Ajker Patrika

সারোগেসি ভারতে নারী পাচারের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে কি

আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯: ০১
সারোগেসি ভারতে নারী পাচারের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে কি

গর্ভ ভাড়া দেওয়া বা টাকার বিনিময়ে অন্যের সন্তান গর্ভে ধারণ করা এখন অনেক দেশে লোভনীয় ব্যবসা। এভাবে সন্তান ধারণকে বলে ‘সারোগেসি’। ভারতে বাণিজ্যিক সারোগেসি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও ব্যবসা ঠিকই চলছে। সারোগেসির জন্য দেশি-বিদেশি সেলিব্রেটিদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে ভারত। নিষিদ্ধ হলেও রমরমিয়েই চলছে এ বাণিজ্য। 

তবে আশঙ্কার কথা হচ্ছে, এই ক্ষেত্রটি সম্ভবত নারী পাচারেরও গন্তব্য হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে এমনি দুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের দিয়ে জোর করে ‘সারোগেসি’ ব্যবসা করা হয়েছে। ৩১ বছর বয়সী এক নারী সারোগেসির মাধ্যমে ১০টি সন্তান জন্ম দিয়েছেন। আর ২৯ বছর বয়সী আরেকজন জন্ম দিয়েছেন ৬ শিশু। 

ওই নারীর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিশোরী থাকাকালে গৃহপরিচারিকার কাজের টোপ দিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিছুদিন পরই সারোগেসির ব্যবসায় নামানো হয়।

শিশুগুলোর বয়স ছয় মাস না হওয়া পর্যন্ত বুকের দুধ পান করাতে বাধ্য করা হতো তাঁকে। এরপর বিক্রি করে দেওয়া হতো। ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার পাত্রু গ্রামের বাসিন্দা ওই নারীকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করে একদল অধিকারকর্মী। তিনি এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। গুমলায় শিশু কল্যাণ কমিটির সহায়তায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। 

ওই নারী বলেন, ‘তারা আমাদের টাকার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। তারা শুধু চেয়েছে তাদের জন্য আমি সন্তান জন্ম দিই।’ 

ওই দুই তরুণীর বক্তব্য অনুযায়ী, দিল্লির একটি প্লেসমেন্ট এজেন্সি নারী-কিশোরী পাচারে জড়িত। আড়ালে তারা সারোগেসির ব্যবসা করে। সম্প্রতি পান্নালাল নামে ঝাড়খণ্ডের এক নারী পাচারকারী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, গত ১৫ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি মেয়েকে রাজ্য থেকে পাচার করেছেন। আর এই পাচারের কাজ করেই তিনি কোটিপতি হয়েছেন। 

রাজ্যের শিশুকল্যাণ কর্মকর্তা বৈদ্যনাথ কুমার এই ঘটনায় দিল্লির প্লেসমেন্ট এজেন্সিগুলোকেই দায়ী করেছেন। ঝাড়খণ্ড সরকার এই ঘটনা নিয়ে দিল্লি সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে প্লেসমেন্ট এজেন্সিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। 

ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার শিশুকল্যাণ কমিটির সাবেক সদস্য বাসন্তী মুন্ডা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলোকে টার্গেট করে প্লেসমেন্ট এজেন্সিগুলো। আঠারো বছরের কম বয়সী কিশোরীদের গৃহপরিচারিকার কাজ দেওয়ার কথা বলে পাচার করে তারা। বাসন্তী মুন্ডার দাবি, এই বয়সের মেয়েরা বুদ্ধিতে পরিণত না হওয়ায় সহজেই জালে ফাঁসাতে পারে এজেন্সিগুলো। সচ্ছল জীবনের আশায় তারা শহরে কাজের টোপ উপেক্ষা করতে পারে না। 

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বহুদিন ধরেই অভিযোগ জানিয়ে আসছে, কিছু সংগঠিত চক্র ঝাড়খণ্ড থেকে কিশোরী ও তরুণীদের পাচার করছে। নাগরিক সমাজের একাধিক গ্রুপের হিসাব অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ড থেকে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার শিশু পাচারের শিকার হয়। তাদের হয় গৃহপরিচারিকার কাজে লাগানো হয় অথবা দেহব্যবসায় বাধ্য করা হয়। 

তবে পাচার করে সারোগেসিতে বাধ্য করার ঘটনা এর আগে কখনো শোনা যায়নি। 

ঝাড়খণ্ডের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক এসএন প্রধান বলেন, এটা সাধারণত ঘটে না। কিন্তু সম্প্রতি আমরা এমন কয়েকটি ঘটনা পেয়েছি। এই রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটছে, এটা খুব উদ্বেগের। 

এদিকে স্থানীয়রা দাবি করছেন, দিল্লি থেকে দুইজন উদ্ধার হওয়ার ঘটনাই শেষ নয়। গুমলা এবং লোহারদাগা জেলা থেকে এমন বেশ কয়েকজন মেয়েকে পাচার করে সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকি ঝাড়খণ্ডেই বিক্রি করার জন্য এভাবে সন্তান জন্মের ঘটনাও আছে। 

লোহারদাগা জেলার আরাহাসা গ্রামের এক বয়োবৃদ্ধ বাসিন্দা জগত্রম মাহাতো বলেন, তাঁর গ্রাম থেকে বহু মেয়েকে কাজের লোভ দেখিয়ে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেককে সারোগেসিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তো নিজের গ্রামেই সন্তান জন্ম দিয়েছে। পরে এজেন্ট এসে সেই শিশুকে নিয়ে গেছে। এই কাজের জন্য নারীদের খুব কম টাকা দেওয়া হয়। আর সারোগেট মাদার কিশোরী হলে যা দেওয়া হয় তা অতিনগণ্য। 

স্থানীয় এনজিও শক্তি বাহিনী বলছে, দিল্লিতে তারা ঝাড়খণ্ডের শতাধিক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থী পরিচালিত এনজিও বাচপান বাঁচাও আন্দোলন পুরো ভারত থেকে উদ্ধার করেছে ৮০ হাজার শিশু। এদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ঝাড়খণ্ড ও বিহার রাজ্যের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত