Ajker Patrika

২৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে ইউজিসির সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৬
২৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে ইউজিসির সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি

দেশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনহীন শিক্ষা প্রোগ্রাম চালায়, কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অননুমোদিত ক্যাম্পাস। এসব বিষয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

বৃহস্পতিবার গণবিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি বলেছে, দেশের ২৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কারও মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে, কেউ কেউ আদালতের স্থগিতাদেশে পরিচালিত। কেউ আবার অনুমোদিত শিক্ষা প্রোগ্রামের বাইরে কিছু প্রোগ্রাম চালাচ্ছে। অননুমোদিত ক্যাম্পাসও রয়েছে অনেকের। গণবিজ্ঞপ্তিতে শুধু সরকার এবং ইউজিসির অনুমোদিত ক্যাম্পাস ও প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইউজিসির ওয়েবসাইটে তথ্য পাওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইউজিসির ওয়েবসাইটে এই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নেই, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে নয়টিতে এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। ৯৯ টিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। 

সমস্যাক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা দিয়েছে ইউজিসি। এর মধ্যে ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দুই ভাগে বিভক্ত। পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা চলছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আচার্য ও রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষও নেই। 

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সরকার বন্ধ করেছিল। তবে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। অনুমোদনের সময় ক্যাম্পাসের ঠিকানা ছিল বনানীতে। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারিধারা-নর্দ্দার প্রগতি সরণিতে অনুমোদন দেয়। কিন্তু ইউজিসি সরেজমিন পরিদর্শন করে ওই ঠিকানায় আইনানুযায়ী জায়গা (স্পেস) ও সুযোগ-সুবিধা দেখতে পায়নি। ফলে তাদের আবার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নেই।

কুইন্স ইউনিভার্সিটি সরকার বন্ধ করে দেওয়ার পর মামলা হয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে এক বছরের জন্য শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার চিঠি দেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তারা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা ১৯৯৫ সালে অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু আইন না মানায় ২০০৬ সালে এটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আদালতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রায় হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দুই ভাগে বিভক্ত এবং একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান অনুমোদিত ঠিকানা রাজধানীর উত্তরায় বলা হলেও ইউজিসি সরেজমিন পরিদর্শনে কোনো অস্তিত্ব পায়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সনদ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্যের বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। ইউজিসি তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয়নি। এটিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নেই।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে বাংলায় বিএ (অনার্স) সহ কয়েকটি প্রোগ্রাম ২০২১ সালের ‘স্প্রিং সেমিস্টার’ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ পদে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।

টাইমস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে ২০১৫ সালে ১০টি প্রোগ্রামের অনুমোদনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা ইউজিসির অনুমোদনের আগেই বিবিএসহ কয়েকটি প্রোগ্রাম পরিচালনা শুরু করে। পরে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন চায়। কিন্তু ইউজিসি না নাকচ করে। তারা ইউজিসির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলাটি চলমান। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির অনুমোদিত ক্যাম্পাসের ঠিকানা চট্টগ্রামের মেহেদীবাগ এবং শহীদ মির্জা লেনে। আদালতের রায় অনুযায়ী এই দুটি ক্যাম্পাস ছাড়া অন্যান্য সব ক্যাম্পাস অবৈধ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন।

কয়েকটি শিক্ষা প্রোগ্রামের বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে চলছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। এটিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য নেই। 

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি—এই চারটি প্রতিষ্ঠান অননুমোদিত কিছু ক্যাম্পাস পরিচালনা করেছে।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইবাইস ছাড়াও আছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। 

অননুমোদিত প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ ইন ইংলিশ প্রোগ্রাম ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া চালাচ্ছে। পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি এলএলবি (চার বছর মেয়াদি) এলএল এম (এক বছর), এলএল এম (২ বছর মেয়াদি) প্রোগ্রামে ইউজিসির অনুমোদন নেই। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামের অনুমোদন নেই। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) প্রোগ্রাম অনুমোদিত। কিন্তু ইউজিসি বলেছে এই প্রোগ্রামের মধ্যে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিবিএ ইন জেনারেল, বিবিএ ইন ফিন্যান্স, বিবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, বিবিএ ইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, বিবিএ ইন মার্কেটিং, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, বিবিএ ইন অ্যাকাউন্টিং, বিবিএ ইন ইকোনমিকস, বিবিএ ইন এন্টারপ্রিনিউরশিপ এবং বিবিএ সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম চালাচ্ছে। 

ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের অনুমোদন পেলেও শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি পায়নি। এগুলো হলো রূপায়ণ এ কে এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয় (নারায়ণগঞ্জ), রাজশাহীর আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনা খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সদ্য অনুমোদন পাওয়া কিশোরগঞ্জের শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। 

এ ছাড়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা ৯৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহউপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ সবাই রয়েছেন। অর্থাৎ শীর্ষ তিন পদেই রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা কর্তৃপক্ষ আছে। এ ছাড়া ৬৯টিতে উপাচার্য, ২২টি সহ-উপাচার্য এবং ৫৬টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা কোষাধ্যক্ষ রয়েছে। ১৮টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা শীর্ষ তিন পদে কোনো ব্যক্তি নেই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে ৮ নভেম্বর; যা চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের ১০ হাজার ২১৯টি পদে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

এ বিভাগগুলো হলো রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এ দুই বিভাগে শূন্য পদ রয়েছে ৪ হাজার ১৬৬টি।

আজ বুধবার বিকেলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের ১০ হাজার ২১৯টি শূন্য পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামীকাল দেশের তিনটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হবে।

এর আগে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট রাতে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিন দিন পর ৩১ আগস্ট গঠিত হয় আট সদস্যের ‘কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি’। এ কমিটির চেয়ারম্যান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সদস্যসচিব অধিদপ্তরের (পলিসি ও অপারেশন) পরিচালক। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ও সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন কমিটিতে।

পরে ২ নভেম্বর সংশোধিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ প্রকাশ করা হয়। এতে নতুন সৃষ্টি করা সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাদ দেওয়া হয়। এ দুটি পদ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি বিধিমালায় কিছু ‘শব্দগত পরিবর্তন’ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদ্রাসার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা শুরু ২৮ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এ বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন অষ্টম ও ইবতেদায়ি (পঞ্চম) শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এবং ইবতেদায়ি শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হবে।

গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রকাশিত সময়সূচিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সময়সূচি অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণির কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ, আকাইদ ও ফিকহ বিষয়ের পরীক্ষা হবে ২৮ ডিসেম্বর। আরবি (১ম ও ২য় পত্র) পরীক্ষা হবে ২৯ ডিসেম্বর। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩১ ডিসেম্বর।

অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় তিন ঘণ্টা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় থাকবে।

বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান (৫০ + ৫০) = ১০০ এবং পরীক্ষার সময় (১.৩০ + ১.৩০) = ৩ ঘণ্টা। দুটি বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্র আলাদা থাকবে। গণিত ও বিজ্ঞান পরীক্ষাও একই পদ্ধতিতে হবে, পূর্ণমান (৭০ + ৩০) = ১০০।

অন্যদিকে ইবতেদায়ি শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী, কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ বিষয়ের পরীক্ষা হবে ২৮ ডিসেম্বর। আরবি (১ম ও ২য় পত্র) পরীক্ষা হবে ২৯ ডিসেম্বর। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩১ ডিসেম্বর।

পঞ্চম শ্রেণিতে প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান (৫০ + ৫০) = ১০০ আর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পূর্ণমান (৬০ + ৪০) = ১০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পাঠ্যবই থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রশ্নকাঠামো অনুযায়ী উভয় পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করা হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রের কক্ষে উপস্থিত হয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠানপ্রধানের স্বাক্ষর, সিলসহ পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগে সংগ্রহ করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা ওএমআর ফরমে সঠিকভাবে রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোড পূরণ করবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীরা কেবল অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর (নন-প্রোগ্রামেবল) ব্যবহার করতে পারবে। কোনো অবস্থায় উত্তরপত্র ভাঁজ করা বা প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে তফসিল ঘোষণা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে তফসিল ঘোষণা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২২ ডিসেম্বর।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশন অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।

নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী, আচরণ বিধিমালা প্রকাশ ৫ নভেম্বর, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ৫ নভেম্বর, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ৬ নভেম্বর, ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ নভেম্বর, জকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিতরণ ১৩, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), জকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল ১৭ ও ১৮ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ ও ২০ নভেম্বর।

এ ছাড়া জকসু নির্বাচনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২৩ নভেম্বর। প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), ‎চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৩ ডিসেম্বর। ‎মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর। ‎প্রত্যাহার করা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ৯ ডিসেম্বর।

প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ২২ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এ ছাড়া ২২ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করা হবে। ভোট গণনার ওপর ভিত্তি করে ২২ অথবা ২৩ ডিসেম্বর ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তফসিল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী দিবস, শহীদ দিবস, শীতকালীন ছুটি—সব বিবেচনা করে এ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, সব বিবেচনায় আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১ হাজার ৮৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
১ হাজার ৮৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত

আন্দোলনের মুখে শর্তসাপেক্ষে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।

এস এম মাসুদুল হক বলেন, ‘আমরা আবেদন করা ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। শর্তসাপেক্ষে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়।’

মাসুদুল হক আরও বলেন, ১ হাজার ৮৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মধ্যে যেগুলো চলতি বছর জারি করা এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে এমপিওভুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে।

দেড় হাজারের বেশি অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির আবেদন গত ৮ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রহণ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকেরা তিন হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দেশে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।

শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এ বছরের শুরুতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে প্রথমে এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষকেরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। এর মধ্যে তাঁদের এক পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে। বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের পিটুনির সে ঘটনা আলোড়ন তোলে। এর একপর্যায়ে গত ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।

গত ২৫ জুন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর মোট ছয়টি পদ এমপিওভুক্ত হবে। ইবতেদায়ির প্রধান বেতন পাবেন দশম গ্রেডে আর সাধারণ, বিজ্ঞান ও আরবি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ১৩তম গ্রেডে। আর ক্বারী বা নুরানি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকেরা ১৬তম গ্রেডে বেতন পাবেন। আর প্রতিটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার অফিস সহায়ক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, যে পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০তম গ্রেডে বেতন পাবেন।

নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষক পদে এনটিআরসিএর সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। আর নীতিমালায় মাদ্রাসাগুলোর ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নির্দেশনা এসেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক পদে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়েছে।

এমপিওভুক্তির জন্য ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি, প্রতিষ্ঠানের জমি, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা, বার্ষিক পরীক্ষার গড় নম্বর, পরিবেশ ইত্যাদি সূচকে নম্বর নির্ধারণ করে মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং করা হবে।

নীতিমালায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের এমপিও কমিটি গঠন করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর মাদ্রাসাগুলোর কাগজপত্র যাচাই করে এমপিও দেবে। প্রথমে মাদ্রাসাগুলোকে এমপিও কোড দেওয়া হবে। শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে বা এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে যোগদানের তারিখ থেকে এমপিও পাবেন।

বিক্ষোভ-মিছিল করেননি শিক্ষকেরা

সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ পাঁচ দাবিতে আজ বিক্ষোভ-মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। তবে প্রধান উপদেষ্টা ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেওয়ায় তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেননি। তবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

জানতে চাইলে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষক ঐক্য জোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম আজ সন্ধ্যায় বলেন, ‘১ হাজার ৮৯টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় অনুমোদন দিয়েছেন বলে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁরা আমাদের বিক্ষোভ-মিছিল না করার অনুরোধ করেছেন। তাই আমরা বিক্ষোভ-মিছিল করিনি। তবে আমরা লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাব। আপাতত আমরা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত