
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন চলছিল, তখন শোবিজের অনেক শিল্পী ছাত্রদের সমর্থনে নেমেছিলেন রাজপথে। আরেক দল শিল্পী, যাঁরা আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত, তাঁরা গোপনে ছক কষছিলেন, কীভাবে এই আন্দোলন দমানো যায়।
‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
এ দিকে চিকিৎসার জন্য আজ বুধবার যুক্তরাজ্যে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানে তাঁকে হিথ্রো বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন বড় ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ ড. জোবাইদা রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘ সাড়ে ৭ বছর পর দেখা হলো মা–ছেলের। ছেলেকে কাছে পেয়েই জড়িয়ে ধরে আদর দেন হুইলচেয়ারে থাকা খালেদা জিয়া। সেই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়াই এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই মা–ছেলের এই দীর্ঘপ্রতিক্ষীত মিলন নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন।
বাদ যাননি সেই ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের অরুণা বিশ্বাসও। রাত ১০টার দিকে তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সেই দৃশ্যের ছবি পোস্ট দিয়েছেন। ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে অরুণা বিশ্বাস লিখেছেন, ‘মা আর সন্তান, এটাই পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর দৃশ্য। মা।’ সঙ্গে আদরের ইমোজি জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যাতে আওয়ামীপন্থী শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন। সেই গ্রুপের কয়েকটি স্ক্রিনশট ফাঁসের পর হতবাক সবাই!

‘আলো আসবেই’ নামে সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কয়েকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, তানভীন সুইটি, জ্যোতিকা জ্যোতি ও সোহানা সাবা সেখানে বেশ সক্রিয়। ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান ছিল তাঁদের। তাঁরা মত দেন, যেভাবেই হোক, আন্দোলন থামাতে হবে। এর মধ্যে জ্যোতিকা জ্যোতির একটি তথ্যের জবাব দিতে গিয়ে অরুণা বিশ্বাস পরামর্শ দেন আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার!
আন্দোলনের পক্ষে ফেসবুক পোস্ট দেওয়ায় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সমালোচনাও করা হয় সেখানে। ফারুকী বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
‘আলো আসবেই’ গ্রুপে ছিলেন—সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, ফেরদৌস ছাড়াও ছিলেন রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ অনেকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন চলছিল, তখন শোবিজের অনেক শিল্পী ছাত্রদের সমর্থনে নেমেছিলেন রাজপথে। আরেক দল শিল্পী, যাঁরা আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত, তাঁরা গোপনে ছক কষছিলেন, কীভাবে এই আন্দোলন দমানো যায়।
‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
এ দিকে চিকিৎসার জন্য আজ বুধবার যুক্তরাজ্যে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানে তাঁকে হিথ্রো বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন বড় ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ ড. জোবাইদা রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘ সাড়ে ৭ বছর পর দেখা হলো মা–ছেলের। ছেলেকে কাছে পেয়েই জড়িয়ে ধরে আদর দেন হুইলচেয়ারে থাকা খালেদা জিয়া। সেই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়াই এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই মা–ছেলের এই দীর্ঘপ্রতিক্ষীত মিলন নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন।
বাদ যাননি সেই ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের অরুণা বিশ্বাসও। রাত ১০টার দিকে তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সেই দৃশ্যের ছবি পোস্ট দিয়েছেন। ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে অরুণা বিশ্বাস লিখেছেন, ‘মা আর সন্তান, এটাই পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর দৃশ্য। মা।’ সঙ্গে আদরের ইমোজি জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যাতে আওয়ামীপন্থী শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন। সেই গ্রুপের কয়েকটি স্ক্রিনশট ফাঁসের পর হতবাক সবাই!

‘আলো আসবেই’ নামে সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কয়েকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, তানভীন সুইটি, জ্যোতিকা জ্যোতি ও সোহানা সাবা সেখানে বেশ সক্রিয়। ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান ছিল তাঁদের। তাঁরা মত দেন, যেভাবেই হোক, আন্দোলন থামাতে হবে। এর মধ্যে জ্যোতিকা জ্যোতির একটি তথ্যের জবাব দিতে গিয়ে অরুণা বিশ্বাস পরামর্শ দেন আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার!
আন্দোলনের পক্ষে ফেসবুক পোস্ট দেওয়ায় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সমালোচনাও করা হয় সেখানে। ফারুকী বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
‘আলো আসবেই’ গ্রুপে ছিলেন—সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, ফেরদৌস ছাড়াও ছিলেন রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ অনেকে।

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
২০ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
২০ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
২১ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক। তাঁর হাতেই অনেকখানি জীবনবোধ শিখেছে, আন্তর্জাতিকতা পেয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। ঢাকায় তাঁর জন্ম। রাজশাহীতে যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। দেশভাগের কারণে ঠাঁই হয় কলকাতায়। নিজের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার এই কষ্ট সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে ঋত্বিক ঘটককে। তাঁর প্রতিটি কাজেও সেটাই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়। আজ এই বাংলা চলচ্চিত্রের দামাল প্রতিভার জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বিশেষ আয়োজন।

ঋত্বিক আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি
সত্যজিৎ রায়, নির্মাতা
ঋত্বিকের সঙ্গে সামনাসামনি পরিচয় হবার আগে আমি তাঁকে প্রথম চিনি নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অরোরা কোম্পানির আপিসে ঋত্বিকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তার কিছু আগে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেয়েছে, ঋত্বিক সে ছবি দেখেছে, এবং তার খুব বেশি রকম ভালো লেগেছিল। সে কথা সে প্রাণ খুলে আমার কাছে বলে। কিন্তু আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিল, সে যেভাবে ছবিটাকে বিশ্লেষণ করেছিল, তাতে আমার মনে হয়েছিল, ঋত্বিক যদি ছবি করে তাহলে সে খুবই ভালো করবে।
‘অযান্ত্রিক’ ছবির প্রথম শোতে আমি উপস্থিত ছিলাম। দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, একজন সত্যিকারের শিল্পী যদি কাজের সুযোগ পায়, তাহলে সে কতটা এগিয়ে যেতে পারে! উনিশ শ ত্রিশ বা পঁচিশ থেকে শুরু করে প্রায় ষাট অবধি আমরা হলিউডের বাইরে খুব বেশি ছবি দেখার সুযোগ পাইনি। আমাদের সকলের মধ্যেই তাই কিছু কিছু হলিউডের প্রভাব ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ঋত্বিক এক রহস্যময় কারণে সম্পূর্ণ সে প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল, তার মধ্যে হলিউডের কোনো ছাপ নেই। এটা যে কী করে হয়েছে, সেটা আমার কাছে রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। ঋত্বিক মনেপ্রাণে বাঙালি পরিচালক ছিল, বাঙালি শিল্পী ছিল—আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি। আমার কাছে সেইটেই তার সবচেয়ে বড় পরিচয় এবং তার সবচেয়ে মূল্যবান এবং লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া
মৃণাল সেন, নির্মাতা
ঋত্বিক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায় আর আমি; এই নিয়ে আমাদের একটা ছোট্ট দল ছিল তখন। কখনো বিজন ভট্টাচার্য এসে জুটতেন, কখনোবা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋত্বিক ছিল দলের সবচেয়ে লম্বাটে, সবচেয়ে রোগাটে এবং অবশ্যই সবচেয়ে ডাকসাইটে শরিক। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়তাম, হাজরা রোডের ওপর ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে ভিড় করতাম। সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলত একটানা আসর। সূর্যের তলায় যা কিছু ছিল সবই তুলে ধরতাম চায়ের টেবিলে, বিচারে আর বিশ্লেষণে মুখর হয়ে উঠতাম প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু বারবার নানা কথার মধ্যেও যে প্রশ্নে, যে তর্কে, যে বিষয়ে ফিরে আসতাম তা হলো সিনেমা। সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই। এই প্রাণচঞ্চল আসরগুলোয় যার গলা সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বাঁধা ছিল, সে হলো ঋত্বিক। ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করত না।
ঋত্বিকের বেপরোয়া মেজাজ পরবর্তীকালে দর্শক প্রত্যক্ষ করেছেন ‘অযান্ত্রিক’-এ, ‘মেঘে ঢাকা তারা’য়, ‘সুবর্ণরেখা’য়, ওর কথাবার্তায়, ওর লিখিত বক্তব্যে। আমরা ঝগড়াও করেছি প্রচুর। তখন এবং পরবর্তী জীবনে। ঝগড়া করেছি, মতান্তর ঘটেছে, আবার সময় আর ঘটনার মধ্য দিয়ে মিশে গিয়েছি আগেকার মতোই, একসঙ্গে চলেছি।

অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো
মার্টিন স্করসেসি, হলিউড নির্মাতা
সত্যজিৎ রায় একবার ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বলেছিলেন, তাঁর কাছে হয়তো হলিউডের অস্তিত্বই ছিল না কখনো। কথাটা খুবই দারুণ লেগেছিল। আমরা ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট শুরু করি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে কখনো কখনো অনেক সিনেমা আড়ালে পড়ে গেছে, সেসব সিনেমাকে সংরক্ষণ করে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। অনেক সময় এমন হয়, নির্মাতার জীবদ্দশায় তাঁর কাজের যথেষ্ট স্বীকৃতি মেলে না। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে গিয়ে সিনেমাটি বানিয়েছিলেন তিনি।
অনেক বছর ধরে পশ্চিমাদের কাছে ভারতীয় চলচ্চিত্র মানেই ছিল সত্যজিৎ রায়। তারপর আসে বলিউড। সময় যত গড়িয়েছে, আমাদের দৃষ্টিসীমা যত প্রসারিত হয়েছে, ঋত্বিক ঘটকের মতো অনেক প্রতিভা বেরিয়ে আসছে। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’ তৈরি হয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’রও বছরখানেক আগে। সময়মতো মুক্তি পেলে এটিই হতে পারত প্রথম বাংলা আর্ট ফিল্ম। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ শিল্পী ছিলেন ঘটক। মাত্র ৮টি সিনেমা তৈরি করেছেন। তবে সিনেমা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল খুবই পরিষ্কার। তাঁর প্রতিটি সিনেমা ভিজ্যুয়ালি এবং থিমের জায়গা থেকে খুবই সমৃদ্ধ। ভারতের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো।
একনজরে ঋত্বিক ঘটক

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক। তাঁর হাতেই অনেকখানি জীবনবোধ শিখেছে, আন্তর্জাতিকতা পেয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। ঢাকায় তাঁর জন্ম। রাজশাহীতে যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। দেশভাগের কারণে ঠাঁই হয় কলকাতায়। নিজের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার এই কষ্ট সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে ঋত্বিক ঘটককে। তাঁর প্রতিটি কাজেও সেটাই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়। আজ এই বাংলা চলচ্চিত্রের দামাল প্রতিভার জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বিশেষ আয়োজন।

ঋত্বিক আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি
সত্যজিৎ রায়, নির্মাতা
ঋত্বিকের সঙ্গে সামনাসামনি পরিচয় হবার আগে আমি তাঁকে প্রথম চিনি নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অরোরা কোম্পানির আপিসে ঋত্বিকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তার কিছু আগে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেয়েছে, ঋত্বিক সে ছবি দেখেছে, এবং তার খুব বেশি রকম ভালো লেগেছিল। সে কথা সে প্রাণ খুলে আমার কাছে বলে। কিন্তু আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিল, সে যেভাবে ছবিটাকে বিশ্লেষণ করেছিল, তাতে আমার মনে হয়েছিল, ঋত্বিক যদি ছবি করে তাহলে সে খুবই ভালো করবে।
‘অযান্ত্রিক’ ছবির প্রথম শোতে আমি উপস্থিত ছিলাম। দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, একজন সত্যিকারের শিল্পী যদি কাজের সুযোগ পায়, তাহলে সে কতটা এগিয়ে যেতে পারে! উনিশ শ ত্রিশ বা পঁচিশ থেকে শুরু করে প্রায় ষাট অবধি আমরা হলিউডের বাইরে খুব বেশি ছবি দেখার সুযোগ পাইনি। আমাদের সকলের মধ্যেই তাই কিছু কিছু হলিউডের প্রভাব ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ঋত্বিক এক রহস্যময় কারণে সম্পূর্ণ সে প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল, তার মধ্যে হলিউডের কোনো ছাপ নেই। এটা যে কী করে হয়েছে, সেটা আমার কাছে রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। ঋত্বিক মনেপ্রাণে বাঙালি পরিচালক ছিল, বাঙালি শিল্পী ছিল—আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি। আমার কাছে সেইটেই তার সবচেয়ে বড় পরিচয় এবং তার সবচেয়ে মূল্যবান এবং লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া
মৃণাল সেন, নির্মাতা
ঋত্বিক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায় আর আমি; এই নিয়ে আমাদের একটা ছোট্ট দল ছিল তখন। কখনো বিজন ভট্টাচার্য এসে জুটতেন, কখনোবা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋত্বিক ছিল দলের সবচেয়ে লম্বাটে, সবচেয়ে রোগাটে এবং অবশ্যই সবচেয়ে ডাকসাইটে শরিক। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়তাম, হাজরা রোডের ওপর ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে ভিড় করতাম। সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলত একটানা আসর। সূর্যের তলায় যা কিছু ছিল সবই তুলে ধরতাম চায়ের টেবিলে, বিচারে আর বিশ্লেষণে মুখর হয়ে উঠতাম প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু বারবার নানা কথার মধ্যেও যে প্রশ্নে, যে তর্কে, যে বিষয়ে ফিরে আসতাম তা হলো সিনেমা। সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই। এই প্রাণচঞ্চল আসরগুলোয় যার গলা সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বাঁধা ছিল, সে হলো ঋত্বিক। ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করত না।
ঋত্বিকের বেপরোয়া মেজাজ পরবর্তীকালে দর্শক প্রত্যক্ষ করেছেন ‘অযান্ত্রিক’-এ, ‘মেঘে ঢাকা তারা’য়, ‘সুবর্ণরেখা’য়, ওর কথাবার্তায়, ওর লিখিত বক্তব্যে। আমরা ঝগড়াও করেছি প্রচুর। তখন এবং পরবর্তী জীবনে। ঝগড়া করেছি, মতান্তর ঘটেছে, আবার সময় আর ঘটনার মধ্য দিয়ে মিশে গিয়েছি আগেকার মতোই, একসঙ্গে চলেছি।

অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো
মার্টিন স্করসেসি, হলিউড নির্মাতা
সত্যজিৎ রায় একবার ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বলেছিলেন, তাঁর কাছে হয়তো হলিউডের অস্তিত্বই ছিল না কখনো। কথাটা খুবই দারুণ লেগেছিল। আমরা ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট শুরু করি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে কখনো কখনো অনেক সিনেমা আড়ালে পড়ে গেছে, সেসব সিনেমাকে সংরক্ষণ করে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। অনেক সময় এমন হয়, নির্মাতার জীবদ্দশায় তাঁর কাজের যথেষ্ট স্বীকৃতি মেলে না। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে গিয়ে সিনেমাটি বানিয়েছিলেন তিনি।
অনেক বছর ধরে পশ্চিমাদের কাছে ভারতীয় চলচ্চিত্র মানেই ছিল সত্যজিৎ রায়। তারপর আসে বলিউড। সময় যত গড়িয়েছে, আমাদের দৃষ্টিসীমা যত প্রসারিত হয়েছে, ঋত্বিক ঘটকের মতো অনেক প্রতিভা বেরিয়ে আসছে। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’ তৈরি হয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’রও বছরখানেক আগে। সময়মতো মুক্তি পেলে এটিই হতে পারত প্রথম বাংলা আর্ট ফিল্ম। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ শিল্পী ছিলেন ঘটক। মাত্র ৮টি সিনেমা তৈরি করেছেন। তবে সিনেমা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল খুবই পরিষ্কার। তাঁর প্রতিটি সিনেমা ভিজ্যুয়ালি এবং থিমের জায়গা থেকে খুবই সমৃদ্ধ। ভারতের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো।
একনজরে ঋত্বিক ঘটক

‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
০৯ জানুয়ারি ২০২৫
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
২০ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
২১ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অভিনেতা আবুল হায়াত, মফিদুল হক, সুলতানা কামালসহ অনেকে।
রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। আজ বিকেল ৪টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত, প্রদীপ প্রজ্বালন, ঋত্বিককে নিয়ে আলোচনা এবং তাঁর বায়োপিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’র প্রদর্শনী।
বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম হাতে নিয়েছে বছরব্যাপী ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান। আজ বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। প্রদর্শিত হবে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সেমিনার ‘ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র: মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ’। উপস্থিত থাকবেন হাবিবুর রহমান খান, ড. মো. সেলিম রেজা, অধ্যাপক ড. ফাহমিদা আক্তার, ড. জাকির হোসেন রাজু ও অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আজ বেলা ৩টায় রয়েছে ‘শতবর্ষে ঋত্বিক ঘটক’। স্মারক বক্তৃতা দেবেন মইনুদ্দীন খালেদ। বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘কোমল গান্ধার’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘অযান্ত্রিক’। আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।
জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ বিকেল ৪টায় রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন। থাকবে প্রবন্ধ পাঠ, মুক্ত আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
চট্টগ্রাম ফিল্ম ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান। ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে দেখানো হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ এবং ৮ নভেম্বর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। ১৪ নভেম্বর একই স্থানে থাকবে স্মারক বক্তৃতা।

যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অভিনেতা আবুল হায়াত, মফিদুল হক, সুলতানা কামালসহ অনেকে।
রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। আজ বিকেল ৪টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত, প্রদীপ প্রজ্বালন, ঋত্বিককে নিয়ে আলোচনা এবং তাঁর বায়োপিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’র প্রদর্শনী।
বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম হাতে নিয়েছে বছরব্যাপী ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান। আজ বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। প্রদর্শিত হবে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সেমিনার ‘ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র: মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ’। উপস্থিত থাকবেন হাবিবুর রহমান খান, ড. মো. সেলিম রেজা, অধ্যাপক ড. ফাহমিদা আক্তার, ড. জাকির হোসেন রাজু ও অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আজ বেলা ৩টায় রয়েছে ‘শতবর্ষে ঋত্বিক ঘটক’। স্মারক বক্তৃতা দেবেন মইনুদ্দীন খালেদ। বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘কোমল গান্ধার’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘অযান্ত্রিক’। আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।
জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ বিকেল ৪টায় রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন। থাকবে প্রবন্ধ পাঠ, মুক্ত আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
চট্টগ্রাম ফিল্ম ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান। ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে দেখানো হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ এবং ৮ নভেম্বর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। ১৪ নভেম্বর একই স্থানে থাকবে স্মারক বক্তৃতা।

‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
০৯ জানুয়ারি ২০২৫
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
২০ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
২১ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৯৬৪-৬৫ সালে পত্রপত্রিকায় ঋত্বিক ঘটকের কিছু লেখা পড়ে আগ্রহ তৈরি হয়। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় হয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষে আমাদের এক সংগঠনের আয়োজনে সত্যজিৎ রায়, শ্যামল মিত্র ঢাকায় আসেন। সত্যজিৎ রায়ের পিএস বরুণ বক্সি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্যজিৎ বাবুর ছবি করবেন?’ বললাম, সিনেমা একটি করতে পারি, যদি ঋত্বিক ঘটককে পাওয়া যায়। মাস দেড়েক পরে ফোন দিলেন, ‘ঋত্বিককে পেয়েছি, চলে আসেন’। চলে গেলাম। ঋত্বিকের সঙ্গে দেখা হলো, কথা হলো। তাঁর ছবি দেখলাম, স্পেশালি অ্যারেঞ্জ করা হলো ‘সুবর্ণরেখা’। দেখার পর মনে হচ্ছিল, কোনো মানুষ এই ছবি বানায়নি। তাঁকে বললাম, ‘আমি আপনার কোন সিনেমা করব?’ তিনি বললেন, ‘আমার তো তিতাস করার শখ।’ বললাম, ডান। একটি ট্রাস্টের কাছে তিতাসের রাইট ছিল। তাতে ট্রাস্টি ছিলেন সত্যজিৎ রায়। যখন জানালাম, আমরা ঋত্বিক ঘটককে দিয়ে উপন্যাসটি অবলম্বনে সিনেমা করতে চাই, তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ঋত্বিকবাবু যদি করেন, তাহলে এটি দেওয়া যেতে পারে।’
ঋত্বিক ঘটককে লোকেশন দেখানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে এলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আরিচা, নারায়ণগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে লোকেশন দেখলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই শুটিং শুরু হয়েছে, ১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই রিলিজ হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি দিন ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে এক খাটে ঘুমিয়েছি, যতবার ইন্ডিয়ায় গেছেন, সঙ্গে গেছি। এক কাজে মুম্বাই গেলেন, আমিও গেলাম। তাঁর তো ঠিক নেই, খেয়ালি মানুষ—তাই সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকতাম।
কলাকুশলী, অভিনেতা—সব তিনি দেখে দেখে নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি। তিতাসের পারে প্রায় ২৫ শতাংশ শুটিং হয়েছে। সেখানে আমরা সেট তৈরি করে শুটিং করেছি। আমাদের কাছে একটি বড় জেনারেটর ছিল, সেটি লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা থাকত। তখন বর্ষাকাল, পানি অনেক। কোনো অসুবিধা ছিল না। যেখানে খুশি জেনারেটর লাগিয়ে নিতাম। লঞ্চে অবশ্য অনেক কষ্ট করে শুটিং ইউনিট থাকত। এফডিসিতে তিন-চার দিন ইনডোর শুটিং হয়েছে। জেলেপাড়ার শুটিং দুই জায়গায় হয়েছে। কিছু আরিচায়, কিছু তিতাসের ঘাটে।
শুটিং, ডাবিং—সব কাজেই ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এডিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন। যাওয়ার সময় এডিটরকে বললেন, ‘এই বাকিটুকু কেটেকুটে ছবিটিকে রিলিজ করে দেবেন।’ বললাম, আর কেউ আপনার ছবিতে হাত দেবে না। লিখে দেন। তিনি এডিটরকে লিখিত পারমিশন দিয়ে গেলেন। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে দু-তিনটি শট অ্যাডজাস্ট করা ছাড়া আর কিছুই করেননি। অনেকে মনে করেন, তিনি এডিট করেননি। সব বাজে কথা। এখন আমরা ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ যেভাবে দেখি, সেটি তাঁরই পরিকল্পনায়, ঋত্বিকেরই হাতে তৈরি।
এ সিনেমায় ঋত্বিক ঘটক আর ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান ছাড়া বাইরের কেউ কাজ করেননি। সবাই বাংলাদেশের। ক্যামেরা, এডিটিং, সাউন্ড—সবই এখানকার। তিতাস একটি কমপ্লিট বাংলাদেশি ফিল্ম। কোনোভাবেই যৌথ প্রযোজনার নয়। তিতাস করতে খরচ হয়েছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। তখন ১ লাখ টাকায় একটি সিনেমা হতো। আমার আট গুণ খরচ হয়েছিল। ফেরত এসেছিল এক লাখ ২৩ হাজার টাকা। আমি এখনো বছরে এক-দুইবার দেখি সিনেমাটি। যত বয়স বাড়ছে, ততই ভিন্নমাত্রায় তিতাস ধরা পড়ছে আমার চোখে।

ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৯৬৪-৬৫ সালে পত্রপত্রিকায় ঋত্বিক ঘটকের কিছু লেখা পড়ে আগ্রহ তৈরি হয়। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় হয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষে আমাদের এক সংগঠনের আয়োজনে সত্যজিৎ রায়, শ্যামল মিত্র ঢাকায় আসেন। সত্যজিৎ রায়ের পিএস বরুণ বক্সি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্যজিৎ বাবুর ছবি করবেন?’ বললাম, সিনেমা একটি করতে পারি, যদি ঋত্বিক ঘটককে পাওয়া যায়। মাস দেড়েক পরে ফোন দিলেন, ‘ঋত্বিককে পেয়েছি, চলে আসেন’। চলে গেলাম। ঋত্বিকের সঙ্গে দেখা হলো, কথা হলো। তাঁর ছবি দেখলাম, স্পেশালি অ্যারেঞ্জ করা হলো ‘সুবর্ণরেখা’। দেখার পর মনে হচ্ছিল, কোনো মানুষ এই ছবি বানায়নি। তাঁকে বললাম, ‘আমি আপনার কোন সিনেমা করব?’ তিনি বললেন, ‘আমার তো তিতাস করার শখ।’ বললাম, ডান। একটি ট্রাস্টের কাছে তিতাসের রাইট ছিল। তাতে ট্রাস্টি ছিলেন সত্যজিৎ রায়। যখন জানালাম, আমরা ঋত্বিক ঘটককে দিয়ে উপন্যাসটি অবলম্বনে সিনেমা করতে চাই, তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ঋত্বিকবাবু যদি করেন, তাহলে এটি দেওয়া যেতে পারে।’
ঋত্বিক ঘটককে লোকেশন দেখানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে এলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আরিচা, নারায়ণগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে লোকেশন দেখলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই শুটিং শুরু হয়েছে, ১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই রিলিজ হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি দিন ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে এক খাটে ঘুমিয়েছি, যতবার ইন্ডিয়ায় গেছেন, সঙ্গে গেছি। এক কাজে মুম্বাই গেলেন, আমিও গেলাম। তাঁর তো ঠিক নেই, খেয়ালি মানুষ—তাই সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকতাম।
কলাকুশলী, অভিনেতা—সব তিনি দেখে দেখে নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি। তিতাসের পারে প্রায় ২৫ শতাংশ শুটিং হয়েছে। সেখানে আমরা সেট তৈরি করে শুটিং করেছি। আমাদের কাছে একটি বড় জেনারেটর ছিল, সেটি লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা থাকত। তখন বর্ষাকাল, পানি অনেক। কোনো অসুবিধা ছিল না। যেখানে খুশি জেনারেটর লাগিয়ে নিতাম। লঞ্চে অবশ্য অনেক কষ্ট করে শুটিং ইউনিট থাকত। এফডিসিতে তিন-চার দিন ইনডোর শুটিং হয়েছে। জেলেপাড়ার শুটিং দুই জায়গায় হয়েছে। কিছু আরিচায়, কিছু তিতাসের ঘাটে।
শুটিং, ডাবিং—সব কাজেই ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এডিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন। যাওয়ার সময় এডিটরকে বললেন, ‘এই বাকিটুকু কেটেকুটে ছবিটিকে রিলিজ করে দেবেন।’ বললাম, আর কেউ আপনার ছবিতে হাত দেবে না। লিখে দেন। তিনি এডিটরকে লিখিত পারমিশন দিয়ে গেলেন। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে দু-তিনটি শট অ্যাডজাস্ট করা ছাড়া আর কিছুই করেননি। অনেকে মনে করেন, তিনি এডিট করেননি। সব বাজে কথা। এখন আমরা ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ যেভাবে দেখি, সেটি তাঁরই পরিকল্পনায়, ঋত্বিকেরই হাতে তৈরি।
এ সিনেমায় ঋত্বিক ঘটক আর ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান ছাড়া বাইরের কেউ কাজ করেননি। সবাই বাংলাদেশের। ক্যামেরা, এডিটিং, সাউন্ড—সবই এখানকার। তিতাস একটি কমপ্লিট বাংলাদেশি ফিল্ম। কোনোভাবেই যৌথ প্রযোজনার নয়। তিতাস করতে খরচ হয়েছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। তখন ১ লাখ টাকায় একটি সিনেমা হতো। আমার আট গুণ খরচ হয়েছিল। ফেরত এসেছিল এক লাখ ২৩ হাজার টাকা। আমি এখনো বছরে এক-দুইবার দেখি সিনেমাটি। যত বয়স বাড়ছে, ততই ভিন্নমাত্রায় তিতাস ধরা পড়ছে আমার চোখে।

‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
০৯ জানুয়ারি ২০২৫
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
২০ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
২০ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
লাফিয়ে উঠলাম, আরে করব না মানে! হাসান ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে দেখি, খালি গায়ে, লুঙ্গি পরে একটা চৌকির ওপর বসে আছেন ঋত্বিক ঘটক। বিড়ি খাচ্ছেন। হাসান ভাই বললেন, এই যে ঋত্বিকদা, হায়াতরে নিয়ে আসছি। বলেছিলাম না আপনাকে? এই যে হায়াত। আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, এইডারে কালকে এফডিসিতে লইয়া আহিস। কালকে দেখুমনে।
পরদিন গেলাম এফডিসির এক নম্বর স্টুডিওতে। এক ঘণ্টা পর হন্তদন্ত হয়ে ঋত্বিক বাবু এলেন, ‘হাসান লইয়া আইছে ওই পোলাডা কই?’ আমাকে দেখে মেকআপম্যানকে বললেন, ‘এইডার মাথায় চুলটুল লাগায়া দ্যাহো তো জমিদারের মতো করা যায় কিনা।’ বসে রইলাম। চুল লাগালাম। আবার বসে রইলাম। একসময় তিনি এলেন, উইগ পরা অবস্থায় দেখে আমার থুতনি ধরে এদিক-ওদিক থেকে দেখলেন। হঠাৎ টান দিয়ে উইগটা খুলে দিয়ে বললেন, ‘চুল ছাড়াই ভালো লাগতাসে, পাস।’
আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচাতে। সারা দিন ওয়েট করলাম। সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা। এভাবে তিন দিন গেছি। আমার সিকোয়েন্সের শুটিং হয়নি। আমার তো মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। তাঁকে বললাম, ঋত্বিকদা, আমার বোধ হয় এ সিনেমায় আর অভিনয় করা হবে না। কারণ, আমি আর ছুটি পাব না। ঋত্বিকদা বললেন, আইচ্চা চলো, তোমারটাই কইরা দিব আইজকা। প্রথম দাঁড়ালাম ক্যামেরার সামনে। বেবী ইসলাম ক্যামেরাম্যান। ঋত্বিকদা ডিরেক্টর। আমার কো-অ্যাক্টর হলেন রোজী, খায়ের ভাই আর রানী সরকার।

১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
লাফিয়ে উঠলাম, আরে করব না মানে! হাসান ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে দেখি, খালি গায়ে, লুঙ্গি পরে একটা চৌকির ওপর বসে আছেন ঋত্বিক ঘটক। বিড়ি খাচ্ছেন। হাসান ভাই বললেন, এই যে ঋত্বিকদা, হায়াতরে নিয়ে আসছি। বলেছিলাম না আপনাকে? এই যে হায়াত। আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, এইডারে কালকে এফডিসিতে লইয়া আহিস। কালকে দেখুমনে।
পরদিন গেলাম এফডিসির এক নম্বর স্টুডিওতে। এক ঘণ্টা পর হন্তদন্ত হয়ে ঋত্বিক বাবু এলেন, ‘হাসান লইয়া আইছে ওই পোলাডা কই?’ আমাকে দেখে মেকআপম্যানকে বললেন, ‘এইডার মাথায় চুলটুল লাগায়া দ্যাহো তো জমিদারের মতো করা যায় কিনা।’ বসে রইলাম। চুল লাগালাম। আবার বসে রইলাম। একসময় তিনি এলেন, উইগ পরা অবস্থায় দেখে আমার থুতনি ধরে এদিক-ওদিক থেকে দেখলেন। হঠাৎ টান দিয়ে উইগটা খুলে দিয়ে বললেন, ‘চুল ছাড়াই ভালো লাগতাসে, পাস।’
আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচাতে। সারা দিন ওয়েট করলাম। সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা। এভাবে তিন দিন গেছি। আমার সিকোয়েন্সের শুটিং হয়নি। আমার তো মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। তাঁকে বললাম, ঋত্বিকদা, আমার বোধ হয় এ সিনেমায় আর অভিনয় করা হবে না। কারণ, আমি আর ছুটি পাব না। ঋত্বিকদা বললেন, আইচ্চা চলো, তোমারটাই কইরা দিব আইজকা। প্রথম দাঁড়ালাম ক্যামেরার সামনে। বেবী ইসলাম ক্যামেরাম্যান। ঋত্বিকদা ডিরেক্টর। আমার কো-অ্যাক্টর হলেন রোজী, খায়ের ভাই আর রানী সরকার।

‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব শিল্পী শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর। একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন!
০৯ জানুয়ারি ২০২৫
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
২০ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
২০ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
২১ ঘণ্টা আগে