মুশফিকুর রিজন, জাবি

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের সূচনা ঘটে ২০২৪ সালের ৫ জুন থেকে। সেদিন সরকারি চাকরির নিয়োগব্যবস্থায় কোটা সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের সরকারপ্রদত্ত একটি সার্কুলারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ অবৈধ ঘোষণা করে। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে এবং ৫৬ শতাংশ কোটা সুবিধা বাতিলের দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটি। ৬ জুনও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়; তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় আন্দোলন সাময়িকভাবে স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং ১ জুলাই ছুটি শেষে পুনরায় আন্দোলনের সূচনা হয়।
জাহাঙ্গীরনগরে প্রতিটি কর্মসূচির শুরু হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে। সেখানেই গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ও ব্যানার নির্ধারিত হতো। একই সঙ্গে আন্দোলন চালাতে ক্রাউড ফান্ডিংও চলত। সারা দেশে যে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে কর্মসূচি চলেছে, তার নাম প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর থেকেই।

এ বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম জানান, ‘আমরা লাইব্রেরির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই কীভাবে আন্দোলন পরিচালিত হবে। ২৯ জুন আমরা একটি সাধারণ সভা করি, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় একটি একক ব্যানারে আন্দোলন পরিচালনা করা হবে। ওই দিনই আমাদের ইন্টারনাল গ্রুপে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ নামটি প্রস্তাব করি এবং পরদিন ৩০ জুন তা পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এরপর ১ জুলাই থেকে সারা দেশে এই ব্যানারে আন্দোলন চলে।’
১ জুলাই থেকে প্রতিদিনই জাহাঙ্গীরনগরে লাগাতার কর্মসূচি চলতে থাকে এবং প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ করে। ৪ জুলাই একটি রায় ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই রায় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গেলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। ওই দিনই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল এবং সদস্যসচিব হন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ। পরে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমন্বয়ক কমিটিও গঠন করা হয়।
৫ জুলাই মানববন্ধনের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ৬ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ৭ জুলাই সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ ডাকা হয়। যদিও কেন্দ্র থেকে বিকেল ৩টায় ব্লকেড শুরুর নির্দেশনা ছিল, জাহাঙ্গীরনগরে সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই এটি শুরু হয়—যা ছিল দেশের প্রথম ব্লকেড কর্মসূচি।
১০ জুলাই পর্যন্ত টানা ব্লকড কর্মসূচি চলে। ১০ জুলাই আপিল বিভাগ কোটার ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন। পরদিন ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীরা। ১২ ও ১৩ জুলাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার বিতর্কিত ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ মন্তব্যের প্রতিবাদে সারা দেশের মত জাবির ক্যাম্পাসেও ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের হামলা ও হল সিসিটিভি না দেখানোর প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে সময় পরিবর্তন করে বিকেল পাঁচটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদেরও মারধর করা হয়। পরে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হন।
এই ঘটনার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জড়ো হন এবং পরে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাননি। এদিকে একই সময় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসে। রাত বারোটার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অগ্রসর হয়। হামলার খবর আগেভাগেই আন্দোলনকারীরা জেনে গেলে তারা উপাচার্যের বাসভবনের মধ্যে আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাসভবন ঘিরে ফেললেও উপাচার্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। রাত দেড়টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

এই সময়কার একটি লাইভ ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে হামলার খবর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করেন। ওই রাতেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রুম ভাঙচুর করেন এবং ১৬ জুলাই প্রথম প্রহরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেন। সারা বাংলাদেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল প্রথম ক্যাম্পাস, যেখান থেকে ছাত্রলীগকে পুরোপুরি বিতাড়িত করা হয়।
১৬ জুলাই সকালে সাভারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা একে একে জাহাঙ্গীরনগরে আসতে থাকেন। সারা দিনজুড়ে ‘জাবি, তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’—স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। সেদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সন্ধ্যায় খবর আসে যে, ছাত্রলীগ আবার হলে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে—এ জন্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে থেকে পাহারা দেন।

১৭ জুলাই সকালে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খালি (ভ্যাকেন্ট) ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় প্রশাসন নিজেদের নিরাপত্তার অজুহাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করায়। সকাল থেকেই পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ছররা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দুই ঘণ্টা পর পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে সরে গিয়ে মূল ফটকে অবস্থান নেয়। এই ঘটনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাতে পুলিশ জোরপূর্বক সকল শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করে।
১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কমে যায়। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যান, আর কিছু শিক্ষার্থী আশপাশের ইসলামনগর, গেরুয়া ও আমবাগান এলাকায় অবস্থান নেন। এদিন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মৌন মিছিল করেন। বিকেলে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে বের করে দেন।
১৯ জুলাইও শিক্ষার্থীরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেন। ২০ জুলাই বিকেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য–২৪ ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় পুরোনো ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে। এরপর শিক্ষার্থীরা কারফিউ ভেঙে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় ‘ঘোড়ার ডিমের কারফিউ, মানি না, মানব না’ স্লোগানে মুখরিত হয় আন্দোলন।
১৮ জুলাই থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন সাধারণ জনতা। তখন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হলে অফলাইনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো। তখন আন্দোলনের সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিব জামান। তিনি জানান, ‘আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে যাওয়ায় স্থানীয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হয়েছে। এ সময় আমার দায়িত্ব ছিল আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আমাদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা। এই কাজে আমাকে সহায়তা করেন আমাদের ক্যাম্পাসের অরিত্র সত্তার এবং তৎকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোসাদ্দেক ভাই। এ ছাড়া স্থানীয় বিএনপির ও জামায়াতের অনেক নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছিল। তাঁদের অনেক নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন।’
২৬ জুলাই রাতে সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ‘সেতু ভবন’ মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘২৪ তারিখের দিকে আমার কাছে একটি মেসেজ আসে; সব সিনিয়র নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় আমাকে পুরো দেশের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হবে এবং ঢাকায় চলে যেতে হবে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আমি আমবাগানের বাসায় যাই। সেখান থেকেই ব্লক রেইড দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয় দিনের রিমান্ড শেষে আবার ছেড়ে দেওয়া হয় এবং এরপর আবার আন্দোলনে যোগ দিই। আমি ৩ আগস্ট মুক্তি পাই এবং সেদিনই ‘এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।’
আরিফ সোহেলের গ্রেপ্তারের পর যাঁদের নেতৃত্বে আন্দোলন চলমান থাকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। তিনি জানান, ‘১৮ জুলাইয়ের পর থেকে একপ্রকার পালিয়ে পালিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। সিম পরিবর্তন করতে হয়েছে, প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভয়ে আমি কয়েক রাত নৌকায় ঘুমিয়েছি। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি।’
২৮ ও ২৯ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণ মিলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ৩০ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে এবং সেদিনের মিছিলেও অনেক বেশি শিক্ষক যোগ দেন।
১ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভিন্নধর্মী প্রতিবাদী গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ১২ জন শিক্ষক যোগ দেন। এদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হলেও দমে যাননি। ওই দিন দুপুরেই নিজের অফিস কক্ষ থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলে প্রতিবাদ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। এ বিষয়ে অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাতে আমার সন্তানের রক্ত, তার ছবি আমার দেয়ালে থাকতে পারে না। সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছে, যার কারণে আমরা আগে তাঁর ছবি টাঙিয়েছিলাম, তিনি আর সেই পদে থাকার যোগ্য নন। তাঁর জন্য তখন সবাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছিল।’
ছবি নামানোর পর কোনো চাপ এসেছিল কি না? এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে তখন শোকজ করা হয়েছিল। কেন ছবি নামিয়েছি, সে বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে অনেক শিক্ষক। অনেকে ফোন করে জানিয়েছে, আমার ছবি কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আমি সেসব নিয়ে ভাবিনি। আমার একমাত্র চিন্তা ছিল—আমার সন্তানসম শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা।’
২, ৩ ও ৪ আগস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। এই আন্দোলনে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সব ধরনের সহায়তা করেছেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির তৎকালীন সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, ‘আমরা সম্ভবপর সব ধরনের তথ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করার চেষ্টা করতাম। একই সঙ্গে আমাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখাও আমাদের দায়িত্ব ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও আমরা অফিসে কল করে সংবাদ পাঠাতাম। আমরা চাইতাম, এই আন্দোলনের ভেতর থেকেও জাহাঙ্গীরনগর যেন অদৃশ্য না হয়ে যায়—সবাই যেন এখানকার কর্মসূচিগুলো সম্পর্কে জানতে পারে। পাশাপাশি আশপাশের মানুষদেরও আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করতাম।’
৫ আগস্টের লং মার্চে অংশ নিতে সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনগণ। বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার মানুষের একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বের হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল কারখানা শ্রমিক ও গার্মেন্টস কর্মী। তবে সাভার এলাকায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আসা শ্রাবণ গাজী নামে এক শিক্ষার্থী শহীদ হন। পুলিশের বাধায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা পৌঁছাতে না পেরে শহীদ শ্রাবণ গাজীর মরদেহ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ধীরে ধীরে বাইরের অংশগ্রহণকারীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। দেশের সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়ে। রাতের বেলায় শিক্ষার্থীরাই একত্র হয়ে ক্যাম্পাস পাহারায় অংশ নেন।
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে ‘গণ–অভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন তথ্য উপদেষ্টা ও বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় যখন আমরা মনোবল ও আশা হারিয়ে ফেলছিলাম, তখন জাহাঙ্গীরনগর আমাদের সাহস জুগিয়েছে।’

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের সূচনা ঘটে ২০২৪ সালের ৫ জুন থেকে। সেদিন সরকারি চাকরির নিয়োগব্যবস্থায় কোটা সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের সরকারপ্রদত্ত একটি সার্কুলারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ অবৈধ ঘোষণা করে। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে এবং ৫৬ শতাংশ কোটা সুবিধা বাতিলের দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটি। ৬ জুনও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়; তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় আন্দোলন সাময়িকভাবে স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং ১ জুলাই ছুটি শেষে পুনরায় আন্দোলনের সূচনা হয়।
জাহাঙ্গীরনগরে প্রতিটি কর্মসূচির শুরু হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে। সেখানেই গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ও ব্যানার নির্ধারিত হতো। একই সঙ্গে আন্দোলন চালাতে ক্রাউড ফান্ডিংও চলত। সারা দেশে যে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে কর্মসূচি চলেছে, তার নাম প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর থেকেই।

এ বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম জানান, ‘আমরা লাইব্রেরির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই কীভাবে আন্দোলন পরিচালিত হবে। ২৯ জুন আমরা একটি সাধারণ সভা করি, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় একটি একক ব্যানারে আন্দোলন পরিচালনা করা হবে। ওই দিনই আমাদের ইন্টারনাল গ্রুপে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ নামটি প্রস্তাব করি এবং পরদিন ৩০ জুন তা পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এরপর ১ জুলাই থেকে সারা দেশে এই ব্যানারে আন্দোলন চলে।’
১ জুলাই থেকে প্রতিদিনই জাহাঙ্গীরনগরে লাগাতার কর্মসূচি চলতে থাকে এবং প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ করে। ৪ জুলাই একটি রায় ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই রায় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গেলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। ওই দিনই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল এবং সদস্যসচিব হন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ। পরে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমন্বয়ক কমিটিও গঠন করা হয়।
৫ জুলাই মানববন্ধনের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ৬ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ৭ জুলাই সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ ডাকা হয়। যদিও কেন্দ্র থেকে বিকেল ৩টায় ব্লকেড শুরুর নির্দেশনা ছিল, জাহাঙ্গীরনগরে সকাল সাড়ে ১১টা থেকেই এটি শুরু হয়—যা ছিল দেশের প্রথম ব্লকেড কর্মসূচি।
১০ জুলাই পর্যন্ত টানা ব্লকড কর্মসূচি চলে। ১০ জুলাই আপিল বিভাগ কোটার ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন। পরদিন ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীরা। ১২ ও ১৩ জুলাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত থাকে। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার বিতর্কিত ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ মন্তব্যের প্রতিবাদে সারা দেশের মত জাবির ক্যাম্পাসেও ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের হামলা ও হল সিসিটিভি না দেখানোর প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে সময় পরিবর্তন করে বিকেল পাঁচটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদেরও মারধর করা হয়। পরে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হন।
এই ঘটনার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জড়ো হন এবং পরে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাননি। এদিকে একই সময় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসে। রাত বারোটার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অগ্রসর হয়। হামলার খবর আগেভাগেই আন্দোলনকারীরা জেনে গেলে তারা উপাচার্যের বাসভবনের মধ্যে আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাসভবন ঘিরে ফেললেও উপাচার্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। রাত দেড়টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

এই সময়কার একটি লাইভ ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে হামলার খবর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করেন। ওই রাতেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রুম ভাঙচুর করেন এবং ১৬ জুলাই প্রথম প্রহরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেন। সারা বাংলাদেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল প্রথম ক্যাম্পাস, যেখান থেকে ছাত্রলীগকে পুরোপুরি বিতাড়িত করা হয়।
১৬ জুলাই সকালে সাভারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা একে একে জাহাঙ্গীরনগরে আসতে থাকেন। সারা দিনজুড়ে ‘জাবি, তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’—স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। সেদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সন্ধ্যায় খবর আসে যে, ছাত্রলীগ আবার হলে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে—এ জন্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে থেকে পাহারা দেন।

১৭ জুলাই সকালে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খালি (ভ্যাকেন্ট) ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় প্রশাসন নিজেদের নিরাপত্তার অজুহাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করায়। সকাল থেকেই পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ছররা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। শিক্ষার্থীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দুই ঘণ্টা পর পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে সরে গিয়ে মূল ফটকে অবস্থান নেয়। এই ঘটনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাতে পুলিশ জোরপূর্বক সকল শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করে।
১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কমে যায়। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যান, আর কিছু শিক্ষার্থী আশপাশের ইসলামনগর, গেরুয়া ও আমবাগান এলাকায় অবস্থান নেন। এদিন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মৌন মিছিল করেন। বিকেলে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে বের করে দেন।
১৯ জুলাইও শিক্ষার্থীরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করেন। ২০ জুলাই বিকেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য–২৪ ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় পুরোনো ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে। এরপর শিক্ষার্থীরা কারফিউ ভেঙে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় ‘ঘোড়ার ডিমের কারফিউ, মানি না, মানব না’ স্লোগানে মুখরিত হয় আন্দোলন।
১৮ জুলাই থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন সাধারণ জনতা। তখন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হলে অফলাইনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো। তখন আন্দোলনের সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিব জামান। তিনি জানান, ‘আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে যাওয়ায় স্থানীয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হয়েছে। এ সময় আমার দায়িত্ব ছিল আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আমাদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা। এই কাজে আমাকে সহায়তা করেন আমাদের ক্যাম্পাসের অরিত্র সত্তার এবং তৎকালীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোসাদ্দেক ভাই। এ ছাড়া স্থানীয় বিএনপির ও জামায়াতের অনেক নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছিল। তাঁদের অনেক নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন।’
২৬ জুলাই রাতে সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ‘সেতু ভবন’ মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘২৪ তারিখের দিকে আমার কাছে একটি মেসেজ আসে; সব সিনিয়র নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় আমাকে পুরো দেশের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হবে এবং ঢাকায় চলে যেতে হবে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আমি আমবাগানের বাসায় যাই। সেখান থেকেই ব্লক রেইড দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয় দিনের রিমান্ড শেষে আবার ছেড়ে দেওয়া হয় এবং এরপর আবার আন্দোলনে যোগ দিই। আমি ৩ আগস্ট মুক্তি পাই এবং সেদিনই ‘এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।’
আরিফ সোহেলের গ্রেপ্তারের পর যাঁদের নেতৃত্বে আন্দোলন চলমান থাকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। তিনি জানান, ‘১৮ জুলাইয়ের পর থেকে একপ্রকার পালিয়ে পালিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। সিম পরিবর্তন করতে হয়েছে, প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভয়ে আমি কয়েক রাত নৌকায় ঘুমিয়েছি। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি।’
২৮ ও ২৯ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণ মিলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ৩০ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে এবং সেদিনের মিছিলেও অনেক বেশি শিক্ষক যোগ দেন।
১ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভিন্নধর্মী প্রতিবাদী গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ১২ জন শিক্ষক যোগ দেন। এদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হলেও দমে যাননি। ওই দিন দুপুরেই নিজের অফিস কক্ষ থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলে প্রতিবাদ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। এ বিষয়ে অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাতে আমার সন্তানের রক্ত, তার ছবি আমার দেয়ালে থাকতে পারে না। সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছে, যার কারণে আমরা আগে তাঁর ছবি টাঙিয়েছিলাম, তিনি আর সেই পদে থাকার যোগ্য নন। তাঁর জন্য তখন সবাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছিল।’
ছবি নামানোর পর কোনো চাপ এসেছিল কি না? এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে তখন শোকজ করা হয়েছিল। কেন ছবি নামিয়েছি, সে বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে অনেক শিক্ষক। অনেকে ফোন করে জানিয়েছে, আমার ছবি কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আমি সেসব নিয়ে ভাবিনি। আমার একমাত্র চিন্তা ছিল—আমার সন্তানসম শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা।’
২, ৩ ও ৪ আগস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। এই আন্দোলনে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সব ধরনের সহায়তা করেছেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির তৎকালীন সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, ‘আমরা সম্ভবপর সব ধরনের তথ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করার চেষ্টা করতাম। একই সঙ্গে আমাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখাও আমাদের দায়িত্ব ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও আমরা অফিসে কল করে সংবাদ পাঠাতাম। আমরা চাইতাম, এই আন্দোলনের ভেতর থেকেও জাহাঙ্গীরনগর যেন অদৃশ্য না হয়ে যায়—সবাই যেন এখানকার কর্মসূচিগুলো সম্পর্কে জানতে পারে। পাশাপাশি আশপাশের মানুষদেরও আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করতাম।’
৫ আগস্টের লং মার্চে অংশ নিতে সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনগণ। বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার মানুষের একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বের হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল কারখানা শ্রমিক ও গার্মেন্টস কর্মী। তবে সাভার এলাকায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আসা শ্রাবণ গাজী নামে এক শিক্ষার্থী শহীদ হন। পুলিশের বাধায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা পৌঁছাতে না পেরে শহীদ শ্রাবণ গাজীর মরদেহ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর ধীরে ধীরে বাইরের অংশগ্রহণকারীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। দেশের সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়ে। রাতের বেলায় শিক্ষার্থীরাই একত্র হয়ে ক্যাম্পাস পাহারায় অংশ নেন।
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে ‘গণ–অভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন তথ্য উপদেষ্টা ও বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় যখন আমরা মনোবল ও আশা হারিয়ে ফেলছিলাম, তখন জাহাঙ্গীরনগর আমাদের সাহস জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম।
১ দিন আগে
আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’।
১ দিন আগেমো. আশিকুর রহমান

বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
ক্যাডেট কলেজগুলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল শাখার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব, ক্রীড়া ও নৈতিকতা চর্চার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।
বর্তমানে দেশে মোট ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে। ছেলেদের জন্য ৯টি: ফৌজদারহাট (চট্টগ্রাম), ঝিনাইদহ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল), রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশাল, পাবনা ও কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ। মেয়েদের জন্য ৩টি: ময়মনসিংহ, ফেনী ও জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ।
অনলাইনে আবেদন যেভাবে
অনলাইনে আবেদন করতে হবে নিচের যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সত্যায়িত সনদ (ইংরেজি মাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)।
২. জন্মসনদের সত্যায়িত ফটোকপি।
৩. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের
৪. মা-বাবা বা অভিভাবকের মাসিক আয়ের প্রত্যয়নপত্র।
৫. মা ও বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি ধাপ তারিখ ও সময়
আবেদন শুরু ১ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ৮টা
আবেদন শেষ ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকেল ৫টা
প্রবেশপত্র সংগ্রহ ১১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা–বেলা ১টা
ভর্তি পরীক্ষা হবে যেমন
ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ শ্রেণির সিলেবাসের আলোকে, মোট ৩০০ নম্বরের রচনামূলক পদ্ধতিতে।
বিষয় নম্বর
ইংরেজি ১০০
গণিত ১০০
বাংলা ৬০
সাধারণ জ্ঞান ৪০
পরীক্ষার বিষয়বস্তু সংক্ষেপে
আবেদনকারীর যোগ্যতা
যারা আবেদন করতে পারবে না
যেসব প্রার্থী আগে ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত, মৌখিক বা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে, তারা পুনরায় আবেদন করতে পারবে না। এ ছাড়া নিম্নোক্ত অবস্থায় আবেদন অগ্রহণযোগ্য হবে—গ্রস নকনী, ফ্ল্যাট ফুট, কালার ব্লাইন্ড, অতিরিক্ত ওজন, অ্যাজমা, মৃগী, হৃদ্রোগ, বাত, যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস, রাতকানা, ডায়াবেটিস, হেমোফিলিয়া, কিংবা বিছানায় প্রস্রাবের অভ্যাস থাকলে।
তথ্যসূত্র: ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৬

বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
ক্যাডেট কলেজগুলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল শাখার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব, ক্রীড়া ও নৈতিকতা চর্চার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।
বর্তমানে দেশে মোট ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে। ছেলেদের জন্য ৯টি: ফৌজদারহাট (চট্টগ্রাম), ঝিনাইদহ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল), রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশাল, পাবনা ও কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ। মেয়েদের জন্য ৩টি: ময়মনসিংহ, ফেনী ও জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ।
অনলাইনে আবেদন যেভাবে
অনলাইনে আবেদন করতে হবে নিচের যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সত্যায়িত সনদ (ইংরেজি মাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)।
২. জন্মসনদের সত্যায়িত ফটোকপি।
৩. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের
৪. মা-বাবা বা অভিভাবকের মাসিক আয়ের প্রত্যয়নপত্র।
৫. মা ও বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি ধাপ তারিখ ও সময়
আবেদন শুরু ১ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ৮টা
আবেদন শেষ ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকেল ৫টা
প্রবেশপত্র সংগ্রহ ১১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা–বেলা ১টা
ভর্তি পরীক্ষা হবে যেমন
ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ শ্রেণির সিলেবাসের আলোকে, মোট ৩০০ নম্বরের রচনামূলক পদ্ধতিতে।
বিষয় নম্বর
ইংরেজি ১০০
গণিত ১০০
বাংলা ৬০
সাধারণ জ্ঞান ৪০
পরীক্ষার বিষয়বস্তু সংক্ষেপে
আবেদনকারীর যোগ্যতা
যারা আবেদন করতে পারবে না
যেসব প্রার্থী আগে ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত, মৌখিক বা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে, তারা পুনরায় আবেদন করতে পারবে না। এ ছাড়া নিম্নোক্ত অবস্থায় আবেদন অগ্রহণযোগ্য হবে—গ্রস নকনী, ফ্ল্যাট ফুট, কালার ব্লাইন্ড, অতিরিক্ত ওজন, অ্যাজমা, মৃগী, হৃদ্রোগ, বাত, যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস, রাতকানা, ডায়াবেটিস, হেমোফিলিয়া, কিংবা বিছানায় প্রস্রাবের অভ্যাস থাকলে।
তথ্যসূত্র: ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৬

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন
২৭ জুলাই ২০২৫
বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম।
১ দিন আগে
আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না (ইউএসটিসি) এবং ইউনিভার্সিটি অব চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (ইউসিএএস) থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
সুযোগ-সুবিধা
চীনের বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের পুরো কোর্সেরও টিউশন নেই। শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা। স্নাতকোত্তরের জন্য প্রতি মাসে থাকছে ৩ হাজার ইউয়ান আর পিএইচডির জন্য ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার ইউয়ান। থাকছে বিমানভাড়া ও সম্পূর্ণ মেডিকেল ইনস্যুরেন্স সুবিধা। বৃত্তিটির আওতায় তরুণেরা বিশ্বমানের গবেষণা পরিবেশে নিজের দক্ষতা গড়ে তুলতে পারবেন। যাঁরা চীনে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের জন্য এএনএসও স্কলারশিপ হতে পারে এক অনন্য সুযোগ।
আবেদনের যোগ্যতা
এএনএসও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, আবেদনকারী অবশ্যই চীনের নাগরিক নন, এমন প্রার্থী হতে হবে। স্নাতকোত্তর ডিগ্রির ক্ষেত্রে প্রার্থীর জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৬ বা তার পরে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীর জন্ম হতে হবে ১ জানুয়ারি ১৯৯১ বা তার পরে। প্রার্থীদের ইংরেজি বা চীনা ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে।
বৃত্তির সংখ্যা
প্রতিবছর ২০০টি স্নাতকোত্তর ও ৩০০টি পিএইচডি বৃত্তি দেওয়া হয়।
আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্য
এএনএসও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও প্রস্তুত রাখতে হবে। এগুলো হলো পাসপোর্টের কপি, হালনাগাদ করা সিভি, গবেষণা অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, দুটি সুপারিশপত্র, গবেষণা প্রস্তাবনা, ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র ও শারীরিক সুস্থতার সনদ। স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে স্নাতকের সনদ ও পিএইচডি ডিগ্রির জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: ৩১ জানুয়ারি, ২০২৬।

বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না (ইউএসটিসি) এবং ইউনিভার্সিটি অব চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (ইউসিএএস) থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
সুযোগ-সুবিধা
চীনের বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের পুরো কোর্সেরও টিউশন নেই। শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা। স্নাতকোত্তরের জন্য প্রতি মাসে থাকছে ৩ হাজার ইউয়ান আর পিএইচডির জন্য ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার ইউয়ান। থাকছে বিমানভাড়া ও সম্পূর্ণ মেডিকেল ইনস্যুরেন্স সুবিধা। বৃত্তিটির আওতায় তরুণেরা বিশ্বমানের গবেষণা পরিবেশে নিজের দক্ষতা গড়ে তুলতে পারবেন। যাঁরা চীনে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের জন্য এএনএসও স্কলারশিপ হতে পারে এক অনন্য সুযোগ।
আবেদনের যোগ্যতা
এএনএসও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, আবেদনকারী অবশ্যই চীনের নাগরিক নন, এমন প্রার্থী হতে হবে। স্নাতকোত্তর ডিগ্রির ক্ষেত্রে প্রার্থীর জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৬ বা তার পরে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীর জন্ম হতে হবে ১ জানুয়ারি ১৯৯১ বা তার পরে। প্রার্থীদের ইংরেজি বা চীনা ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে।
বৃত্তির সংখ্যা
প্রতিবছর ২০০টি স্নাতকোত্তর ও ৩০০টি পিএইচডি বৃত্তি দেওয়া হয়।
আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্য
এএনএসও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও প্রস্তুত রাখতে হবে। এগুলো হলো পাসপোর্টের কপি, হালনাগাদ করা সিভি, গবেষণা অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, দুটি সুপারিশপত্র, গবেষণা প্রস্তাবনা, ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র ও শারীরিক সুস্থতার সনদ। স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে স্নাতকের সনদ ও পিএইচডি ডিগ্রির জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: ৩১ জানুয়ারি, ২০২৬।

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন
২৭ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
৩ ঘণ্টা আগে
বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম।
১ দিন আগে
আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম। ঠিক এমনই ভিন্নধর্মী এক আড্ডার আয়োজন করেছে পাঠকবন্ধু আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয় (আরপিএসইউ) শাখা। এটি ছিল পাঠকবন্ধুর দ্বিতীয় পর্বের প্রাণবন্ত ‘ক্যাম্পাস আড্ডা’, যেখানে হাসি, গল্প ও সৃজনশীলতায় মিলিত হয়েছে এক মধুর মিলনক্ষেত্র।
২৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার তীরঘেঁষা সবুজ ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে বসে এই প্রাণবন্ত আড্ডা। এতে শিক্ষার্থীরা অংশ নেন কুইজ প্রতিযোগিতা, রম্য বিতর্ক, মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা এবং সুরের তালে তালে গান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করেন আরপিএসইউ পাঠকবন্ধু শাখার সদস্যরা। পরে নুসরাত আহমেদ কণার সঞ্চালনায় শুরু হয় আড্ডার আলোচনা। শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়। পাশাপাশি বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান, আজকের পত্রিকার পক্ষে হেড অব ডিজিটাল অ্যাড সেলস মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন, পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী মো. আব্দুর রাজ্জাক খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন এবং পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা।

ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটি সুন্দর পৃথিবী আমরা গড়ে তুলতে চাইলে শুধু পরিবেশ সুন্দর করাই যথেষ্ট নয়। প্রথমে আমাদের মনের ভেতরটি পরিষ্কার ও সুন্দর করতে হবে। প্রতিটি ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত রাখতে হবে। তখন শরীর-মন সুস্থ থাকবে, রোগ-বালাই কমবে। মানবিকতা গড়ে তোলা, সুন্দরভাবে বাঁচা—এই প্রত্যয় আমাদের রাখতে হবে।’
প্রযুক্তির এই যুগে আমরা ধীরে ধীরে বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তবে পাঠকবন্ধু চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীদের বইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে এবং তাদের পাঠাভ্যাস বাড়িয়ে তুলতে। এ ছাড়া ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের বাইরে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখেছে। সেই অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরা—এটিই আজকের ক্যাম্পাস আড্ডার মূল উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেন মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন।

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘আমরা এমন এক আড্ডার আয়োজন করেছি, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্রে বসে তাদের অভিজ্ঞতা, স্মৃতিচারণা ও স্বপ্নগুলো ভাগাভাগি করবেন। অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারব।’
মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন বলেন, ‘আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বৈচিত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমরা সামাজিক বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হই এবং একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও আন্তসম্পর্ক গড়ে তুলি।’

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পাঠকবন্ধুর ক্যাম্পাস আড্ডা একটি অনন্য মঞ্চ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠপ্রেমীরা একত্র হয়ে জ্ঞান, চিন্তা ও মানবিকতার সুন্দর বন্ধনে মিলিত হন। পাঠ শুধুই বিদ্বান বানায় না, মানুষও গড়ে তোলে।’
আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় রম্য বিতর্ক ‘পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন নয়, শিক্ষার্থীর কল্পনাশক্তিই ভয়ংকর!’। এতে অংশ নেন তামান্না আক্তার, আফরিন আক্তার, জাকিয়া সুলতানা ও এশা ইসলাম। প্রথম স্থান অধিকার করেন জাকিয়া সুলতানা।

এরপর শুরু হয় মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা, যেখানে মিউজিকের তালে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করেন খেলার আনন্দ। প্রথম হন মেহেরুনেছা মেরি। এরপর মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আরপিএসইউ কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের আগের দিন অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রথম স্থান অধিকার করেন নাদিয়া আক্তার।
পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সাফল্যের মুখ দেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপস্থিত থেকে তরুণদের এই সৃষ্টিশীল উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সাবরিন সুলতানা উর্বরা জানান, আরপিএসইউ ক্যাম্পাসে এক অনন্য বিকেল কাটল পাঠপ্রেমী তরুণদের সঙ্গে। বই শুধুই পড়ার বস্তু নয়, এটি একটি সেতুবন্ধন, যা মানুষকে মানুষে যুক্ত করে, ভাবনায় গভীরতা আনে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে।’
অনুষ্ঠান শেষে পাঠকবন্ধুর অতিথি ও সদস্যরা পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। হাসি, গল্প আর গানে গানে এক আনন্দঘন দিন কাটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠকবন্ধুদের।

বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম। ঠিক এমনই ভিন্নধর্মী এক আড্ডার আয়োজন করেছে পাঠকবন্ধু আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয় (আরপিএসইউ) শাখা। এটি ছিল পাঠকবন্ধুর দ্বিতীয় পর্বের প্রাণবন্ত ‘ক্যাম্পাস আড্ডা’, যেখানে হাসি, গল্প ও সৃজনশীলতায় মিলিত হয়েছে এক মধুর মিলনক্ষেত্র।
২৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার তীরঘেঁষা সবুজ ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে বসে এই প্রাণবন্ত আড্ডা। এতে শিক্ষার্থীরা অংশ নেন কুইজ প্রতিযোগিতা, রম্য বিতর্ক, মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা এবং সুরের তালে তালে গান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করেন আরপিএসইউ পাঠকবন্ধু শাখার সদস্যরা। পরে নুসরাত আহমেদ কণার সঞ্চালনায় শুরু হয় আড্ডার আলোচনা। শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়। পাশাপাশি বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান, আজকের পত্রিকার পক্ষে হেড অব ডিজিটাল অ্যাড সেলস মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন, পাঠকবন্ধুর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী মো. আব্দুর রাজ্জাক খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন এবং পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা।

ছাত্র উপদেষ্টা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটি সুন্দর পৃথিবী আমরা গড়ে তুলতে চাইলে শুধু পরিবেশ সুন্দর করাই যথেষ্ট নয়। প্রথমে আমাদের মনের ভেতরটি পরিষ্কার ও সুন্দর করতে হবে। প্রতিটি ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত রাখতে হবে। তখন শরীর-মন সুস্থ থাকবে, রোগ-বালাই কমবে। মানবিকতা গড়ে তোলা, সুন্দরভাবে বাঁচা—এই প্রত্যয় আমাদের রাখতে হবে।’
প্রযুক্তির এই যুগে আমরা ধীরে ধীরে বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তবে পাঠকবন্ধু চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীদের বইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে এবং তাদের পাঠাভ্যাস বাড়িয়ে তুলতে। এ ছাড়া ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের বাইরে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখেছে। সেই অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরা—এটিই আজকের ক্যাম্পাস আড্ডার মূল উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেন মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন।

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘আমরা এমন এক আড্ডার আয়োজন করেছি, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্রে বসে তাদের অভিজ্ঞতা, স্মৃতিচারণা ও স্বপ্নগুলো ভাগাভাগি করবেন। অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারব।’
মো. তাহমিদ আল মাহবুব খান এলিন বলেন, ‘আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বৈচিত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমরা সামাজিক বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হই এবং একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও আন্তসম্পর্ক গড়ে তুলি।’

পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পাঠকবন্ধুর ক্যাম্পাস আড্ডা একটি অনন্য মঞ্চ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠপ্রেমীরা একত্র হয়ে জ্ঞান, চিন্তা ও মানবিকতার সুন্দর বন্ধনে মিলিত হন। পাঠ শুধুই বিদ্বান বানায় না, মানুষও গড়ে তোলে।’
আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় রম্য বিতর্ক ‘পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন নয়, শিক্ষার্থীর কল্পনাশক্তিই ভয়ংকর!’। এতে অংশ নেন তামান্না আক্তার, আফরিন আক্তার, জাকিয়া সুলতানা ও এশা ইসলাম। প্রথম স্থান অধিকার করেন জাকিয়া সুলতানা।

এরপর শুরু হয় মজার ‘পিলো পাসিং’ খেলা, যেখানে মিউজিকের তালে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করেন খেলার আনন্দ। প্রথম হন মেহেরুনেছা মেরি। এরপর মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আরপিএসইউ কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা। অনুষ্ঠানের আগের দিন অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রথম স্থান অধিকার করেন নাদিয়া আক্তার।
পাঠকবন্ধু আরপিএসইউ শাখার সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সাফল্যের মুখ দেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপস্থিত থেকে তরুণদের এই সৃষ্টিশীল উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সাবরিন সুলতানা উর্বরা জানান, আরপিএসইউ ক্যাম্পাসে এক অনন্য বিকেল কাটল পাঠপ্রেমী তরুণদের সঙ্গে। বই শুধুই পড়ার বস্তু নয়, এটি একটি সেতুবন্ধন, যা মানুষকে মানুষে যুক্ত করে, ভাবনায় গভীরতা আনে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে।’
অনুষ্ঠান শেষে পাঠকবন্ধুর অতিথি ও সদস্যরা পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। হাসি, গল্প আর গানে গানে এক আনন্দঘন দিন কাটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পাঠকবন্ধুদের।

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন
২৭ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’।
১ দিন আগেঅধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়

আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’। এর সঙ্গে যোগ করতে চাই ‘মোবাইল ডিমোরালাইজড’। যদিও এই উক্তি নিয়ে বিতর্ক আছে, তবু সত্যি হলো, মোবাইল জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর অপব্যবহার ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।
আজকাল ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময়ও হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক পরিবারের তিনজন সদস্য একসঙ্গে বসলেও প্রত্যেকে ব্যস্ত নিজের মোবাইলের মধ্যে, কথাবার্তা প্রায় নেই। অথচ মোবাইলের মধ্যে রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। এটি দিয়ে তুমি প্রজেক্ট, থিসিস বা যেকোনো একাডেমিক গবেষণা করতে পারো। আমাদের সময়ে এই ধরনের সুযোগ ছিল না। এখন ইন্টারনেট তোমার হাতের মুঠোয়। জ্ঞান আহরণ করতে চাইলে তুমি পুরো বিশ্ব জয় করতে পারো। মনে রাখতে হবে, মোবাইলের দুটি দিক আছে—একটি সুফল, অন্যটি কুফল। সুফল কাজে লাগাতে হবে। নেতিবাচক ব্যবহার আমাদের যুবসমাজে বিভিন্ন আসক্তি, হতাশা এবং দুঃখজনক আত্মহত্যার মতো প্রবণতা তৈরি করছে। তাই তোমরা মোবাইল ব্যবহার করবে এর ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে।
জীবনে সব সময় ইতিবাচক থাকতে হবে। আমি নিজে খারাপ থাকলেও বলি, ‘আমি খুব ভালো আছি’। এই মানসিক ইতিবাচকতা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর স্বপ্ন থাকতে হবে—স্বপ্ন ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন সেটা নয়, যা আমরা ঘুমিয়ে দেখি; স্বপ্ন সেটাই, যা আমাদের ঘুমাতে দেয় না।’
তোমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ ‘আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়’, এর প্রতিষ্ঠাতা আর পি সাহাও ছিলেন একজন মহান স্বপ্নদ্রষ্টা। মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারিয়ে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ‘আমি যদি কখনো সম্পদশালী হই, তাহলে একটি মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ে তুলব, যেন কোনো মা বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়।’ ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করা, দারিদ্র্যপীড়িত সেই মানুষটি ফুটপাতে ঘুমিয়েছে, সংবাদপত্র বিক্রি করেছে, গাড়ি মুছেছে। কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমে মাত্র ছয় বছরে তিনি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেন। কয়লা, জুট, চামড়া, লবণ, নৌপরিবহন—সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।
তবে সেই সম্পদ নিজের জন্য নয়, তিনি উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের কল্যাণে। প্রতিষ্ঠা করেছেন কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী কলেজ, দেবেন্দ্র কলেজ—সবই মানবতার সেবায় নিবেদিত।
তোমাদেরও তাই স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজের ভেতরে ইতিবাচক শক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং সমাজ পরিবর্তনে এগিয়ে আসতে হবে।
অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়, উপাচার্য, আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়

আড্ডা এখন অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের হাতে থাকা ছোট্ট একটি যন্ত্র—মোবাইল ফোনসেট। এই যন্ত্র আমাদের একে-অপরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বলি ‘রেস ডিসকানেকটেড আস, রিলিজিয়ন সেপারেট আস, পলিটিকস ডিভাইড আস, ওয়েলথ ক্ল্যাসিফাই আস’। এর সঙ্গে যোগ করতে চাই ‘মোবাইল ডিমোরালাইজড’। যদিও এই উক্তি নিয়ে বিতর্ক আছে, তবু সত্যি হলো, মোবাইল জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর অপব্যবহার ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।
আজকাল ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময়ও হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক পরিবারের তিনজন সদস্য একসঙ্গে বসলেও প্রত্যেকে ব্যস্ত নিজের মোবাইলের মধ্যে, কথাবার্তা প্রায় নেই। অথচ মোবাইলের মধ্যে রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। এটি দিয়ে তুমি প্রজেক্ট, থিসিস বা যেকোনো একাডেমিক গবেষণা করতে পারো। আমাদের সময়ে এই ধরনের সুযোগ ছিল না। এখন ইন্টারনেট তোমার হাতের মুঠোয়। জ্ঞান আহরণ করতে চাইলে তুমি পুরো বিশ্ব জয় করতে পারো। মনে রাখতে হবে, মোবাইলের দুটি দিক আছে—একটি সুফল, অন্যটি কুফল। সুফল কাজে লাগাতে হবে। নেতিবাচক ব্যবহার আমাদের যুবসমাজে বিভিন্ন আসক্তি, হতাশা এবং দুঃখজনক আত্মহত্যার মতো প্রবণতা তৈরি করছে। তাই তোমরা মোবাইল ব্যবহার করবে এর ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে।
জীবনে সব সময় ইতিবাচক থাকতে হবে। আমি নিজে খারাপ থাকলেও বলি, ‘আমি খুব ভালো আছি’। এই মানসিক ইতিবাচকতা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর স্বপ্ন থাকতে হবে—স্বপ্ন ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন সেটা নয়, যা আমরা ঘুমিয়ে দেখি; স্বপ্ন সেটাই, যা আমাদের ঘুমাতে দেয় না।’
তোমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ ‘আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়’, এর প্রতিষ্ঠাতা আর পি সাহাও ছিলেন একজন মহান স্বপ্নদ্রষ্টা। মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারিয়ে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ‘আমি যদি কখনো সম্পদশালী হই, তাহলে একটি মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ে তুলব, যেন কোনো মা বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়।’ ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করা, দারিদ্র্যপীড়িত সেই মানুষটি ফুটপাতে ঘুমিয়েছে, সংবাদপত্র বিক্রি করেছে, গাড়ি মুছেছে। কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমে মাত্র ছয় বছরে তিনি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেন। কয়লা, জুট, চামড়া, লবণ, নৌপরিবহন—সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।
তবে সেই সম্পদ নিজের জন্য নয়, তিনি উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের কল্যাণে। প্রতিষ্ঠা করেছেন কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী কলেজ, দেবেন্দ্র কলেজ—সবই মানবতার সেবায় নিবেদিত।
তোমাদেরও তাই স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজের ভেতরে ইতিবাচক শক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং সমাজ পরিবর্তনে এগিয়ে আসতে হবে।
অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায়, উপাচার্য, আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা ২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন
২৭ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ৮টা থেকে, চলবে ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য উন্মুক্ত হলো চীনের অ্যালায়েন্স অব ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অর্গানাইজেশনস (এএনএসও) বৃত্তি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বন্ধুদের সঙ্গে সবাই কমবেশি আড্ডা দিই। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় যদি যোগ দেন শিক্ষকেরা, ভাগাভাগি করেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প, আর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পান অনুপ্রেরণা, তখন সেই আড্ডা হয়ে ওঠে সত্যিই ব্যতিক্রম।
১ দিন আগে