Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে

শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে

প্রশ্ন: উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পাঁচ মাস হলো। এই অল্প সময়ে নিজের কাজের মূল্যায়ন কীভাবে করবেন?
উত্তর: আমার মনে হয়, মূল্যায়ন শিক্ষকেরা করবেন, আমি না। কী কী কাজ করেছি, কোথাও সীমাবদ্ধতা আছে কি না, এসবের মূল্যায়ন হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম একদম স্থবির ছিল। শুধু শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। এই স্থির অবস্থাকে ভাঙতে অনেক সময় লেগেছে। অর্থাৎ সবকিছু গুছিয়ে আনা। এ পর্যন্ত ২৭টি বোর্ড করে ফেলেছি। শিক্ষকদের পদোন্নতি হয়েছে, নারীদের হলের নামে ভুল ছিল, সেটা ঠিক করা হচ্ছে।

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাড়াতে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কী?
উত্তর: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাপকাঠি হলো গবেষণা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গবেষণা সেল রয়েছে, সেটা কার্যকর করেছি। এ মাসে চারটা ওয়ার্কশপ রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও যাতে গবেষণা করতে পারে, সেই পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। গবেষণায় প্রশিক্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎসাহিত করা এবং আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক আছেন আন্তর্জাতিক মানের। শিক্ষকদের জার্নাল প্রকাশিত হলে এক্সট্রা সম্মানী দেওয়ার ব্যবস্থা করা, আন্তর্জাতিক কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করার পরিকল্পনা আছে। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের পরিচালক নিয়োগ দিয়েছি। এ পদ আইনে ছিল। কেউ এত দিন নিয়োগ দেননি।

প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে?
উত্তর: ইউজিসির শিক্ষার্থী বৃত্তি, সেটাও হয়ে যাচ্ছে। আমি চিন্তা করছি, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে যে আয়টা হয়, শিক্ষকেরা যে সম্মানীটা পাচ্ছেন, সেখান থেকে ছোট একটা অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা একটি বৃত্তির ব্যবস্থা করার।

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিকায়ন নিয়ে কী ভাবছেন?
উত্তর: এত অল্প পরিসরে, ভবনগুলোও পুরোনো, এসি নেই, ক্লাসরুমগুলো ছোট। শিক্ষার্থীদের তুলনায় এত সীমিত সম্পদ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় যে এত দূর এগিয়েছে, সেটি আমাকে অবাক করে। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে যে বাজেট বাড়ানো হয়, পাশাপাশি আমরা যদি কিছু বাজেট জেনারেট করতে পারি, তাহলে স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। তা ছাড়া আইসিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-সংক্রান্ত যেসব বিভাগ দরকার, সেসব বিভাগ খোলার চিন্তাভাবনা করছি।

প্রশ্ন: উপ-উপাচার্যের বিধান তৈরি করা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
উত্তর: এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে অনেক পরিবর্তন দরকার। উপ-উপাচার্যের খুবই প্রয়োজন। তবে যেটা বেশি দরকার, তা হলো আইনের পরিবর্তন। এখানে একজন সহযোগী অধ্যাপক ডিন হতে পারেন, কিন্তু চেয়ারম্যান হতে পারেন না। ফলে একজন শিক্ষক দীর্ঘদিন চেয়ারে থাকছেন। এ কারণে শিক্ষকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। অনেক শিক্ষক চাচ্ছেন দায়িত্বে আসতে। উপাচার্য বদলাচ্ছে কিন্তু চেয়ারম্যান বদলাচ্ছে না। এই আইন পরিবর্তন হলে উপ-উপাচার্যও আসতে পারে, চেয়ারম্যান, ডিনের নিয়মটাও পাল্টাবে। 

প্রশ্ন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের সর্বশেষ অবস্থা কী?
উত্তর: কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ এগিয়ে চলছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে, সীমানাপ্রাচীরের কাজ চলছে। এ মুহূর্তে বালু ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে।

প্রশ্ন: প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুবিধা নেই। এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে? 
উত্তর: এখানে তো আমার চিন্তাভাবনা নেই, চিন্তাভাবনা কেরানীগঞ্জ ক্যাম্পাস নিয়ে। 

প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নিয়ে কিছু ভেবেছেন কি?
উত্তর: আমি আগেও বলেছি, এখানে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমেই নির্বাচনের বিষয়টি আসতে পারে, তার আগে নয়। 

