Ajker Patrika

‘কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না’

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২১, ১৭: ৪৮
‘কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না’

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে কাজ শুরুর আগের অধ্যায়টি কেমন ছিল?

ফোন করে আমাকে জানানো হয়, এমন একটা গল্প তাঁরা ভাবছেন। গল্পটা চার বন্ধুকে নিয়ে। প্রথমে আমি কনভিন্সড ছিলাম না গল্পটা নিয়ে। কারন গল্পে আমার উপস্থিতি কতটুকু, গুরুত্ব কতটুকু—এগুলো নিয়ে চিন্তা ছিল। পরে আমাদের সবাইকে কল করা হয় স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ের দিন। সমস্ত কাস্টিং, ক্রুদের নিয়ে রিডিংটা হয়। ওইদিন স্ক্রিপ্টটা পড়া হয় ডিটেইলে। পুরো গল্পটা পড়ে কাজ করতে রাজি হই।

এ ওয়েব ফিল্মের যিনি নির্মাতা, মিজানুর রহমান আরিয়ান, তাঁর কাজে সাধারণত এমন অভিনয়শিল্পীদেরকে দেখা যায়, ইউটিউবে যাদের অনেক ভিউ। এক্ষেত্রে তো আপনি ব্যতিক্রম। বছরজুড়ে খানিকটা আলাদা ধরনের কাজেই আপনাকে পাওয়া যায়। শুধু গল্পটা শুনে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে কাজ করতে রাজি হলেন? নাকি নিজের কাজের ধরণ বদলের চেষ্টা?

আরিয়ানের কাজে অনেক ভিউ হয়, এবং তাঁর আলাদা দর্শক আছে। এদের সঙ্গে যেহেতু আমি নিয়মিত কাজ করি না, সেহেতু এ রকম একটা কাজ করার মানে হচ্ছে নিশ্চয়ই আমি আলাদা কিছু করছি। পুণরাবৃত্তি হয়নি আমার কাজে। তো আপনার প্রশ্নের মধ্যেই কিন্তু উত্তর লুকিয়ে আছে, যে আপনি কখনো এরকম কাজ করেন না। আপনার প্লট ডিফরেন্ট। ওটিটিতে আপনি অন্যমাত্রার কাজ করেন।

যেহেতু আমি অন্য কাজ করি, এবং প্রত্যেকটা কাজ থেকে প্রত্যেকটা কাজ আলাদা করার চেষ্টা করি। তার মানে এটাও একটা আলাদা প্যাটার্ন। আমি কিন্তু কখনো বলিনি, এর কাজ করবো, তার কাজ করবো না। বা এ ধরনের গল্প করব, অন্য ধরনের গল্প করব না।

নাজিয়া হক অর্ষাইউজুয়ালি গল্পগুলো কী হয়, ধরেন তথাকথিত তো গল্প একই। ঘুরেফিরে তো একই ধরনের গল্পেই আমাদের কাজ করতে হয়। কিন্তু ডিপেন্ড করে যে প্রেজেন্টেশনটা কেমন। ঠিক আছে? অথবা ধরেন কীভাবে গল্পটা বলা হচ্ছে? বা কী বলতে চাইছে? কাদের জন্য বলছে? সো এই জিনিসগুলো অনেক বড় ফ্যাক্ট।

যদি এই ফ্যাক্টগুলোকে মাথায় রাখতে হয়, তাহলে আমি চেষ্টা করি যে পুরনো ফ্যাক্টের সঙ্গে নতুন ফ্যাক্টগুলো যাতে না মেলে। কিছুটা আলাদা থাকে। যার কারণে হয়তো মনে হবে না, একই জিনিস বারবার করছি। যেটা আমার জন্য অনেক মনোটোনাস।

অডিয়েন্সের কথাও না। আমার ডিরেক্টর টিমের কথাও না। আমি নিজেই একই জিনিসের পুণরাবৃত্তি পছন্দ করি না। ওই জায়গা থেকেই ধরেন, আমি কাজের ইনডিভিজুয়ালিটি মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। আরেকটা তথ্য হয়তো আপনি জানেন না। এ নির্মাতার সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ নয়।

এর আগেও আপনি আরিয়ানের নাটকে অভিনয় করেছেন। কিন্তু সেটা তো বেশ আগে। শুরুর দিকে।

আরিয়ানের জীবনের প্রথম প্রডাকশন আমাকে নিয়ে করা। ‘আমি তুমি এবং সে’। তো আফটার নাইন ইয়ারস, ওর জীবনের প্রথম সিনেমাটাও আমাকে নিয়ে করা। আরিয়ানের সাথে আমার বন্ডিং অনেক ডিফরেন্ট। মানে যখন আরিয়ান আসলে আরিয়ান না, তখন থেকে আরিয়ানকে আমি চিনি এবং তাঁর কাজ সম্পর্কে আমি অবগত।

এ সিনেমা করতে আসার সময় আরিয়ান আর আমার একটা অদ্ভুত ইমোশনাল ব্যাপার ছিল। বলছিল, ‘আপু তোমাকে দিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে আমি প্রথম কাজ করেছি।’ ওই গল্পে বোধহয় কাস্টিং ছিল আমি, ঈশানা, আরিফিন শুভ। শুভর ওটা শেষের দিকের কাজ সিনেমাতে ঢোকার আগে।

তারপর বললো যে, ‘আজকে নয় বছর পরে তোমার সাথে আবার আমার প্রথম সিনেমাতে কাজ হচ্ছে। সো আমি এক্সাইটেড এবং ইমোশনাল।’ আসলে বাইরে থেকে যা দেখতে, পেছনের গল্প অনেক আলাদা থাকে। আপনারা যেটা প্রেডিক্ট করেন, আমাদের রিলেশনের ব্যাপারটা বা আমাদের কাজের কেমিস্ট্রিটা তার উর্দ্ধে।

নাজিয়া হক অর্ষা‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ তো বন্ধুদের নিয়ে গল্প। আমি যদি আপনার ব্যক্তি জীবনের বন্ধুদের কথা জানতে চাই। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এখনো?

আমি আবার এই জায়গা থেকে লাকি। আমার বন্ধু অনেক বেশি না। আমার যারা বন্ধু, তাঁদের সাথে এখনো আমার যোগাযোগ আছে। তাঁদের সাথে ঘোরাফেরা, দেখা-সাক্ষাৎ সবকিছুই হয়। আমি তো খুবই চুপচাপ নিজের মতো লাইফ লিড করতে পছন্দ করি। এবং প্রাইভেসি পছন্দ করি। ফলে স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গেই আমার বেশি সময় পার করা হয়, যখন আমার কাজ থাকে না। এখনও আমার স্কুলের বন্ধু, আমার ইউনিভার্সিটির বন্ধু এবং কাজের ক্ষেত্রে অনেকের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে এরকমও আমার বেশকিছু বন্ধু আছে, যাদের সাথে দশ বছর, বারো বছর, পনেরো বছরের সম্পর্ক। তাদের সাথে এখনও কমিউনিকেশন হয়। সো ফ্রেন্ডশিপটা আমার কাছে খুবই আলাদা জায়গা রাখে।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে একটা সংলাপ আছে আপনার চরিত্র ডাক্তার তানিয়ার মুখে— ‘এক রাতের বাস জার্নিতে প্রেম হয় না, যেটা হয় সেটা হচ্ছে ইনফ্যাচুয়েশন’। আপনি নিজে কী বিশ্বাস করেন? সম্পর্ক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সময়টা ফ্যাক্ট নাকি পরিবেশ-পরিস্থিতি?

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সময় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সময় আসলে সম্পর্কগুলোকে বুঝতে শেখায়। নিজের ভুল, আবার নিজেদের ভালো-মন্দ এসব বিষয় সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করতে শেখায় সময়। আবার কিছু কিছু বন্ডিংও থাকে, যেখানে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। অল্প দু-একটা স্পার্কলিং, বন্ডিং, টিউনিং মিলে গেলে একটা ছোট জার্নি পার করে দেওয়া যায়।

আমাদের যেমন হয়, ডেইলি আমাদের নতুন নতুন চেহারার সাথে ডিল করতে হয়। আজকে প্রোডাকশনের যে ছেলেটাকে দেখছি, কালকে দেখছি আরেকটা নতুন ছেলে। কিন্তু ও আমাকে পাঁচবেলাই পাঁচ কাপ চা দিয়ে যাচ্ছে। ও আমাকে দু-বেলার খাবার এনশিওর করছে। ওর সাথে আমার একটা আলাদা পরিচিতির জায়গা তৈরি হচ্ছে। আমি ওর নাম জানার চেষ্টা করছি, কদ্দিন ধরে কাজ করে, কীভাবে এল— এ রকম কনভারসেশন আমার হয়। আমি জানি না, অন্য আর্টিস্টদের হয় কিনা! কিন্তু আমি এটা মেইনটেইন করি। দেখা যায় যে, ওইটুকুই, দুইদিনের শুটিংয়ের ওই পরিচিতিটুকুই, নেক্সট কোনো শুটিংয়ে দেখা হলে ঠিক ওই জায়গা থেকেই গল্পটা আবার শুরু হয়।

নাজিয়া হক অর্ষাতো কিছু কিছু সম্পর্ক থাকে, যেগুলোর জন্য অনেক সময়ের দরকার নেই। সম্পর্কটা কখনো হয়ে যায় প্রয়োজনের, ওই সম্পর্কটা কখনো হয়ে যায় একটা ঘটনাকে ঘটানোর জন্য। কিন্তু যখন দীর্ঘ সময় পার করতে হবে, রিলেশনটা অনেক বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলবে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে, তখন আসলে সময় দরকার।

আপনি নীরবে কাজ করায় বিশ্বাসী। সবসময় বলেন ‘প্রকাশিত হওয়া আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়’। সোশ্যাল মিডিয়ার ইদানীংকার আলোচনা-প্রশংসা কি আপনার জীবনযাপনে প্রভাব ফেলছে?

না। কারণ আমি কোনোকিছুকে পার্মানেন্টলি ধরি না। যা হচ্ছে, সেটা ঘটনার একটা বহমান ধারা। আমি যেভাবে কাজ করি, সেভাবেই কাজ করে যাব। আমি বিশ্বাস করি, কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না। কারণ প্রত্যেকটা গুণাগুনেরই নিজস্বতা থাকে। দেখা যাচ্ছে, আজকে যে কোথাও খুব খারাপ করছে, আগামী দু-বছর পরে সে যে দুর্দান্ত কিছু ঘটিয়ে ফেলবে না— তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আমি কেন প্রচারে বিশ্বাস করি না, কারন আমি শিখতে ভালোবাসি।

অভিনয়ে প্রায় একযুগ কাটিয়ে দিলেন। কখনো আপনাকে নিয়ে কোনোরকম আলোচনা হয়নি, আবার কখনো তুমুল বিতর্কের কবলেও পড়েছেন। কীভাবে দেখেন এই জার্নিকে?

এমনও সময় গেছে, আমাকে নিয়ে মানুষ কোনো আলোচনাই করেনি। অনেক প্রডাকশন গেছে, যে প্রডাকশনে আমিও কাজ করেছি। কিন্তু সব আলোচনা হয়েছে আমার সহশিল্পীকে নিয়ে। তাতে মনে হয়েছে, আমি ইনভিজিবল, আমি কোথাও নেই। আবার এমনও তো ঘটেছে, যেখানে মানুষ আমাকে নির্দিষ্ট একটা কাজ দিয়ে জাজমেন্ট করে, খুবই অশ্রাব্য গালিগালাজও করেছে। সুতরাং এই আলোচনা কিংবা সমালোচনায় কিছু আসে যায় না। কারন আমি জানি, কর্মই আমাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবে।

সাক্ষাৎকার: খায়রুল বাসার নির্ঝর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণমাধ্যমে ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর, ক্ষুব্ধ হেমা মালিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৬
অভিনেতা ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেতা ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ছবি: সংগৃহীত

কিংবদন্তি বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর (৮৯) স্বাস্থ্য নিয়ে গতকাল সোমবার রাত থেকে যখন তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে, তখন আজ মঙ্গলবার সকালে সেই খবরকে উড়িয়ে দিলেন তাঁর স্ত্রী ও প্রখ্যাত অভিনেত্রী হেমা মালিনী (৭৭)। বর্তমানে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা ধর্মেন্দ্র চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন এবং স্থিতিশীল আছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

আজ সকালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে হেমা মালিনী এই ধরনের গুজবের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি লেখেন: ‘যা ঘটছে তা অমার্জনীয়! যে ব্যক্তি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন এবং সুস্থ হচ্ছেন, দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যমগুলো কীভাবে তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা খবর ছড়াতে পারে? এটা চরম অসম্মানজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। দয়া করে পরিবারকে মর্যাদা দিন এবং তাদের ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকারকে সম্মান জানান।’

ধর্মেন্দ্রের স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়ানোর জন্য তিনি সরাসরি কিছু ‘দায়িত্বশীল চ্যানেল’-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

হেমা মালিনীর আগে তাঁদের জ্যেষ্ঠ কন্যা এষা দেওলও ইনস্টাগ্রামে বিবৃতি দিয়ে বাবার মৃত্যুর খবরকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। তিনি লেখেন, ‘গণমাধ্যম যেন আজ অতিরিক্ত তৎপর এবং তারা মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। আমার বাবা স্থিতিশীল এবং সুস্থ হচ্ছেন। আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমাদের পরিবারকে কিছুটা ব্যক্তিগত পরিসর দিন। বাবার দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করার জন্য ধন্যবাদ।’ এষা তাঁর পোস্টের কমেন্ট সেকশনও বন্ধ করে দিয়েছেন।

অন্যদিকে, গতকাল সোমবার গভীর রাতে ধর্মেন্দ্রর প্রথম পক্ষের পুত্র সানি দেওলও একটি বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, ‘ধর্মেন্দ্র জি স্থিতিশীল এবং পর্যবেক্ষণে আছেন। পরবর্তী মন্তব্য ও আপডেটগুলো যথাসময়ে জানানো হবে। দয়া করে তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। দ্রুত আরোগ্যের জন্য সকলের কাছে প্রার্থনা এবং পরিবারের ব্যক্তিগত পরিসরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অনুরোধ রইল।’

পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে অভিনেতা ধর্মেন্দ্রকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং ১০ নভেম্বর থেকে তিনি ভেন্টিলেটর সাপোর্টে আছেন। তবে পরিবার জানিয়েছে যে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।

অভিনেতার অসুস্থতার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূল ধারার কয়েকটি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভিড় করেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বলিউড তারকারা। হেমা মালিনী, সানি দেওল, ববি দেওল ছাড়াও হাসপাতালে ধর্মেন্দ্রকে দেখতে গিয়েছিলেন সালমান খান, শাহরুখ খান এবং গোবিন্দার মতো তারকারা। সুস্থতার জন্য গোটা বলিউড ও ভক্তরা তাঁর আরোগ্য কামনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৯
প্রয়াত অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত
প্রয়াত অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তাঁর বয়স ৮৯ বছর। তিনি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর দলের বরাত দিয়ে মৃত্যুর খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।

তবে, পরে ধর্মেন্দ্রর স্ত্রী হেমা মালিনী ও তাঁর মেয়ে এষা দেউল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, মৃত্যুর খবর ভুয়া। ধর্মেন্দ্র চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।

বলিউডের ‘হি-ম্যান’ নামে পরিচিত এই অভিনেতার ছয় দশকের বেশি সময়ে গড়া এক অসাধারণ চলচ্চিত্রজীবন। তাঁর মৃত্যুর খবরে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে। অসংখ্য অনুরাগী শোকাহত হয়েছেন। অন্তর্জালে সবাই শেষশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন ধর্মেন্দ্রকে। তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্ত্রী হেমা মালিনী, দুই ছেলে সানি ও ববি দেওল, আমিশা প্যাটেল, শাহরুখ খান, সালমান খানসহ অনেকে।

পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে ধর্মেন্দ্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল। এই অভিনেতাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

সোমবার রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধর্মেন্দ্রর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তাঁকে রুটিন চেকআপ ও চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ধর্মেন্দ্রর টিমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি কিছুটা দুর্বল হয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রাম নিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।’ ধর্মেন্দ্রর ম্যানেজার জানিয়েছিলেন, ‘এখন উনি আইসিইউতে আছেন। লাইফ সাপোর্টের খবর ভুল। উনার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।’

ধর্মেন্দ্রর স্ত্রী ও অভিনেত্রী হেমা মালিনী জানান, ‘ওর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আমরা দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ তবে শেষ পর্যন্ত ভক্তদের আশঙ্কাই সত্যি হলো।

ধর্মেন্দ্রর জন্ম ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর, পাঞ্জাবের নসরালি গ্রামে। প্রকৃত নাম ধর্মসিং দেওল। ১৯৬০ সালে অভিনয়জীবন শুরু হলেও এর আগে ধর্মেন্দ্রর পথ মোটেই সহজ ছিল না। এক সাধারণ গ্রামের ছেলেকে যে লড়াই করে তারকা হতে হয়েছিল, তা সিনেমার চেয়েও নাটকীয়।

দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হয়েও ছোটবেলা থেকে সিনেমার প্রতি ছিল প্রবল টান। পরিবারের দায়িত্ব সামলাতে তরুণ বয়সে ধর্মেন্দ্র ভারতীয় রেলে কেরানির পদে চাকরি নেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। তখন তাঁর প্রথম বিয়ে হয় প্রকাশ কৌরের সঙ্গে। মাসিক বেতন ছিল মাত্র ১২৫ রুপি। কিন্তু ধর্মেন্দ্র বুঝেছিলেন, রেলের চাকরিতে তাঁর মন বসছে না। তিনি জানতেন, জীবনের উদ্দেশ্য অন্য কোথাও—সিনেমায়, আলোয় আর ক্যামেরার সামনে।

১৯৬০ সালে ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতা জিতে তাঁর মুম্বাইয়ে যাত্রা। সেখান থেকেই শুরু ইতিহাস। পরিচালক অর্জুন হিঙ্গোরানির ছবিতে ‘দিল ভি তেরা, হাম ভি তেরে’তে (১৯৬০) প্রথম সুযোগ পান ধর্মেন্দ্র। পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন মাত্র ৫১ রুপি। সেখান থেকেই শুরু এক কিংবদন্তির যাত্রা। ‘ফুল অউর পাত্থার’ (১৯৬৬) ধর্মেন্দ্রকে একঝটকায় বলিউডের অ্যাকশন নায়কে পরিণত করে। পরের দুই দশকে তিনি হয়ে ওঠেন হিন্দি সিনেমার এক অপ্রতিরোধ্য মুখ। ‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘জাদুগর’, ‘ধরম বীর’, ‘দোস্ত’, ‘আনপাড়’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’—প্রতিটি চলচ্চিত্রেই তিনি যেন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন।

ধর্মেন্দ্রর জীবনের বড় অধ্যায় হেমা মালিনীকে ঘিরে। ১৯৮০ সালে এই জুটির বিয়ে হয়, যা বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। একসঙ্গে তাঁরা কাজ করেছেন ৩০টির বেশি ছবিতে। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘ড্রিমগার্ল’, ‘শরিফ বদমাশ’, ‘জুগনু’, ‘দোস্ত’ আজও জনপ্রিয়। প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সংসারে ধর্মেন্দ্রর দুই ছেলে সানি ও ববি দেওল—দুজনেই বলিউডের পরিচিত মুখ। হেমা মালিনীর সংসারে তাঁর দুই মেয়ে—এশা দেওল ও অহনা দেওল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যর্থতার কারণ জানালেন আদর আজাদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আদর আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
আদর আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

শোবিজে আদর আজাদের পথচলা শুরু ১১ বছর আগে। ২০১৪ সালে ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম দ্য আলটিমেট ম্যান প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এরপর মডেলিং ও ছোট পর্দা ঘুরে নাম লেখান সিনেমায়। ২০২২ সালে সৈকত নাসিরের ‘তালাশ’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় আদর আজাদের। ‘লাইভ’, ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, ‘টগর’, ‘জীবন জুয়া’সহ এ পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ১০টির মতো সিনেমা। কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন তিনি। তবে এখনো সাফল্যের মুখ দেখেনি আদরের কোনো সিনেমা। সম্প্রতি নিজের এই ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন অভিনেতা।

সাফল্য না পেলেও পিছু হটেননি আদর। নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন সিনেমায়। সম্প্রতি আদর আজাদ যুক্ত হয়েছেন জাহিদ হোসেনের ‘ঢাকাইয়া দেবদাস’ সিনেমায়। এর মহরতে নিজের ব্যর্থতা নিয়ে অভিনেতা বলেন, ‘সিনেমা আসলে ওয়ান ম্যান শো না। এটি পুরো টিমের জার্নি। সিনেমায় যদি ১০০টি বিভাগ থাকে, তাহলে কোনো বিভাগেই বিন্দুমাত্র খাদ রাখা যাবে না। আমার সিনেমাগুলোতে হয়তো ওই ধরনের ত্রুটি ছিল। গল্পে কোনো ত্রুটি ছিল, তা বলব না। যখন কোনো গল্প আমাকে ভাবায়, তখনই কাজটা করি। প্রতিটি গল্প, প্রতিটি চরিত্র আমার কাছে নতুন। ঠিক কোন কারণে ক্লিক হচ্ছে না বা কী ধরনের ভুল ছিল, তা বলতে পারব না। তবে ভুল থেকেই তো মানুষ শিক্ষা নেয়।’

সিনেমার ব্যর্থতায় নিজের দোষ নেই বলে মনে করেন আদর আজাদ। তিনি বলেন, ‘কোনো সিনেমায় পারফরমার হিসেবে আমাকে কেউ দোষারোপ করতে পারবে না। উদাহরণ দিয়ে বলি, তিরন্দাজ যখন তির ছোড়ে, তখন বাতাসের গতিবিধিও মাথায় রাখতে হয়। বাতাস কোন দিকে বইছে, সেই হিসাবে টার্গেট পয়েন্ট ঠিক করতে হয়। কখনো ১০-এ ১০ হয়, কখনো হয় না। আমার ক্ষেত্রেও তেমনটি হচ্ছে। সিনেমার সব বিভাগের কাজ যখন একই মানের হবে, তখনই ক্লিক করবে।’

আদর আজাদ মনে করেন, অভিনেতা হিসেবে তিনি ভালো করছেন বলেই নিয়মিত সিনেমায় সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘মাত্রই ‘‘ট্রাইব্যুনাল’’ নামের একটি সিনেমা শেষ করলাম। এখন ঢাকাইয়া দেবদাস সিনেমায় যুক্ত হয়েছি। এটাই আমার প্রাপ্তি। আমি যদি খারাপ করতাম, তাহলে আমাকে নিয়ে কেউ চিন্তা করত না। আমাকে নিয়ে কিন্তু চিন্তা করা হচ্ছে, পরিকল্পনা হচ্ছে, কাজ হচ্ছে। এটাই আমার কাছে অনেক কিছু। আমার ক্যারিয়ার হয়তো কচ্ছপের গতিতে এগোচ্ছে, কিন্তু কাজ তো হচ্ছে। শুধু আমাকে নয়, একটা চলচ্চিত্রে সবার মেধা ব্যবহার করতে হবে। প্রমোশন, মার্কেটিং থেকে শুরু করে সবকিছু ১০-এ ১০ হওয়া উচিত। তাহলেই একটা বিগ সাকসেস অচিরেই আমরা পেয়ে যাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিয়ে করলেন প্রিয়াঙ্কা জামান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
রাকিবুল হাসান ও প্রিয়াঙ্কা জামান। ছবি: সংগৃহীত
রাকিবুল হাসান ও প্রিয়াঙ্কা জামান। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ে করেছেন মডেল ও অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা জামান। পাত্রের নাম রাকিবুল হাসান। তিনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার এবং নারায়ণগঞ্জের একজন ব্যবসায়ী। ৯ নভেম্বর পুরান ঢাকার একটি বাড়িতে উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। গতকাল বিয়ের পরদিন ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব রওনা দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা ও রাকিবুল। ২৩ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে তাঁদের।

এর আগে বিয়ে প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, তিনি এমন একজন ছেলেকে বিয়ে করতে চান, যিনি ধর্মপরায়ণ ও ভালো মনের মানুষ এবং প্রিয়াঙ্কাকে অনেক ভালোবাসবে। সৌদি যাওয়ার আগে প্রিয়াঙ্কা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাকিবের সঙ্গে পরিচয় বেশি দিনের নয়। অল্প দিনের পরিচয়ে আমি তাকে জানার চেষ্টা করেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি সে কেমন মানুষ, তার মানসিকতা কেমন। আমার মনে হয়েছে, জীবনসঙ্গী হিসেবে আমি যেমন মানুষের স্বপ্ন দেখেছি, রাকিব ঠিক তেমন একজন। তার বিনয় এবং কেয়ারিং আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিয়ের পরদিনই আমরা ওমরাহ করার জন্য সৌদি যাচ্ছি। সবার কাছে দোয়া চাই, আমরা যেন সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পারি এবং বাকি জীবন সুখে-দুঃখে একসঙ্গে থাকতে পারি।’

প্রিয়াঙ্কা জামান জানিয়েছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে ঢাকায় তাঁদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে।

উল্লেখ্য, এরই মধ্যে প্রিয়াঙ্কা জামান সজীব চিশতীর ‘গয়নার বাক্স’সহ আরও দুটি নাটকে কাজ করেছেন। কিছুদিন আগে সুনামগঞ্জে শুটিং করেছেন কামরুল হুদার রচনা ও কামরুল হাসান সুজনের পরিচালনায় ২৬ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘মার্ডার’-এর। প্রিয়াঙ্কা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল ডিপজল প্রযোজিত ‘যেমন জামাই তেমন বউ’। বেশ কিছু সিনেমা মুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছে তাঁর। এই তালিকায় আছে মান্নান গাজীপুরীর ‘কী করে বলবো তোমায়’, অপূর্ব রানার ‘যন্ত্রণা’, মোহাম্মদ আসলামের ‘তবুও প্রেম দামী’ ইত্যাদি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত