Ajker Patrika

আ.লীগের মহিলা এমপিকে লাঞ্ছিত, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন

জামালপুর ও ইসলামপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ২৩: ০৭
আ.লীগের মহিলা এমপিকে লাঞ্ছিত, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন

জামালপুরের ইসলামপুরে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার রাতে এই কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। 

তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, সহসভাপতি মজিবুর রহমান শাহজাহান, সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সরকার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান। তাদের ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

জামালপুর-শেরপুর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম হোসনে আরা গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ্ অভিযোগটি গ্রহণ করেছেন। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্যের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। তবে ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তদন্ত কমিটি বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। 

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইসলামপুরে দলীয় আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। 

সংসদ সদস্য হোসনে আরা বলেন, ‘আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য। আমি তো শুধু সংসদ সদস্য নয়, দলীয় কর্মী হিসেবেও দাওয়াত পাওয়ার অধিকার রাখি। দলীয় সভায় এসব কথা বলতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আমার ওপর চড়াও হয়ে আমাকে বলে, ‘আপনি কে? আপনাকে দাওয়াত দিতে হবে কেন? আপনি কীভাবে এমপি হয়েছেন সেটা আমি জানি। আপনি কোন দল থেকে এসেছেন সেটাও জানি। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড সবই জানা আছে। একপর্যায়ে সে আমাকে থাপ্পড় মারে। 

তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় আনোয়ার হোসেনের পক্ষ নিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল তাঁর বুক চাপড়ে আমাকে বলেছেন, ‘রাখেন, চুপ করেন। আপনি একটা কথাও বলবেন না। আমি এখানে সভাপতি।’ 

এরপর আমি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে বললাম, ‘এখন বলতেছেন আপনি সভাপতি। তখন তো আপনি একটা কথাও বললেন না। আমার গায়ে আনোয়ার হাত তুলল। ধস্তাধস্তি হলো। হাতাহাতি হলো। এরপর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী স্বাগত বক্তব্য দেন। মন্ত্রী সাহেব যে এই ঘটনাটি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছেন, তা আমি ভুলেও ভাবিনি।’ 

হোসনে আরা বলেন, ‘আমার গায়ে হাত তোলা মানে জাতীয় সংসদের সব সদস্যের গায়ে হাত তোলার শামিল। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সামনে এমন ঘটনা ঘটবে, সেটা কখনো আশা করিনি। দেখি জেলা আওয়ামী লীগ কী সিদ্ধান্ত নেয়।’ 

তবে অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল হক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মহিলা এমপি মহোদয়ের সঙ্গে আমি কোনো খারাপ আচরণ করিনি। বরং তিনিই আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন।’ 

সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘মহিলা এমপি মহোদয় যে অভিযোগ করেছেন, এখানে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল হকের কোনো খারাপ ভূমিকা ছিল না।’ 

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আব্দুল কাদের শেখ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। একজন মাননীয় এমপির গায়ে হাত তোলা তাও আবার নারী, একজন নেতার মোটেও সমীচীন হয়নি। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওই সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। এমপি হোসনে আরার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারের তর্কবিতর্ক হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। মূলত সেদিনের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতেই এমপি হোসনে আরার ইসলামপুর পৌর শহরের বাসায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন, সে বিষয়ে তাঁকে বলেছি। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, ‘হোসনে আরা একজন সংসদ সদস্য। তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকলে তাঁকে দাওয়াত দিতে হবে কেন। তিনি বরাবরই আমার বিরুদ্ধে এসব অসাংগঠনিক অযৌক্তিক অভিযোগ তোলেন। তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল যেমন করা হয়নি, তেমনি তাঁর গায়েও কেউ হাত তোলেনি। তাঁর এসব অভিযোগ সঠিক নয়।’ 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সভায় আমিও উপস্থিত ছিলাম। হোসনে আরাকে আমার পাশের চেয়ারে বসিয়ে সভার কার্যক্রম সমাপ্ত করেছি। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল হক এমপির সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেছে বলে আমি দেখিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত