মীর রাকিব হাসান
১৯৭১ সালে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করা এক অকুতোভয় শিল্পীর নাম আব্দুল জব্বার। বাংলা গানের ভুবন সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর গাওয়া অসংখ্য কালজয়ী গানে। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে স্মরণ করে স্মৃতিচারণা করেছেন সহশিল্পী সুজেয় শ্যাম।
এত স্মৃতি জড়িয়ে আছে যে সেগুলো নতুন করে ভাবতে গেলে বুকের ভেতরে কষ্ট হয়, শূন্যতা জাগে। মো. আব্দুল জব্বার আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিল, কিন্তু আমরা বন্ধুর মতোই ছিলাম। একসঙ্গে সিনেমার জন্য গান করেছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও ছিলাম। অনেক গান যেমন করেছি, তেমনি একসঙ্গে বসে সুখ-দুঃখের আলাপও হতো। জব্বার যে এভাবে চলে যাবে, বুঝতে পারিনি।
মৃত্যুর সাত দিন আগেও আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এখনকার গান নিয়ে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে গানের কী হবে, তা নিয়ে কথা হয়েছে। আফসোস করে বলছিল, ‘এখন গান শিখতে হয় না। নিয়মিত রেওয়াজ করতে হয় না। আমরা কষ্ট করে গান শিখেছি। গান সাধনা করেছি। সেসবের কোনো মূল্য কি এখন নেই? এখন তো বেসুরো গাইলেও জনপ্রিয় হয়ে যায়। এক লাইন বাংলা, তার মধ্যে ইংলিশ, কত কী মিলিয়ে গান বানায়। কিন্তু আত্মার শান্তি কি মেলে? এই আধুনিকতা আমাদের সৃষ্টিগুলোকে তো নষ্ট করে দিচ্ছে।’ ওর এসব কথা এখনো মনে পড়ে।
স্বাধীন বাংলা বেতারে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। সেখানে ওর অনেক অবদান আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে খুব স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধু তাকে ছেলের মতো ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর ছেলেদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে নিয়মিত যেত। বঙ্গবন্ধু তাকে পাশে বসিয়ে গান শুনতেন। বাংলাদেশের গানে তার যে অবদান, সেই তুলনায় আমরা তার জন্য কী করতে পেরেছি? উপযুক্তভাবে তাকে স্মরণ করতে পারি না। একটা মানুষ সারা জীবন গান গেয়ে গেল, মানুষ এখনো তার গান শোনে, গায়। তার গানগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। তার পরিবারের খোঁজখবর রাখার দায়ও আমরা এড়াতে পারি না।
১৯৪৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ভারত-পাকিস্তানের গানের দাপট কমিয়ে মানুষের মনে বাংলা গানের জোয়ার তৈরি করার পেছনেও তার অবদান কম নয়। জব্বার, মোস্তফা আনোয়ার, সৈয়দ আব্দুল হাদি, সাবিনা ইয়াসমিনদের মতো বড় বড় শিল্পী বিদেশি গানের দাপট কমিয়ে বাংলা গানকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
আমার সুরে ছবিতে গান করেছে জব্বার। স্বাধীন বাংলা বেতারে আমরা বসে দুঃখের কথা বলতাম। ও সব সময় বলত, ‘আমরা আবার গাইব। দেশ স্বাধীন হবে।’ পাকিস্তানে গিয়েও একসঙ্গে গান করেছি আমরা। আমি আর রাজা হোসেন ভাই তো জুটি ছিলাম। রাজা ভাইয়ের সঙ্গেও জব্বারের খুব বন্ধুত্ব ছিল। প্রায়ই আমাদের দেখা হতো। আগে তো বছরে দুই শতাধিক ছবি হতো। কত গান হতো। ঘুরেফিরে আমাদের দেখা হতো।
জব্বার আসলে নিজেই নিজেকে চিনতে পারেনি। ও যে কত বড় মাপের শিল্পী ছিল, নিজেই জানত না। সে ছিল খুবই সহজ-সরল আর ভীষণ উদার মনের মানুষ। চাইলে সে অনেক কিছুই করতে পারত, আরও অর্থবিত্তের অধিকারী হতে পারত। কিন্তু নিজের সরলতার কারণেই ওসব সে করেনি বা করতে পারেনি। জব্বারের এই সরলতার সুযোগ নিয়ে অনেকেই ওকে বিনা মূল্যে কিংবা নামমাত্র সম্মানীতে কাজ করিয়ে নিয়েছে, ও কখনো ‘না’ করেনি।
শিল্পী হিসেবে আব্দুল জব্বার অনেক উঁচুমানের। যে গানই গাইত, অনেক যত্ন নিয়ে গাইত। একবারের জায়গায় দুবার গাইতে বললেও কখনো রাগ করত না।
অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান
১৯৭১ সালে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করা এক অকুতোভয় শিল্পীর নাম আব্দুল জব্বার। বাংলা গানের ভুবন সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর গাওয়া অসংখ্য কালজয়ী গানে। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে স্মরণ করে স্মৃতিচারণা করেছেন সহশিল্পী সুজেয় শ্যাম।
এত স্মৃতি জড়িয়ে আছে যে সেগুলো নতুন করে ভাবতে গেলে বুকের ভেতরে কষ্ট হয়, শূন্যতা জাগে। মো. আব্দুল জব্বার আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিল, কিন্তু আমরা বন্ধুর মতোই ছিলাম। একসঙ্গে সিনেমার জন্য গান করেছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও ছিলাম। অনেক গান যেমন করেছি, তেমনি একসঙ্গে বসে সুখ-দুঃখের আলাপও হতো। জব্বার যে এভাবে চলে যাবে, বুঝতে পারিনি।
মৃত্যুর সাত দিন আগেও আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এখনকার গান নিয়ে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে গানের কী হবে, তা নিয়ে কথা হয়েছে। আফসোস করে বলছিল, ‘এখন গান শিখতে হয় না। নিয়মিত রেওয়াজ করতে হয় না। আমরা কষ্ট করে গান শিখেছি। গান সাধনা করেছি। সেসবের কোনো মূল্য কি এখন নেই? এখন তো বেসুরো গাইলেও জনপ্রিয় হয়ে যায়। এক লাইন বাংলা, তার মধ্যে ইংলিশ, কত কী মিলিয়ে গান বানায়। কিন্তু আত্মার শান্তি কি মেলে? এই আধুনিকতা আমাদের সৃষ্টিগুলোকে তো নষ্ট করে দিচ্ছে।’ ওর এসব কথা এখনো মনে পড়ে।
স্বাধীন বাংলা বেতারে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। সেখানে ওর অনেক অবদান আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে খুব স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধু তাকে ছেলের মতো ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর ছেলেদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে নিয়মিত যেত। বঙ্গবন্ধু তাকে পাশে বসিয়ে গান শুনতেন। বাংলাদেশের গানে তার যে অবদান, সেই তুলনায় আমরা তার জন্য কী করতে পেরেছি? উপযুক্তভাবে তাকে স্মরণ করতে পারি না। একটা মানুষ সারা জীবন গান গেয়ে গেল, মানুষ এখনো তার গান শোনে, গায়। তার গানগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। তার পরিবারের খোঁজখবর রাখার দায়ও আমরা এড়াতে পারি না।
১৯৪৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ভারত-পাকিস্তানের গানের দাপট কমিয়ে মানুষের মনে বাংলা গানের জোয়ার তৈরি করার পেছনেও তার অবদান কম নয়। জব্বার, মোস্তফা আনোয়ার, সৈয়দ আব্দুল হাদি, সাবিনা ইয়াসমিনদের মতো বড় বড় শিল্পী বিদেশি গানের দাপট কমিয়ে বাংলা গানকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
আমার সুরে ছবিতে গান করেছে জব্বার। স্বাধীন বাংলা বেতারে আমরা বসে দুঃখের কথা বলতাম। ও সব সময় বলত, ‘আমরা আবার গাইব। দেশ স্বাধীন হবে।’ পাকিস্তানে গিয়েও একসঙ্গে গান করেছি আমরা। আমি আর রাজা হোসেন ভাই তো জুটি ছিলাম। রাজা ভাইয়ের সঙ্গেও জব্বারের খুব বন্ধুত্ব ছিল। প্রায়ই আমাদের দেখা হতো। আগে তো বছরে দুই শতাধিক ছবি হতো। কত গান হতো। ঘুরেফিরে আমাদের দেখা হতো।
জব্বার আসলে নিজেই নিজেকে চিনতে পারেনি। ও যে কত বড় মাপের শিল্পী ছিল, নিজেই জানত না। সে ছিল খুবই সহজ-সরল আর ভীষণ উদার মনের মানুষ। চাইলে সে অনেক কিছুই করতে পারত, আরও অর্থবিত্তের অধিকারী হতে পারত। কিন্তু নিজের সরলতার কারণেই ওসব সে করেনি বা করতে পারেনি। জব্বারের এই সরলতার সুযোগ নিয়ে অনেকেই ওকে বিনা মূল্যে কিংবা নামমাত্র সম্মানীতে কাজ করিয়ে নিয়েছে, ও কখনো ‘না’ করেনি।
শিল্পী হিসেবে আব্দুল জব্বার অনেক উঁচুমানের। যে গানই গাইত, অনেক যত্ন নিয়ে গাইত। একবারের জায়গায় দুবার গাইতে বললেও কখনো রাগ করত না।
অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর নয়া দিল্লি পাকিস্তানের সঙ্গে ৬ দশকের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। তবে সেই ঘোষণা কতটা কার্যকর হয়েছে তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। দুই দেশের মূল ধারার গণমাধ্যম এই বিষয়ে সেই অর্থে কোনো তথ্য দেয়নি।
৪০ মিনিট আগেঈদে মুক্তি পাওয়া আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমায় জেফার রহমানের গাওয়া ‘নিয়ে যাবে কি’ শিরোনামের গানটি ইতিমধ্যেই শ্রোতাদের মন ছুঁয়েছে। অনলাইনেও গানটি নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে। ‘নিয়ে যাবে কি আমায় দূরে কল্পনায়, তোমার আর আমার গল্পে কি আবার হবে নতুন সূচনা’ এমন কথায় গানটি লিখেছেন বাঁধন, সুর করেছেন জেফার
৮ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে নতুন উদ্যোগের কথা জানালেন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী উম্মে হাবিবা। রাজধানীর নিকেতনে শুরু করেছেন নিজের নৃত্য প্রতিষ্ঠান। টিম কালারস ড্যান্স ক্লাস নামের এই প্রতিষ্ঠানে ভরতনাট্যম, সেমি-ক্লাসিক্যাল, কনটেম্পরারি ও বলিউড নৃত্যশৈলীতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
৮ ঘণ্টা আগেমহান মে দিবসে শিশুশিল্পীদের নিয়ে দুরন্ত টিভি প্রচার করবে বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠান ‘নোঙর তোলো তোলো’। অনুষ্ঠানটিতে এম আর ওয়াসেকের নৃত্য পরিচালনায় গণসংগীতের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছে নন্দনকলা কেন্দ্রের নৃত্যশিল্পী পুষ্পিতা, অর্পিতা, ইমি, পিউ, ইরা, অর্জন, মাহমুদা, শ্রেষ্ঠা, লাবিবা, সিলভা, সাদিয়া, সিজান, সিফা
৮ ঘণ্টা আগে