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে?
উত্তর: এখানে অনেক কর্মকর্তা। ২০ হাজার শিক্ষার্থী, ৭০০ শিক্ষক, ৬০০ কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের অনুপাত অনেক। এখানে শূন্য পদের বিপরীতে একজনের জায়গায় পাঁচজন নেওয়া হয়েছে। ফলে অনেককে স্থায়ী করা যাচ্ছে না। 
শূন্য পদের বিপরীতে যে শিক্ষকেরা এসেছেন, যাঁদের বিভাগে কোনো পদ নেই, তাঁদের বিষয়েও আমি নিজে ইউজিসিতে কথা বলেছি। তাঁরা 
সদয় হয়েছেন। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারী ডেইলি বেসিসে আছেন প্রায় ৩৫০ জন। তাঁদের তো স্থায়ী করার জন্য আমার কোনো পদ নেই। আরেকটি বিষয়, শিক্ষকদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের একটি অনুপাত করা প্রয়োজন। এত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে আগের প্রশাসকদের দূরদর্শী হওয়া প্রয়োজন ছিল। 

প্রশ্ন: নিরাপদ ক্যাম্পাস নিয়ে আপনার কী পরিকল্পনা?
উত্তর: পুরান ঢাকার কমিউনিটি অসম্ভব ভালো। তারা অনেক বিষয়ে সহযোগিতা করে। তবে আমাদের ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে কিছু শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাচারিতা করছে, এমন খবর এসেছে। প্রক্টরিয়াল টিমও আমাকে অবহিত করেছে। ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটল। সেটা অবশ্য আমি প্রক্টরিয়াল টিমকে বলেছি তাদের নাম নোট নেওয়ার জন্য। তাদের নিয়ে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
উত্তর: শিক্ষার্থীরাই তো প্রাণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আবাসিক জায়গা নেই, ভালো জায়গা নেই, যেখানে তারা একটু বিশ্রাম নিতে পারে। এত কষ্ট করে তারা। শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে বলা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই। ক্যাম্পাসের উন্নয়নটা অনেকের মাধ্যমে হচ্ছে, এটি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। সে প্রক্রিয়ার জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

সাদেকা হালিম, উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

জবি প্রতিনিধি 
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমাদের এ নতুন বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।’ আজ ‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ‎

‎জবি উপাচার্য বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু ৫৪ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, যার মূল্য দিতে হয়েছে ২৪-এর জুলাই–আগস্টে বহু ছাত্র–জনতাকে।’ ‎

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ এবং বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। বাংলাদেশ একটু একটু করে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‎

‎এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এর ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।

এআইইউবির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু মিয়া আকন্দ তুহিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিনের সম্মতিক্রমে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন ৩ জন; সুম্মা কাম লাউড পেয়েছেন ৪৩ জন; ম্যাগনা কাম লাউড পেয়েছেন ৭৪ জন; কাম লাউড পেয়েছেন ২৬ জন; ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক পেয়েছেন ১৯ জন এবং ভাইস-চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন ২১ জন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান।

সমাবর্তনের প্রধান অতিথি ড. আবেদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব বর্তমানে এক বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকট হলো ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার সমন্বয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ঝুঁকি পরিমাপ এবং সম্ভাবনা বিবেচনায় দেখা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সেই শিক্ষা প্রতিফলিত হয়। সংকট শনাক্ত এবং অতিক্রম করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের এবং সংকটের বাইরে এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্যই দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ আপনারাই।’

স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তটি কেবল একটি সমাবর্তন নয়; এটি আপনার বহু বছরের পরিশ্রমের স্বীকৃতি। পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের চাপ, নির্ঘুম রাত, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অটল থাকা, অভিভাবকদের কষ্টার্জিত টিউশন ফি আর আপনার নিজের নিষ্ঠা ও ত্যাগ, সবকিছুরই সম্মিলিত স্বীকৃতি এটি।’

স্বাগত বক্তব্যে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘যখন আমি আপনাদের দিকে তাকাই, তখন শত শত গল্প ভেসে ওঠে। নীরবে লড়ে যাওয়া সংগ্রামের গল্প, হৃদয়ের গভীরে লালিত স্বপ্নের গল্প। সংশয়ে ভরা অসংখ্য রাত পেরিয়ে নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠা সকালের গল্প। আপনারা এই মুহূর্তে পৌঁছেছেন কোনো কাকতালীয়তায় নয়; পৌঁছেছেন নিজের শক্তি, আশার আলো এবং ভবিষ্যতের প্রতি অটল অঙ্গীকারের পথ ধরে।’

অভিভাবকদের উদ্দেশে নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা—এসব শুধু শব্দ নয়; এগুলো আমাদের অন্তরের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। আপনারা নীরবে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, হয়তো নিজের স্বপ্ন পিছিয়ে দিয়েছেন, হয়তো নিজের ইচ্ছাগুলো সংযত রেখেছেন, সেই ত্যাগই আজকের এই সাফল্যের প্রকৃত ভিত্তি।’

সমাবর্তন বক্তা ব্রাসেলসের আইআরইজি অবজারভেটরি অন একাডেমিক র‍্যাংকিং অ্যান্ড এক্সিলেন্সের এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার অধ্যাপক ড. হাবিব ফারদৌন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এআইইউবি’র মূলমন্ত্র ‘হোয়্যার লিডারস আর ক্রিয়েটেড’ কেবল একটি বাক্য নয়; এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যেকোনো র‍্যাংকিংয়ের চেয়েও বড় বিষয় হলো, বিশ্ব আপনাকে চিনে নেওয়ার আগেই এআইইউবি আপনার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেছে। আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো শিখতে থাকা, আবার নতুনভাবে শিখতে পারা। এই চলমান শিক্ষণ-প্রক্রিয়ায় একজন কৌতূহলী মানুষ সেখানে সেতু নির্মাণ করেন, যেখানে অন্যরা কেবল দেয়াল দেখতে পান। ভবিষ্যৎ হবে তাদেরই, যারা এই সেতুগুলো গড়ে তুলতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এআইইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি এই স্তরে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছেন। তবে এখনো আপনাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে এবং জীবনে সফল হতে আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হবে। মনে রাখবেন, এটি কোনো শেষ নয়, বরং সম্ভাবনাময় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুরু।’

গ্র্যাজুয়েট, অভিভাবক ও সম্মানিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এআইইউবি’র উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘এআইইউবি’র পক্ষ থেকে আমরা সকল গ্রাজুয়েট, অভিভাবক ও অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনাদের উপস্থিতি আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা ও গৌরব যুক্ত করেছে।’

অনুষ্ঠানে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা, আমন্ত্রিত অতিথিরা, এআইইউবির কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, ডিন, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থীদের বিজয় দিবসের ভাবনা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
শিক্ষার্থীদের বিজয় দিবসের ভাবনা

১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে লাখো শহীদের রক্ত এবং অসংখ্য মা-বোনের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। দিনটি শুধু অতীতের স্মৃতি নয়; এটি প্রতিফলিত করে একতার শক্তি, ন্যায্যতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অদম্য মনোভাব। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী—সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণে জীবন বাজি রেখেছিলেন। বিজয় দিবস স্মরণ করিয়ে দেয়—ঐক্য, সাহস ও ন্যায্যতা কখনো হারায় না। ১৬ ডিসেম্বরের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাঁদের মতামত ও ভাবনার কথা।

জোলেখা আক্তার জিনিয়া।
জোলেখা আক্তার জিনিয়া।

বিজয় শুধু স্মৃতিতে নয়, চাই বাস্তব রূপ

জোলেখা আক্তার জিনিয়া

শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ।

মহান বিজয় দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, বাংলাদেশিরা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে। কিন্তু ৫৪ বছর পরও দেশের অগ্রযাত্রায় বহিরাগত চাপ, দুর্নীতি, বৈষম্য ও দমন-পীড়ন বড় বাধা। আজকের তরুণেরা বিজয়কে শুধু স্মৃতিতে নয়, চায় বাস্তব রূপ দিতে। তাদের প্রত্যাশা স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক, আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ। চায় বাক্‌স্বাধীনতা, সমান অধিকার আর গুম-খুনহীন বাংলাদেশ। বিজয় মানে যুক্তি, মূল্যবোধ, সুশাসন, মানসম্মত শিক্ষা ও সমান সুযোগ। দেশের পরিবর্তন সম্ভব হবে সবাই বিজয়ের চেতনাকে সাহস ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে বহন করলে। ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই।

তানজিল কাজী।
তানজিল কাজী।

শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদার বাংলাদেশ গড়ে তুলব

তানজিল কাজী

শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির সাহস, একতা আর অদম্য প্রেরণার প্রতীক। ১৯৭১ সালে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও শিক্ষকেরা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। তাঁদের অদম্য সাহস ও দেশপ্রেম আধুনিক অস্ত্রকেও পরাজিত করেছিল। বিজয় শুধু আনন্দের নয়, দায়িত্বেরও। আমাদের লক্ষ্য হতে হবে ন্যায়বিচার, সমতা ও মানবিকতায় সমৃদ্ধ সমাজ গড়া। নেতৃত্ব, যোগাযোগ ও সমালোচনামূলক চিন্তা হোক জাতীয় উন্নয়নের চালিকাশক্তি। আজ আমরা শহীদদের স্মরণ করি, মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতজ্ঞতা জানাই এবং শপথ করি—দেশকে ভালোবাসব, সত্যের পথে অবিচল থাকব, শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

সাজিয়া রহমান ঈশি।
সাজিয়া রহমান ঈশি।

ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারিনি

সাজিয়া রহমান ঈশি

শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিজয়ের আগেই পাকিস্তানি বাহিনী জানত, এই জাতিকে কোনোভাবেই দমানো যাবে না। তারা চেষ্টা করেছিল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে নেতৃত্বহীন বাংলাদেশ গড়ার। কিন্তু নতুন রাষ্ট্র প্রমাণ করল, বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ন্যায়ের সাহসে দাঁড়িয়েছে। ৫৪ বছর পরও আমরা স্বপ্নের ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতে পারিনি। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাঝে এখনো লেগে আছে বৈষম্য, অন্যায় ও সুযোগের অসম বণ্টন। তবু আশা আছে—যদি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি, ন্যায়কে প্রতিদিনের অভ্যাস করি, তাহলে একদিন আমরা গড়ে তুলতে পারব আমাদের স্বপ্নের, সমৃদ্ধ ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ।

এস এম রেদোয়ানুল হাসান রায়হান।
এস এম রেদোয়ানুল হাসান রায়হান।

এবারের বিজয়ের মাস যেন এক নতুন আলোয় ভাসছে

এস এম রেদোয়ানুল হাসান রায়হান

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস আমরা এত দিন ইতিহাসের পাতায় পাতায় দেখেছি, এবার সেটি বাস্তবের রঙে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দমবন্ধ অন্ধকার ভেদ করে যে মুক্তির হাওয়া বইছে চারদিকে; মনে হচ্ছে, জাতি আবার নতুন করে শ্বাস নিতে শিখছে। ব্যক্তিগত অনুভূতিতে এ যেন এক গভীর স্বস্তি—ভয় আর হুমকির দিন শেষ হয়ে যাওয়া আর সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর শক্তি ফিরে পাওয়া। বিজয়ের লাল-সবুজ এবার শুধু স্মৃতির প্রতীক নয়, আমাদের আশার অঙ্গীকার।

সামিহা সিরাজী লাজ।
সামিহা সিরাজী লাজ।

বিজয় কি আজও পরম আরাধ্য, নাকি অপ্রাপ্তির শিকল

সামিহা সিরাজী লাজ

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাঙালির অস্তিত্ব, স্বাধিকার ও স্বাধীনতার সঙ্গে ওতপ্রোত জড়ানো ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় আজও বহু অপ্রাপ্তির সঙ্গী। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, আইনশৃঙ্খলা ও নীতির অভাব নাগরিকদের পরম স্বাধীনতার আনন্দে বাধা। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা, রাজনৈতিক দলগুলোর অদূরদর্শিতা দেশের অগ্রগতিকে সীমিত করেছে। তবু নতুন প্রজন্ম ও ছাত্র-জনতা নতুন রাজনৈতিক উপাখ্যানের সূচনা করছে। সমাজের অবহেলার মাঝে বিজয় দিবস মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা অর্জন শুধুই ইতিহাস নয়, প্রাপ্তির আনন্দে প্রত্যেক মানুষের প্রাণে রাঙানো এক চলমান সংগ্রাম।

মো. আবুজার গিফারী।
মো. আবুজার গিফারী।

নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন ও দায়িত্বের প্রতীক

মো. আবুজার গিফারী

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

আর এক দিন পর মহান মুক্তিযুদ্ধ ৫৫ বছরে পা দেবে। স্বাধীনতার দীর্ঘ পথচলায় আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক নানা অর্জন করেছি। তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়, আমাদের আকাঙ্ক্ষার কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি? নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান রাজনৈতিক নেতৃত্বে সংঘটিত হলেও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতার বিস্ময়কর জাগরণের ফল। ছাত্রসমাজের এই ভূমিকা দেশের রাজনীতিতে নতুন বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ মুখ্য হবে। রাষ্ট্র পরিচালনা, নীতিনির্ধারণ ও সংসদীয় নেতৃত্বে তরুণেরা এগিয়ে আসবে। বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে তরুণ নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। মহান বিজয় দিবস শুধু উদ্‌যাপন নয়, এটি নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন ও দায়িত্বের প্রতীক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে রাজমিস্ত্রির কাজ রাতে পড়াশোনা

আজিনুর রহমান আজিম, পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) 
রাবিউল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবিউল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোরের আলো ফোটার আগে ঘুম ভাঙে রাবিউল ইসলামের। ঘরের কোণে টেবিলে রাখা বই-খাতার দিকে চোখ পড়ে। ইচ্ছে হয় পড়তে বসতে। কিন্তু বাস্তবতার কঠিন হাত তাঁকে টেনে নেয় বাইরে, রাজমিস্ত্রির কাজে। সংসারের দায় আর অর্থকষ্টের চাপে দিনে বই পড়ার সময় পান না রাবিউল। সকাল ৬টায় কনকনে ঠান্ডায় উঠে তাঁকে যেতে হয় কাজে। সন্ধ্যা পর্যন্ত রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে ইট, বালু ও সিমেন্ট নিয়ে শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রাম। দিনের শেষে ক্লান্ত হাতে ধরতে হয় কলম ও খাতা। এই সংগ্রামের মধ্যেই দেখতে হয় জীবনের স্বপ্ন।

মাত্র ১৯ বছর বয়সী রাবিউল লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভার সোহাগপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিন মাস বয়সে বাবাকে হারান। মা রাবেয়া বেগম একাকী সংসার চালানোর তাগিদে অন্যের ঘরবাড়িতে কাজ করে পরিবারকে টানতে থাকেন। পঞ্চম শ্রেণির পর থেকে সংসারের দায় রাবিউলের কাঁধে এসে পড়ে। এরপর তিনি রাজমিস্ত্রি, টাইলসের মিস্ত্রি ও রংমিস্ত্রির কাজ করতে করতে বড় হয়েছেন।

রাবিউল দিনের বেলা দেয়াল, ইট, সিমেন্ট দিয়ে ঘরবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক সৌন্দর্য বাড়ান, আবার রাতে পড়তে বসেন। পরিবারের তিন প্রজন্মের জীবন কেটে যাচ্ছে টিনের চালা ও ঝুপড়ি ঘরে, যেখানে বর্ষায় ঘরের ভেতরে পানি পড়ে, শীতে ঠান্ডা হাওয়া ঢোকে ফাঁকফোকর দিয়ে। তবু রাবিউল ও তাঁর পরিবার আশ্রয় খুঁজে নেন ভাঙাচোরা এই ঘরে।

কষ্টের মাঝেও তিনি স্বপ্ন দেখেন। ২০২৪ সালে পাটগ্রাম বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। চলতি বছর অনার্সে ভর্তি হওয়ার আশায় পুরোনো বই জোগাড় করেছেন। তিনি বলেন, ‘অর্থের অভাবে এখনো ভর্তি হতে পারিনি। আমার স্বপ্ন—একদিন পরিবারের মুখে হাসি ফোটাব।’

মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘স্বামী নেই ২০ বছর। অনেক কষ্টে সন্তানকে বড় করেছি। ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। টাকার অভাবে ঘরও ঠিক করতে পারছি না।’ প্রতিবেশী আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘রাবিউল ছোটবেলা থেকে মিস্ত্রির কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে। তারা খুব অসহায়, থাকার জায়গা নেই।’

রাবিউল বলেন, ‘ইট, সিমেন্ট আর রং করার সময়ও আমি আলোর স্বপ্ন দেখি। ইচ্ছা—একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়ে মায়ের মুখে হাসি ফোটানো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত