Ajker Patrika

বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচিত ৫ চলচ্চিত্র

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬: ০০
বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচিত ৫ চলচ্চিত্র

বাঙালির জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া স্বাধীনতা। বাংলাদেশ নামে এই ভূখণ্ডের সংস্কৃতির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্ক নিবিড়। মুক্তিযুদ্ধে লাখো প্রাণ বিসর্জনের অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল বাঙালি সংস্কৃতি ধারণ ও লালনের স্বাধীনতা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর লোমহর্ষক ভয়ংকর বর্বরতার মধ্য দিয়ে বিজয়গাথা এক মহাকাব্য। বাংলাদেশের এই মহাকাব্যিক ইতিহাস বিভিন্ন সময়ে ধরা দিয়েছে রুপালি পর্দায়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু চলচ্চিত্র। মুক্তির লড়াই নিয়ে নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র নিয়েই আজকের এ আয়োজন—

ওরা ১১ জন
মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। প্রয়াত নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত চলচ্চিত্রটি ১৯৭২ সালে নির্মাণ করা হয়। এই চলচ্চিত্রের বিশেষত্ব হলো, এই চলচ্চিত্রের প্রধান ১১ জন অভিনেতার ১০ জনই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন খসরু, মুরাদ, হেলাল ও নান্টু। এতে আরও অভিনয় করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, সৈয়দ হাসান ইমাম, এটিএম শামসুজ্জামান ও খলিলউল্লাহ খান প্রমুখ। চলচ্চিত্রটি ১৯৭২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। চলচ্চিত্রটির প্রযোজক ছিলেন অভিনেতা মাসুদ পারভেজ, যিনি সবার কাছে সোহেল রানা নামে পরিচিত।

 আবার তোরা মানুষ হআবার তোরা মানুষ হ
সিনেমাটিতে যুদ্ধ-পরবর্তী একটি দেশের সামাজিক পরিবেশ ও বিশৃঙ্খলার চিত্র উঠে এসেছে। যুদ্ধে অংশ নেওয়া একদল তরুণ কলেজছাত্র যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশ থেকে অন্যায় ও অপকর্ম নির্মূলের লড়াই অব্যাহত রাখে। ১৯৭৩ সালে নির্মিত ছবিটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের আরেক বিখ্যাত পরিচালক প্রয়াত খান আতাউর রহমান। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফারুক, অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ, চিত্রনায়িকা ববিতা, অভিনেত্রী রোজী আফসারী ও রওশন জামিলসহ অনেকে। 

আগুনের পরশমণিআগুনের পরশমণি
বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ তাঁর লেখা উপন্যাস ‘আগুনের পরশমণি’র গল্পের ওপর ভিত্তি করে একই নামে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পটভূমির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকারি কর্মকর্তা মতিন সাহেবের অবরুদ্ধে পরিবারে বদি নামের একজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় নেন। আশ্রয় নেওয়ার পর যুদ্ধকালীন বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে গল্প এগিয়ে যেতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রে গুণী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রটি তখন আটটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিল। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, ডলি জহুর, আসাদুজ্জামান নূর ও বিপাশা হায়াত। 

হাঙর নদীর গ্রেনেডহাঙর নদী গ্রেনেড 
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের প্রকাশিত উপন্যাস ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ অবলম্বনে ১৯৯৭ সালে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। যশোরের এক মায়ের আত্মত্যাগের সত্য ঘটনা অবলম্বনে উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল। উপন্যাসটির প্রশংসা এবং এটি নিয়ে সিনেমা বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে সেলিনা হোসেনকে চিঠি লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায়। একজন মা মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তাঁর নিজের সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য বিসর্জন দেন। মায়ের ভূমিকায় অভিনেত্রী সুচরিতা অনবদ্য অভিনয় করেন এবং চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের মতে, এটাই সুচরিতার জীবনের সেরা ছবি। সিনেমাটিতে অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন সোহেল রানা, শর্মিলী আহমেদ, দোদুল, অন্তরা ও মিজু আহমেদ। ছবিটি সে বছর তিনটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে চাষী নজরুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সুচরিতা ও শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার হিসেবে সেলিনা হোসেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। 

 ছবি: সংগৃহীতশ্যামল ছায়া
শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রটি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি হলেও এই চলচ্চিত্রে সরাসরি যুদ্ধের দৃশ্য না দেখিয়েও যুদ্ধের আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সারা দেশে যখন যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে, তখন অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে থাকে। এমনই একদল জীবন বাঁচানোর জন্য পালাতে থাকা ও নিরাপদ আশ্রয় সন্ধানীর কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন প্রয়াত সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ। ছবিতে অভিনয় করেছেন হুমায়ুন ফরিদী, মেহের আফরোজ শাওন, শিমুল, দিয়াজ, স্বাধীন খসরু, সৈয়দ আখতার আলী, ফারুক আহমেদ, শায়েস্তা নাজনীনসহ আরও অনেকে। সিনেমাটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের (অস্কার) জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ও করাচির দুই উৎসবে বয়াতির ‘নয়া মানুষ’

বিনোদন প্রতিবেক, ঢাকা
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার পোস্টার; ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার পোস্টার; ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ও করাচির দুটি উৎসবে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে সোহেল রানা বয়াতির সিনেমা ‘নয়া মানুষ’। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এতে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে সিনেমাটি। অন্যদিকে, করাচির ওয়ার্ল্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হবে ২৭ নভেম্বর বিকেল ৪টায়।

২০২৬ সালের ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৪তম আসর। উৎসবে থাকবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্মাতাদের চলচ্চিত্র। এতে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে নয়া মানুষ।

‘নয়া মানুষ’ সিনেমায় রওনক হাসান। ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমায় রওনক হাসান। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, আর্টস কাউন্সিল অব পাকিস্তানের (এসিপি) আয়োজনে ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত করাচিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল। ৩৮ দিনব্যাপী এই উৎসবে থাকছে বিশ্বের নানা প্রান্তের শিল্প, সংগীত, নাটক ও নৃত্যের সমন্বয়। শতাধিক দেশের শিল্পীরা এই উৎসবে অংশ নেবেন। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রতি সপ্তাহে থাকছে দুই ঘণ্টার একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী পর্ব। এরই অংশ হিসেবে ২৭ নভেম্বর বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’। 

এর আগে ভারতের কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও কানাডার টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছে নয়া মানুষ।

নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, ‘আমরা একটা সহজ-সরল গল্প সাধারণভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছি। আমাদের এই প্রচেষ্টাকে সবাই উৎসাহিত করছে। দেশ ও বিদেশে আমার প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে, যা আমার পরবর্তী চলচ্চিত্র নির্মাণের উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

‘নয়া মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে মৌসুমী হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
‘নয়া মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে মৌসুমী হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

প্রসঙ্গত, সুপার সাইক্লোন ‘সিত্রাং’ চলাকালে চাঁদপুরের একটি চরে শুটিং হয় নয়া মানুষের। সিনেমায় গান গেয়েছেন শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাশা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।

আ মা ম হাসানুজ্জামানের ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মাসুম রেজা। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশিস খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবরীর শেষ সিনেমার প্রিমিয়ার হবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অভিনেত্রী কবরী। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেত্রী কবরী। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী কবরী পরিচালিত শেষ সিনেমা ‘এই তুমি সেই তুমি’। তবে সিনেমাটি শেষ করতে পারেননি তিনি। কিছু অংশের শুটিং বাকি থাকতে ২০২১ সালে মারা যান। কবরীর মৃত্যুর পর সিনেমাটির নির্মাণ শেষ করেন তাঁর ছেলে শাকের চিশতী।

২০২৩ সালে এই তুমি সেই তুমি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন শাকের চিশতী। এবার মুক্তির পালা। তবে দেশে মুক্তির আগে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর চেষ্টা করছেন শাকের চিশতী। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে জমা দিয়েছেন সিনেমাটি। এরপর দেশের হলে মুক্তির পরিকল্পনা করবেন।

শাকের চিশতী গণমাধ্যমে জানান, সিনেমাটি শেষ করা ছিল তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘আম্মুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করাই আমার জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। একটু সময় নিয়ে কাজ শেষ করেছি। দেশের বাইরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে সিনেমাটি জমা দিয়েছি। ওই উৎসবগুলোতে প্রদর্শনী হলে দেশে সিনেমাটি মুক্তি পাবে।’

তবে ঠিক কবে নাগাদ দেশের হলে মুক্তি পাবে সিনেমাটি, তা জানাননি শাকের চিশতী। তিনি জানান, সবকিছু নির্ভর করছে এই তুমি সেই তুমি সিনেমার আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর ওপর।

পরিচালনার পাশাপাশি এই তুমি সেই তুমি সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছিলেন কবরী। দুটি সময়কে তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়। বর্তমান সময়ের গল্পের পাশাপাশি উঠে আসবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ের গল্প। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিশাত নাওয়ার সালওয়া ও রায়হান রিয়াদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিলারা জামানকে নিয়ে ৭ পর্বের ধারাবাহিক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘দাদীর ভাগ’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে দিলারা জামান ও মুন। ছবি: সংগৃহীত
‘দাদীর ভাগ’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে দিলারা জামান ও মুন। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী দিলারা জামানকে নিয়ে তৈরি হলো ৭ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘দাদীর ভাগ’। ধারাবাহিকের মূল চরিত্র দাদিকে ঘিরে এগিয়েছে গল্প। দাদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন জামিল হোসেন, মুনমুন আহমেদ মুন, নরেশ ভূঁইয়া, রেশমা আহমেদ, মম শিউলী, আমিন আজাদ, সূচনা প্রমুখ। অভিনেতা জামিল হোসেনের গল্প ভাবনায় নাটকটি রচনা করেছেন বিদ্যুৎ রায়, পরিচালনায় মাহফুজ ইসলাম। প্রকাশ করা হবে জামিল’স জু নামের ইউটিউব চ্যানেলে।

ধারাবাহিকটির দুটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুনমুন আহমেদ মুন ও জামিল হোসেন। চলতি বছর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার’খ্যাত অভিনেতা জামিল হোসেন ও অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদ মুন। স্ত্রী মুনমুনের সঙ্গে একসঙ্গে জুটি বেঁধে বেশ কিছু নাটকে কাজ করেছেন জামিল। সেখান থেকেই দুজনের পরিচয়। আর সেই পরিচয় একটা সময় গড়ায় ভালো লাগায়।

মুনের বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন মালয়েশিয়াতে। বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে পরিচিতি পেয়েছেন মুনমুন। সাবলীল অভিনয় তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে নাটকেও। দাদীর ভাগ ধারাবাহিকে দিলারা জামানের সঙ্গে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে একটি স্বপ্ন পূরণ হলো তাঁর। অভিনেত্রী দিলারা জামানের ভক্ত তিনি। তাঁর ব্যক্তিত্ব আর অভিনয় মুগ্ধ করে মুনকে। তাই স্বপ্ন দেখতেন দিলারা জামানের সঙ্গে অভিনয়ের। দাদীর ভাগ ধারাবাহিকে মুন অভিনয় করলেন দিলারা জামানের নাতনির চরিত্রে। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আর নিজের স্বপ্ন পূরণের কথা বলতে গিয়ে মুনমুন আহমেদ মুন বলেন, ‘শ্রদ্ধেয় দিলারা জামান বাংলাদেশের নাটক-সিনেমার গর্ব।

জামিল হোসেন
জামিল হোসেন

মাশাআল্লাহ এখনো কী সুন্দর তিনি। কী সুন্দর গুছিয়ে কথা বলেন, আন্তরিকতায় পূর্ণ তাঁর ব্যবহার। ভীষণ ইচ্ছে ছিল তাঁর সঙ্গে অভিনয় করার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, তাও আবার আমি তাঁর নাতনির চরিত্রেই অভিনয় করেছি। কী যে আদরে, মায়ায় তিনি আগলে রাখেন সব সময়, সেটা তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি। এত বড় মাপের শিল্পী, অথচ কী সাধারণ জীবনযাপন। আমি তাঁর বিনয়, হাসি আর অভিনয়ে মুগ্ধ। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পেরে ধন্য, গর্বিত এবং ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এটা আমার জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি।’

দিলারা জামান বলেন, ‘দাদীর ভাগ নাটকটার গল্প খুব সুন্দর। মৃত্যুর আগে দাদা সব সম্পত্তি দাদিকে লিখে দেয়। সেই সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়েই গল্প। কাজটা করে ভীষণ ভালো লেগেছে। সবাই এত আন্তরিক ছিল যে আমাকে কোনো রকম কষ্ট পেতে দেয়নি। মুনমুন খুব লক্ষ্মী আর মিষ্টি হাসির এক মেয়ে। দোয়া করি ও যেন অনেক বড় শিল্পী হতে পারে, অভিনয়কে ঘিরে তার স্বপ্ন পূরণ হোক।’

উল্লেখ্য, দীপ্ত টিভির ‘বকুলপুর’ ধারাবাহিকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে দিলারা জামানের অভিনয়। অন্যদিকে মুনমুন আহমেদ মুন অনেক দিন পর অভিনয় করেছেন সাগর জাহান পরিচালিত ধারাবাহিকে। আরটিভির প্রচার চলতি ধারাবাহিকটির নাম ‘বিদেশ ফেরত’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কনসার্টের জন্য প্রস্তুত আজম খানের ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড ও এজেন্সির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড ও এজেন্সির সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

গত জুনেই জানা গিয়েছিল আবার শুরু হচ্ছে আজম খানের উচ্চারণ ব্যান্ডের কার্যক্রম। আজম খানের মেয়ে অরণী খান জানিয়েছিলেন, নতুন উদ্যমে ফিরছে ব্যান্ডটি। এবার জানা গেল, দেশ-বিদেশে কনসার্টের জন্য প্রস্তুত উচ্চারণ। ৮ নভেম্বর উচ্চারণ ব্যান্ডের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে আজম খানের পরিবার, ব্যান্ড সদস্য ও একটি এজেন্সির মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, আজম খানের নাম, ছবি ও সৃষ্টির সব কপিরাইট এবং মালিকানা থাকবে তাঁর পরিবারের। উচ্চারণ ব্যান্ড তাঁর গান পরিবেশন ও প্রচারে সক্রিয় থাকবে; আর কুল এক্সপোজার পরিচালনা করবে সমস্ত প্রচার, রয়্যালটি ব্যবস্থাপনা, কনসার্ট এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

আজম খানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর কন্যা অরণী খান, উচ্চারণ ব্যান্ডের প্রধান দুলাল জোহা এবং কুল এক্সপোজারের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সিইও এরশাদুল হক টিঙ্কু চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

উচ্চারণ ব্যান্ডের প্রধান দুলাল জোহা বলেন, ‘এই চুক্তি আজম খানের সংগীত ঐতিহ্যকে নতুনভাবে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আমরা তাঁর গানগুলো দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ছড়িয়ে দিতে চাই।’

মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে তিন বন্ধু নীলু, সাদেক ও মনসুরকে নিয়ে আজম খান গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ড উচ্চারণ। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যান্ডটি ওই বছর বিটিভিতে গায় ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ এবং ‘চার কলেমা সাক্ষী দেবে’। এই দুটি গান জনপ্রিয় করে তোলে আজম খান ও উচ্চারণ ব্যান্ডকে। এরপর উচ্চারণকে সঙ্গে নিয়ে আরও বহু গান উপহার দিয়েছেন আজম খান। ২০১১ সালের ৫ জুন আজম খানের মৃত্যুর পর থেমে যায় ব্যান্ডের কার্যক্রম। গত ২২ জুন আজম খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গুরু রিলোডেড’ নামের অনুষ্ঠানে ১৪ বছর পর মঞ্চে পারফর্ম করে উচ্চারণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত