Ajker Patrika

জোরপূর্বক চাষাবাদে বাধা দেওয়ায় জমির মালিককে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জোরপূর্বক চাষাবাদে বাধা দেওয়ায় জমির মালিককে খুন

১ নভেম্বর, সোমবার। বগুড়ার সোনাতলা থানার তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের চর সরলিয়া গ্রাম। চারদিকে কুয়াশা। এর মধ্যেই একটি গামর গাছে নীল শার্ট পরা এক ব্যক্তির মরদেহ ঝুলতে দেখা গেল। তাঁর নাম মো. হাছেন আকন্দ (৪০)। নিজের চাষাবাদের জমি দখল এবং তাতে বাদাম গাছ লাগানোর প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তার পর তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় গামর গাছের সঙ্গে। এ ঘটনায় জামালপুর থেকে হযরত আলী (২০) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর মালিবাগের সিআইডির সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিকে এখনো খুঁজছে সিআইডি। 

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তা ধর জানান, তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন হাছেন আকন্দ। কৃষি কাজের পাশাপাশি করতেন গরুর ব্যবসা। সারিয়াকান্দি বাঙালি নদীর চরে বর্গা নেওয়া প্রায় দেড় বিঘা জমিতে তিনি বাদাম, পেঁয়াজ, কলাই ও মাটি ভালো হলে ধান উৎপাদন করে সংসার চালাতেন। সেই জমির কিছু অংশে পাশের জমির মালিক বাদাম গাছ লাগানোর প্রতিবাদ করায় খুন হন তিনি। 

মুক্তা ধর জানান, বর্ষার সময় চরাঞ্চলে পানি এসে খেতের সীমানা বা আইল প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে শিমুলতাইড় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর জমিসহ হাছেন আকন্দের জমিতে বাদাম গাছ লাগাতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘হাছেন আকন্দ তাঁর খেতে কেন বাদাম গাছ চাষাবাদ করছেন, জিজ্ঞেস করলে জমির মালিক, তাঁর ছোট ভাই শুক্কুর আলী ও প্রতিবেশী হযরত আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক চাষাবাদ করতে থাকেন।’ 

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, অক্টোবরের ৩১ তারিখ রাতে শুক্কুর আলী ও হযরত আলী কথা বলার জন্য হাছেন আকন্দকে রাত ৮টার দিকে মনসুর মণ্ডলের ভুট্টা খেতে ডেকে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘তাঁকে সেখানে ডেকে নিয়ে চাষাবাদে বাধা দেওয়ার কারণে আবারও মারধর করে এবং একপর্যায়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হাছেন আকন্দের শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা পর জমির পাশের গামর গাছের সঙ্গে লাশটি ঝুলিয়ে রেখে আত্মগোপনে চলে যায়।’ 

হত্যার পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের স্ত্রী মোছা. আঙুর বেগম (৩৫) অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বগুড়ার সোনাতলা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর থেকেই এর ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। 

মুক্তা ধর বলেন, ‘অভিযানের ধারাবাহিকতায় জামালপুরের মাদারগঞ্জের দুর্গম চরাঞ্চল থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামি হযরত আলীকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।’ অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

যুবককে আটক করা নিয়ে বিজিবি ও এলাকাবাসীর পাল্টাপাল্টি দাবি

বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

ভূমি অফিসের কাণ্ড: এসি ল্যান্ড দপ্তরের নামে দেড় কোটি টাকা আদায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত