Ajker Patrika

গাঁজা খেতে ডেকে বন্ধুকে হত্যার পর লাশ গুম, ৩ যুবকের স্বীকারোক্তি

নীলফামারী ও কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ২২: ০২
গাঁজা খেতে ডেকে বন্ধুকে হত্যার পর লাশ গুম, ৩ যুবকের স্বীকারোক্তি

নীলফামারীতে গাঁজা সেবনের জন্য ডেকে নিয়ে এক যুবককে হত্যা করে লাশ বালির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার তিন যুবক। নিহত ও অভিযুক্তরা বন্ধু।

পুলিশ বলছে, মিথ্যা অপবাদে বন্ধুর বিয়ে ভাঙা ও বোনের নামে অপবাদ রটানোর অভিযোগে মোর্শেদুল ইসলাম (৩৩) নামে ওই যুবককে হত্যা করা হয়েছে। 

গত ২৪ আগস্ট জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুঠি বাসোপাড়া গ্রামের এ ঘটনায় চার যুবককে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. গোলাম সবুর। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুঠি মাস্টারপাড়া গ্রামের মামুনুর রশিদের ছেলে বাদশা আলমগীর (৩১), বাসোপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম ইসলাম (১৯), নুরুজ্জামান পেলকু মেম্বারের ছেলে সেলিম মিয়া (২৭) ও ময়নাকুড়ি গ্রামের মামুদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম (৩০)। নিহত মোর্শেদুল ও তাঁরা বন্ধু স্থানীয় এবং গাঁজা সেবনের সঙ্গী।
 
পুলিশ সুপার জানান, মোর্শেদুল ও আসামিরা গাঁজাসেবী। একসঙ্গে গাঁজা সেবন করতেন। একাধিক জনের টাকা লেনদেনের বিরোধ ও ইব্রাহিমের বোনের পালিয়ে বিয়ে করার অপবাদ ছড়ানো এবং মিথ্যা তথ্যে সেলিমের বিয়ে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ছিল মোর্শেদুলের বিরুদ্ধে। এমন বিরোধ থেকে তাঁরা মোর্শেদুলকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন। গত ২৪ আগস্ট রাতে গাঁজা সেবনের জন্য মোর্শেদুলকে ডেকে নেন ইব্রাহিম। পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর সবাই মিলে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোর্শেদুলের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। মোর্শেদুলের লিঙ্গ কর্তন করে বালুর নিচে পুঁতে রাখেন ইব্রাহিম। এরপর সবাই মিলে লাশটিও বালির নিচে পুঁতে রাখেন। 

পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার তিন দিন পর ২৭ আগস্ট এলাকার কারাবালা নামক স্থান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবার প্রথমে সেই লাশ শনাক্ত করতে পারেনি। ২৮ আগস্ট উপপরিদর্শক (এসআই) প্রভাত চন্দ্র রায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পরিবারের বক্তব্য ও পুলিশের অনুসন্ধানে লাশটি মোর্শেদুলের বলে শনাক্ত হয়। এরপরই পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ সেপ্টেম্বর বাদশা আলমগীর, ২৪ সেপ্টেম্বর ইব্রাহিম, ২৭ সেপ্টেম্বর সেলিম ও আনারুল গ্রেপ্তার হয়। তাঁদের মধ্যে ইব্রাহিম, সেলিম ও আনারুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারোয়ার আলম, কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজীব কুমার রায়, নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত