Ajker Patrika

নভেরার রিকশা গার্ল হয়ে ওঠা

মীর রাকিব হাসান
নভেরার রিকশা গার্ল হয়ে ওঠা

ঢাকা: প্রথম ছবি ‘আয়নাবাজি’ নির্মাণ করেই হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী। এরপর কেটে গেছে প্রায় পাঁচ বছর। এবার আসছেন নিজের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘রিকশা গার্ল’ নিয়ে। গত মঙ্গলবার রাতে ‘রিকশা গার্ল’–এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। সোয়া দুই মিনিটের ট্রেলারটিতে পাওয়া গেছে দারুণ এক গল্পের আভাস। সেই সঙ্গে চমৎকার দৃশ্য, রং মুগ্ধ করবে যেকোনো সিনেমাপ্রেমীকে।

ল্পীমনা নারী নাঈমার গল্প ‘রিকশা গার্ল’। অন্তত ট্রেলারে তেমনই ইঙ্গিত। সোয়া দুই মিনিটের ট্রেলারে দেখা যায়, নাঈমার কাছে ছবি আঁকা ভীষণ পছন্দের। কিন্তু দরিদ্র সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার বাবা হঠাৎ একদিন অসুস্থ হলে সবকিছু পাল্টে যায়। ছবি এঁকে যেহেতু পয়সা পাওয়া যায় না, তাই বাধ্য হয়ে সেই নাঈমা রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হয়। তাকে সম্মুখীন হতে হয় নানা জটিলতার।

‘রিকশা গার্ল’ সিনেমায় নভেরা রহমানমূল চরিত্র নাঈমার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নভেরা রহমান। পুরো ট্রেলারে উজ্জ্বল উপস্থিতি তাঁর। সেই সঙ্গে তাঁর মায়ের চরিত্রে দেখা যায় মোমেনা চৌধুরী ও বাবার চরিত্রে নরেশ ভুঁইয়াকে। এটি আমেরিকা ও বাংলাদেশের প্রথম যৌথ প্রযোজনায় কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

নভেরা রহমানের বয়স যখন চার মাস, তখন তাঁর মা মোমেনা চৌধুরী অভিনীত একটা নাটক চলছিল ‘দূরে কোথাও’। সেটাতে মোমেনা চৌধুরীর বাচ্চার চরিত্র করার জন্য আগে থেকেই একটা বাচ্চা ঠিক করা ছিল। কিন্তু সেই বাচ্চাটা সেটে আসতে পারেনি। বাচ্চাটা আমেরিকায় চলে গিয়েছিল। এমন একটা সমস্যার কারণে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো নভেরার।

‘রিকশা গার্ল’ সিনেমায় নভেরা রহমানমায়ের কোলেই প্রথম কাজ। প্রথম দৃশ্যটাই মা-মেয়ের কেমিস্ট্রি ভালো ছিল বলে দৃশ্যটা খুব ভালো হয়েছে। তখন এতই ছোট ছিলেন যে অনেক আত্মীয়ও তখনো তাঁকে সামনে থেকে দেখেননি। গ্রামের বাড়ি বগুড়া থেকে তাঁরাও প্রথমবার বিটিভিতে দেখলেন। টেলিভিশনে দেখেই তাঁরা বুঝে গেছেন যে এই বাচ্চাটা মোমেনার মেয়ে। নাহয় এত ভালো কেমিস্ট্রি হওয়ার কথা নয় এই বয়সে।

তারপর থেকে শিশুশিল্পী হিসেবে অনেক কাজ করা হয়েছে। ‘পাখি সব করে রব’, ‘একান্নবর্তী’র মতো আরও অনেক নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করা হয়েছে। মা আরণ্যকে থাকায় মঞ্চের ব্যাকস্টেজেই বড় হয়েছেন নভেরা। এমনও হয়েছে ট্রাংকের ওপর ঘুম পাড়িয়ে শো করতে যেতেন মা মোমেনা।

সেই জায়গা থেকে থিয়েটার রক্তের মধ্যেই আছে। চোখের সামনে থিয়েটারকে একদম ভেতর থেকে দেখেছি। আরণ্যকের জন্য আমার অভিনয় বা চিন্তাভাবনার বিকাশটা হয়েছে। কারণ, সংক্রান্তি দেখে বড় হয়েছি। এমনও হয়েছে সংক্রান্তি, ময়ূর সিংহাসন–এর সংলাপ আমার মুখস্থ থাকত। এত নাটক দেখেছি এই দলের!

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

তবে ছোটবেলা থেকে কখনোই চিন্তা ছিল না অভিনেত্রী হবেন। বড় হয়ে আর্কিওলজিস্ট হওয়ারই ভাবনা ছিল। ইতিহাস নিয়ে চিন্তাভাবনা ছিল মাথায়। কিন্তু সেটা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন গেলেন তখন খুব শখ করে একটা থিয়েটার কোর্স নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কোর্সটা করে এতটা ভালো লাগল, মনে হলো আমি ওই জায়গাটাতেই থাকতে পারি। ‘এর মধ্যে আমি কানাডায় গিয়েছিলাম থিয়েটার আর ইকোনমিকসে পড়াশোনার জন্য। আলাদাভাবে দুটি বিষয়ের ওপর ডিপ্লোমা করা হচ্ছিল। থিয়েটারটা শেষ করে ইকোনমিকস আর শেষ করা হয়নি। সেটা এখন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে কন্টিনিউ করছি।’ বললেন নভেরা।

কানাডায় গিয়ে যখন থিয়েটার করা শুরু করলাম। সেখান থেকে উৎসাহ পেলাম। ওখানকার সবাই বলত, তোমার অভিনয়টা ভালোই হচ্ছে। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম অভিনয়টাকে প্রফেশন হিসেবে নিতে পারি। ওভাবে কানাডায় একটা থিয়েটার কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেছি। আমার ট্রেনিংটা ওখান থেকেই নেওয়া।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

নভেরা রহমানএকটা পর্যায়ে কানাডায় আর মন টিকল না। ভাবলেন, একটা সেমিস্টার অফ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ঘুরে আসি। সেই এক সেমিস্টারের ব্রেক নিতে এসেই পরিচয় হয় পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে। রুবাইয়াত অডিশন নিচ্ছেলেন তাঁর সিনেমা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’–এর জন্য। সেখানে অডিশন দিতেই টিকে গেলেন। সেখানে অভিনয় করলেন। তারপর থেকে বাংলাদেশেই স্থায়ী হয়ে গেলেন। মেড ইন বাংলাদেশের পোস্ট প্রোডাকশন শেষ। মেড ইন বাংলাদেশ গার্মেন্টসের কর্মীদের স্ট্রাগল নিয়ে ছবিটি। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। তাঁর বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

এর আগেও মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুধিরাম’ সিনেমায় কাজ করেছেন। সেখানে মাত্র দুটি দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। নতুন একজন হিন্দু বউ, তাঁকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যাবে। ওই দৃশ্যটা এত ভালো হয়েছিল, যার জন্য মান্নান হীরা সিনেমায় তাঁর জন্য আরেকটা দৃশ্য রেখেছিলেন। যেটা ছিল সিনেমায় প্রথম কাজ। তারপর মেড ইন বাংলাদেশে কাজ করা।

সেটে গিয়ে দেখি ইয়ং একজন মেয়ে সেটে বসগিরি করছেন। সেটা আমার খুবই ভালো লেগেছিল। সিনেমাটির ডিরেক্টর, সিনেমাটোগ্রাফি, চিফ এডি, সাউন্ডে যে ছিলেন সবাই নারী। আমরা পাঁচজন নারী অভিনয় করেছি মূল চরিত্রে। অনেক নারীর দক্ষতায় সিনেমাটি নির্মাণ হয়েছে।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

এরপর শঙ্খ দাসগুপ্তর ‘সুন্দর চান’ নামের একটি শর্টফিল্মে অভিনয় করেছেন। সিনেমায় একজন পতিতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পতিতা ও তাঁর বানরকে নিয়ে গল্পটা। ‘অভিজ্ঞতটা ক্রেজি ছিল। এই চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হয়েছে। এই শর্টফিল্মের শুটিং হয়েছে দৌলতদিয়ায়। শুটিংয়ের আগে সেখানে গিয়ে ওখানকার পতিতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওখানে থেকেছি, যা আমার জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা ছিল।’

মা মোমেনা চৌধুরীর সঙ্গে নভেরাওটা করার আগেই ‘রিকশা গার্ল’র কাস্টিং হয়ে গিয়েছিল। বলেন, ‘মুক্তির আগে মুখ খুলতে চাইছি না। অমিতাভ ভাই কিন্তু পুরা দেশে বড় একটা অ্যানাউন্স করেছিলেন, তুমি কি অমিতাভ রেজার পরের সিনেমায় কাজ করতে চাও? ওই পোস্টার দিয়ে ৫০ থেকে ৬০টি মেয়ের অডিশন নিয়েছেন। এর মধ্যেই আমি একজন ছিলাম। এর আগে তাঁর সঙ্গে আড়ং দুধের একটি টিভিসিতে কাজ করেছি। ওই কাজটা করার পর হয়তো তাঁর পছন্দ হয়েছিল। তবে তার চেয়ে অডিশনের পর প্রোডিউসাররা আমাকে বেশ পছন্দ করেছেন শুনেছি। আমাদের প্রোডিউসার হলেন আমেরিকান। সেভাবেই ছবিটিতে রাজি হওয়া।’

আমি অনেক গবেষণা করেছি। আমি অনেকবার ফিল্ডে গিয়েছি। ফিল্ডে গিয়ে অনেকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। রিকশা গার্লের জন্য আমার অনেক মানুষ দেখতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই আমার মানুষ দেখতে ভালো লাগে। বাসে বসে মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। রিকশা গার্লের জন্য ঢাকায় অনেক ঘুরেছি।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

তবে নভেরার ভীষণ আগ্রহ ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। ‘“মেড ইন বাংলাদেশ” করার পরপরই আমার মনে হলো ফিল্ম মেকিং করব। এখনো আমার ইচ্ছে আছে ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই আফসানা মিমির প্রোডাকশনে সহকারী হিসেবে কাজ করতে ঢুকি। ইন্টার্ন হিসেবে ঢুকে প্রায় প্রধান সহকারী হয়ে গিয়েছিলাম। তা ছাড়া কানাডায় কস্টিউম নিয়েও পড়া হয়েছিল। এরপর দেশে এসে মায়ের “শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটার” কোম্পানির কস্টিউম ও মিউজিক্যাল পার্ট দেখতাম। ঢাকার বাইরে গিয়ে কাজ করতাম, যেটা আমার নিজের ব্যস্ততায় এখন আর হচ্ছে না।’

নতুন একটা রেকর্ড লেভেলের জন্য কাজ করছেন। রেকর্ড লেভেলটার নাম হচ্ছে ‘দ্য মাদারশিপ’। ‘আমরা নতুন ব্যান্ডকে প্রকাশ করি। মাত্র শুরু করলাম আমাদের যাত্রা। ইতিমধ্যে নতুন কয়েকটি ব্যান্ড ও সলো ভালো আর্টিস্ট পেয়েছি আমরা। খুব শিগগিরই বড় পরিসরে আত্মপ্রকাশ করব।’

দেখুন ‘রিকশা গার্ল’ সিনেমার ট্রেলার:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ও করাচির দুই উৎসবে বয়াতির ‘নয়া মানুষ’

বিনোদন প্রতিবেক, ঢাকা
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার পোস্টার; ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার পোস্টার; ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ও করাচির দুটি উৎসবে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে সোহেল রানা বয়াতির সিনেমা ‘নয়া মানুষ’। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এতে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে সিনেমাটি। অন্যদিকে, করাচির ওয়ার্ল্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হবে ২৭ নভেম্বর বিকেল ৪টায়।

২০২৬ সালের ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৪তম আসর। উৎসবে থাকবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্মাতাদের চলচ্চিত্র। এতে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে নয়া মানুষ।

‘নয়া মানুষ’ সিনেমায় রওনক হাসান। ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমায় রওনক হাসান। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, আর্টস কাউন্সিল অব পাকিস্তানের (এসিপি) আয়োজনে ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত করাচিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল। ৩৮ দিনব্যাপী এই উৎসবে থাকছে বিশ্বের নানা প্রান্তের শিল্প, সংগীত, নাটক ও নৃত্যের সমন্বয়। শতাধিক দেশের শিল্পীরা এই উৎসবে অংশ নেবেন। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রতি সপ্তাহে থাকছে দুই ঘণ্টার একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী পর্ব। এরই অংশ হিসেবে ২৭ নভেম্বর বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’। 

এর আগে ভারতের কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও কানাডার টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছে নয়া মানুষ।

নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, ‘আমরা একটা সহজ-সরল গল্প সাধারণভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছি। আমাদের এই প্রচেষ্টাকে সবাই উৎসাহিত করছে। দেশ ও বিদেশে আমার প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে, যা আমার পরবর্তী চলচ্চিত্র নির্মাণের উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

‘নয়া মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে মৌসুমী হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে মৌসুমী হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

প্রসঙ্গত, সুপার সাইক্লোন ‘সিত্রাং’ চলাকালে চাঁদপুরের একটি চরে শুটিং হয় নয়া মানুষের। সিনেমায় গান গেয়েছেন শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাশা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।

আ মা ম হাসানুজ্জামানের ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মাসুম রেজা। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশিস খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবরীর শেষ সিনেমার প্রিমিয়ার হবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অভিনেত্রী কবরী। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেত্রী কবরী। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী কবরী পরিচালিত শেষ সিনেমা ‘এই তুমি সেই তুমি’। তবে সিনেমাটি শেষ করতে পারেননি তিনি। কিছু অংশের শুটিং বাকি থাকতে ২০২১ সালে মারা যান। কবরীর মৃত্যুর পর সিনেমাটির নির্মাণ শেষ করেন তাঁর ছেলে শাকের চিশতী।

২০২৩ সালে এই তুমি সেই তুমি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন শাকের চিশতী। এবার মুক্তির পালা। তবে দেশে মুক্তির আগে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর চেষ্টা করছেন শাকের চিশতী। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে জমা দিয়েছেন সিনেমাটি। এরপর দেশের হলে মুক্তির পরিকল্পনা করবেন।

শাকের চিশতী গণমাধ্যমে জানান, সিনেমাটি শেষ করা ছিল তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘আম্মুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করাই আমার জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। একটু সময় নিয়ে কাজ শেষ করেছি। দেশের বাইরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে সিনেমাটি জমা দিয়েছি। ওই উৎসবগুলোতে প্রদর্শনী হলে দেশে সিনেমাটি মুক্তি পাবে।’

তবে ঠিক কবে নাগাদ দেশের হলে মুক্তি পাবে সিনেমাটি, তা জানাননি শাকের চিশতী। তিনি জানান, সবকিছু নির্ভর করছে এই তুমি সেই তুমি সিনেমার আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর ওপর।

পরিচালনার পাশাপাশি এই তুমি সেই তুমি সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছিলেন কবরী। দুটি সময়কে তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়। বর্তমান সময়ের গল্পের পাশাপাশি উঠে আসবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ের গল্প। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিশাত নাওয়ার সালওয়া ও রায়হান রিয়াদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিলারা জামানকে নিয়ে ৭ পর্বের ধারাবাহিক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘দাদীর ভাগ’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে দিলারা জামান ও মুন। ছবি: সংগৃহীত
‘দাদীর ভাগ’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে দিলারা জামান ও মুন। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী দিলারা জামানকে নিয়ে তৈরি হলো ৭ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘দাদীর ভাগ’। ধারাবাহিকের মূল চরিত্র দাদিকে ঘিরে এগিয়েছে গল্প। দাদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন জামিল হোসেন, মুনমুন আহমেদ মুন, নরেশ ভূঁইয়া, রেশমা আহমেদ, মম শিউলী, আমিন আজাদ, সূচনা প্রমুখ। অভিনেতা জামিল হোসেনের গল্প ভাবনায় নাটকটি রচনা করেছেন বিদ্যুৎ রায়, পরিচালনায় মাহফুজ ইসলাম। প্রকাশ করা হবে জামিল’স জু নামের ইউটিউব চ্যানেলে।

ধারাবাহিকটির দুটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুনমুন আহমেদ মুন ও জামিল হোসেন। চলতি বছর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার’খ্যাত অভিনেতা জামিল হোসেন ও অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদ মুন। স্ত্রী মুনমুনের সঙ্গে একসঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু নাটকে কাজ করেছেন জামিল। সেখান থেকেই দুজনের পরিচয়। আর সেই পরিচয় একটা সময় গড়ায় ভালো লাগায়।

মুনের বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন মালয়েশিয়াতে। বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে পরিচিতি পেয়েছেন মুনমুন। সাবলীল অভিনয় তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে নাটকেও। দাদীর ভাগ ধারাবাহিকে দিলারা জামানের সঙ্গে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে একটি স্বপ্ন পূরণ হলো তাঁর। অভিনেত্রী দিলারা জামানের ভক্ত তিনি। তাঁর ব্যক্তিত্ব আর অভিনয় মুগ্ধ করে মুনকে। তাই স্বপ্ন দেখতেন দিলারা জামানের সঙ্গে অভিনয়ের। দাদীর ভাগ ধারাবাহিকে মুন অভিনয় করলেন দিলারা জামানের নাতনির চরিত্রে। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আর নিজের স্বপ্ন পূরণের কথা বলতে গিয়ে মুনমুন আহমেদ মুন বলেন, ‘শ্রদ্ধেয় দিলারা জামান বাংলাদেশের নাটক-সিনেমার গর্ব।

জামিল হোসেন
জামিল হোসেন

মাশাআল্লাহ এখনো কী সুন্দর তিনি। কী সুন্দর গুছিয়ে কথা বলেন, আন্তরিকতায় পূর্ণ তাঁর ব্যবহার। ভীষণ ইচ্ছে ছিল তাঁর সঙ্গে অভিনয় করার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, তাও আবার আমি তাঁর নাতনির চরিত্রেই অভিনয় করেছি। কী যে আদরে, মায়ায় তিনি আগলে রাখেন সব সময়, সেটা তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি। এত বড় মাপের শিল্পী, অথচ কী সাধারণ জীবনযাপন। আমি তাঁর বিনয়, হাসি আর অভিনয়ে মুগ্ধ। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পেরে ধন্য, গর্বিত এবং ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এটা আমার জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি।’

দিলারা জামান বলেন, ‘দাদীর ভাগ নাটকটার গল্প খুব সুন্দর। মৃত্যুর আগে দাদা সব সম্পত্তি দাদিকে লিখে দেয়। সেই সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়েই গল্প। কাজটা করে ভীষণ ভালো লেগেছে। সবাই এত আন্তরিক ছিল যে আমাকে কোনো রকম কষ্ট পেতে দেয়নি। মুনমুন খুব লক্ষ্মী আর মিষ্টি হাসির এক মেয়ে। দোয়া করি ও যেন অনেক বড় শিল্পী হতে পারে, অভিনয়কে ঘিরে তার স্বপ্ন পূরণ হোক।’

উল্লেখ্য, দীপ্ত টিভির ‘বকুলপুর’ ধারাবাহিকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে দিলারা জামানের অভিনয়। অন্যদিকে মুনমুন আহমেদ মুন অনেক দিন পর অভিনয় করেছেন সাগর জাহান পরিচালিত ধারাবাহিকে। আরটিভির প্রচার চলতি ধারাবাহিকটির নাম ‘বিদেশ ফেরত’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কনসার্টের জন্য প্রস্তুত আজম খানের ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড ও এজেন্সির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড ও এজেন্সির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

গত জুনেই জানা গিয়েছিল আবার শুরু হচ্ছে আজম খানের উচ্চারণ ব্যান্ডের কার্যক্রম। আজম খানের মেয়ে অরণী খান জানিয়েছিলেন, নতুন উদ্যমে ফিরছে ব্যান্ডটি। এবার জানা গেল, দেশ-বিদেশে কনসার্টের জন্য প্রস্তুত উচ্চারণ। ৮ নভেম্বর উচ্চারণ ব্যান্ডের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড সদস্য ও একটি এজেন্সির মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, আজম খানের নাম, ছবি ও সৃষ্টির সব কপিরাইট এবং মালিকানা থাকবে তাঁর পরিবারের। উচ্চারণ ব্যান্ড তাঁর গান পরিবেশন ও প্রচারে সক্রিয় থাকবে; আর কুল এক্সপোজার পরিচালনা করবে সমস্ত প্রচার, রয়্যালটি ব্যবস্থাপনা, কনসার্ট এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

আজম খানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর কন্যা অরণী খান, উচ্চারণ ব্যান্ডের প্রধান দুলাল জোহা এবং কুল এক্সপোজারের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সিইও এরশাদুল হক টিঙ্কু চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

উচ্চারণ ব্যান্ডের প্রধান দুলাল জোহা বলেন, ‘এই চুক্তি আজম খানের সংগীত ঐতিহ্যকে নতুনভাবে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আমরা তাঁর গানগুলো দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ছড়িয়ে দিতে চাই।’

মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে তিন বন্ধু নীলু, সাদেক ও মনসুরকে নিয়ে আজম খান গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ড উচ্চারণ। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যান্ডটি ওই বছর বিটিভিতে গায় ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ এবং ‘চার কলেমা সাক্ষী দেবে’। এই দুটি গান জনপ্রিয় করে তোলে আজম খান ও উচ্চারণ ব্যান্ডকে। এরপর উচ্চারণকে সঙ্গে নিয়ে আরও বহু গান উপহার দিয়েছেন আজম খান। ২০১১ সালের ৫ জুন আজম খানের মৃত্যুর পর থেমে যায় ব্যান্ডের কার্যক্রম। গত ২২ জুন আজম খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গুরু রিলোডেড’ নামের অনুষ্ঠানে ১৪ বছর পর মঞ্চে পারফর্ম করে উচ্চারণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত