সবার কথা শুনব, সবাইকে নিয়ে থিয়েটারকে কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, এ বিষয়ে আলোচনা করব। তাই দুই দিনব্যাপী এই আয়োজন। থিয়েটার আমাদের ভাবনার ফিরে আসার জায়গা, ভালো লাগার জায়গা, বেঁচে থাকার জায়গা, আমার ওই অনুভূতির জায়গা; যেখান থেকে মনে হবে, আমি বেঁচে আছি। আমরা থিয়েটার করেছি নিজেদের ভালো লাগা ও ভালোবাসার জায়গা থেকে। প্রতি মুহূর্তে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করতে চেয়েছি। আমাদের প্রযোজনাগুলো দেখলে বোঝা যাবে, আমরা প্রতিবার নতুনভাবে এগিয়েছি।’

থিয়েটার চর্চা নিয়ে আক্ষেপের কথা জানিয়ে তারিক আনাম খান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে চলছে আমাদের নাট্য আন্দোলনের যাত্রা। দুঃখ লাগে, শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা সমিতি—এই দুটোই হলো থিয়েটারের জায়গা। অনেক কিছু হলো, কিন্তু থিয়েটার করার মতো জায়গা আমরা সেভাবে পেলাম না। ঢাকা শহরের ব্যাপ্তি বেড়েছে। তাহলে কেন ধানমন্ডিতে একটা নাটকের হল নেই, কেন গুলশান, বনানী কিংবা উত্তরায় নেই। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কখনো বড় পৃষ্ঠপোষকতা পাইনি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল থিয়েটারকে পেশাদারি রূপ দেওয়ার। তার জন্য অন্তত সরকারি কিছু সহযোগিতা দরকার।’

জাহিদ হাসান বলেন, ‘দেখতে দেখতে ৩৫টি বছর পার হয়ে গেল নাট্যকেন্দ্রের। এই দীর্ঘদিনের পথচলা কারও একার চেষ্টায় নয়, অনেকের ভালোবাসার কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমরা একটা সময় পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গেছি, এরপর আরেকটা প্রজন্ম এসেছে, তারা কিছুদুর এগিয়ে নিয়ে গেছে—এটা একটা রিলে রেসের মতো। অনেকে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। কতশত স্মৃতি আর ভালোবাসায় তিলতিল করে গড়া এই নাট্যকেন্দ্র। বাংলাদেশের থিয়েটার চর্চায় অবদান রেখে দেশের অন্যতম নাট্যদল হয়ে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে নাট্যকেন্দ্র—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

মোশাররফ করিম বলেন, ‘৩৫ বছর হলো আমাদের নাট্যকেন্দ্রের। আরও বহু বছর আমাদের এই পথচলা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করি। খুব অল্প বয়সে থিয়েটার শুরু করেছিলাম। নাট্যকেন্দ্র আমার সবচেয়ে ভালো লাগার জায়গা। এর সঙ্গে আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি স্মৃতি জড়িয়ে। থিয়েটার একজন শিল্পীকে ভালো মানুষ হতে সহায়তা করে। নাট্যকেন্দ্র সব সময় আমাকে বলত, সৎ এবং ভালো মানুষ না হলে শিল্পী হওয়া দুষ্কর। নাট্যকেন্দ্র থেকে মানুষ হিসেবে সুন্দর হয়ে ওঠার পথে পা রেখেছি। থিয়েটারে একটা আনন্দ আছে। সেই আনন্দের টানেই হয়তো আবার মঞ্চে ফিরব।’

১৯৯০ সালের ১১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠার পর থেকে নাট্যকেন্দ্র মঞ্চে এনেছে প্রায় দেড় ডজন নাটক। দলটির উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘বিচ্ছু’, ‘তুঘলক’, ‘সুখ’, ‘জেরা’, ‘হয়বদন’, ‘আরজ চরিতামৃত’, ‘প্রতিসরণ’, ‘প্রজাপতি’, ‘মৃত মানুষের ছায়া’, ‘দুই যে ছিল এক চাকর’, ‘তীর্থযাত্রী’, ‘পুণ্যাহ’ ইত্যাদি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাইয়ের গাদ্দারদের সব রেকর্ড প্রকাশ করা হবে—অব্যাহতির পর এনসিপি নেতার হুমকি

মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

‘ছোট ছোট চান্দাবাজি আমি হইতে দিছি’—বিএনপি নেতা সান্টুর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল

চট্টগ্রাম বন্দর: বিদেশিদের কাছে লিজে যাচ্ছে তিন টার্মিনাল

নাটোরে হোটেল কক্ষ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত