Ajker Patrika

করোনায় কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যু

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২১, ১৬: ৫৫
করোনায় কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যু

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই।  আজ বুধবার ৮৯ বছর বয়সে সকাল সাড়ে ১১টায় কলকাতার নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়,  গায়ে জ্বর থাকায়, গত সপ্তাহে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন কবি। ১৪ এপ্রিল বিকালে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি, যা শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল তাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, এ বছর জানুয়ারি মাসে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয় তাকে।

কোভিড সংক্রমণ ধরা পরার পর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আচমকা তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়ার চেষ্টাও হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরতরে চলে গেলেন তিনি।

দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে শঙ্খ ঘোষকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরগ্রহণ করেন।

বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় নরেন্দ্র মোদি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের (এনআরসি–সিএএন) বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন তিনি।

শঙ্খ ঘোষের জন্ম বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলায়, ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। বাবা–মা মনীন্দ্রকুমার ঘোষ ও অমলা ঘোষ নাম রেখেছিলেন চিত্তপ্রিয় ঘোষ।  বংশানুক্রমিকভাবে পৈত্রিক বাড়ি বরিশালের বানারিপাড়ায়। তবে শঙ্খ ঘোষ বড় হয়েছেন পাবনায়। বাবার কর্মস্থল হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর পাবনায় থাকেন এবং সেখানকার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।

কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন শঙ্খ ঘোষ। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন তিনি।

পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন শঙ্খ ঘোষ।

জীবদ্দশায় বহু স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেয়েছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘মূর্খ বড়, সামাজিক নয়’ কাব্যগ্রন্থের জন্য নরসিংহ দাস পুরস্কার, একই বছর ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান তিনি।

এছাড়া ১৯৮৯ সালে ‘ধুম লেগেছে হৃদকমলে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’-এর জন্য সরস্বতী পুরস্কার পান। ২০১৬ সালে পান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার।

১৯৯৯ সালে শঙ্খ ঘোষকে বিশ্বভারতী ‘দেশিকোত্তম’ এবং ২০১১ সালে ভারত সরকার ‘পদ্মভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত