Ajker Patrika

সুইডেনে এবার কোরআন পোড়ানোতে বাধা দেওয়ায় নারী আটক

সুইডেনে এবার কোরআন পোড়ানোতে বাধা দেওয়ায় নারী আটক

প্রকাশ্যে কোরআন অবমাননা ও পোড়ানোর চেষ্টা প্রতিহত করতে যাওয়ায় এক নারীকে আটক করেছে সুইডেনের পুলিশ। যেই বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অজুহাতে দেশটির সরকার ধর্মীয় গ্রন্থ অবমাননার অনুমতি দিয়ে থাকে এবার এই ঘটনায় সেই নৈতিক অবস্থানই প্রশ্নবিদ্ধ হলো বলে মনে করছেন অনেকে। 

মিডলইস্ট মনিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ইরাক থেকে আসা শরণার্থী সালওয়ান মোমিকা জনসমক্ষে কোরআন পুড়িয়ে দিয়েছেন। ডেনমার্কের মতো অন্যান্য নর্ডিক দেশগুলোতে সম্প্রতি কোরআন পোড়ানোর বেশ কয়েকটি ঘটনার সর্বশেষ নজির এটি। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন নারী মোমিকার দিকে ছুটে যাচ্ছেন। একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে স্প্রে করছেন তিনি। এ সময় পুলিশ দ্রুত এগিয়ে এসে তাঁকে আটক করে। 

পুলিশের মুখপাত্র টাওয়ে হ্যাগ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই নারীর পরিচয় পুলিশ এখনো জানে না। জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করা এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সহিংস আচরণ করার সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁকে আটক করা হয়েছে। 

সুইডেন, ডেনমার্ক এবং জার্মানিতে কোরআন পোড়ানোর সাম্প্রতিক ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোতে তীব্র প্রতিবাদ হয়েছে। এসব ঘটনা একই সঙ্গে কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে স্টকহোমের ঘটনা বেশি আলোচনায় এসেছে। এ ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছে অনেক দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশই ধর্মগ্রন্থের এমন অবমাননার নিন্দা জানিয়েছে। 

তবে সুইডিশ সরকার বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে বরাবরই কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়ে আসছে। এ ধরনের বিক্ষোভে বাধা দেওয়া সরাসরি এই নীতির বিরোধিতা বলেও উল্লেখ করে সরকার। 

একই সময়ে কর্তৃপক্ষ মোমিকার বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের অভিযোগ দায়ের করেছে। সুইডিশ সরকার গত শুক্রবার এই ধরনের ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ বলে স্বীকার করেছে এবং এ ধরনের বিক্ষোভের অনুমতি চেয়ে আসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করার আইনি সুযোগ আছে কি না তা পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলেছে। 

সুইডেনের বিচারমন্ত্রী গুনার স্ট্রোমার বলেছেন, ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো বা অবমাননার মতো বিক্ষোভের বিধিনিষেধের বিষয়ে সরকার ফ্রান্স, নরওয়ে এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের আইন পর্যালোচনা করবে। বাক স্বাধীনতার পাশাপাশি যাতে নিরাপত্তার বিষয়টি আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় সেই আইনি কাঠামোর কথা ভাবছে সরকার। 

গত সপ্তাহে স্টকহোমে ইরান দূতাবাসের বাইরে মোমিকা কোরআন পোড়ান। গত শুক্রবার দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। মুসলিম–সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সঙ্গে স্টকহোমের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করতেই একটি পক্ষ এসব তৎপরতা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করে দূতাবাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত