Ajker Patrika

মানিকগঞ্জে রেস্তোরাঁ ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জে রেস্তোরাঁ ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই রেস্তোরাঁর ম্যানেজারসহ দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে রেস্তোরাঁর ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৯-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরের মামলা করেছেন।

গতকাল সোমবার পৌরসভার বেউথা কালীগঙ্গা নদীর সংলগ্ন ‘টি ইফেক্ট এন্ড ফিস ল্যান্ড রেস্তোরাঁয়’ এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইরাদ কোরাইশী সুমনের অনুসারী বলে জানা গেছে।

মামলার আসামিরা হলেন-জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মনিরুল হক মিম, পৌর ছাত্রলীগ নেতা শামীম হোসেন বাবু, ছাত্রলীগ কর্মী আতিকুর রহমান, লাবিব, নিহাল, ওয়াসিম ও ইউসুফ।

রেস্তোরাঁর মালিক এম এম জনি বলেন, ‘রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তার পাঁচ লাখ টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। ভাঙচুর এবং লুটপাটের বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইরাদ কোরাইশী সুমনকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

ছাত্রলীগের সভাপতি ইরাদ কোরাইশী সুমনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। কোনো ব্যক্তির দায় সংগঠন বহন করবে না। যেহেতু এই ঘটনায় ছাত্রলীগের নাম এসেছে। এ কারণে বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে বেউথা কালিগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাড়ে এম এম জনি নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা রেস্তোরাঁটি গড়ে তোলেন। এম এম জনি জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মদ পান করে ওই রেস্তোরাঁয় ঢুকে অপ্রীতিকর আচরণ করেন। তাঁদেরকে সংযত হতে বললে তারা উত্তেজিত হয়ে বকাঝকা করেন এবং বলতে থাকেন তারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন, তারা সুমন ভাইয়ের লোক। এরপর রাত ১০টার দিকে তারা চাপাতি ও রাম দা নিয়ে রেস্তোরাঁয় ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীরা রেস্তোরাঁর ম্যানেজার আসিফ হোসেনকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁর দুই হাত গুরুতর জখম হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মনিরুল হক মিম পারিবারিকভাবে বিএনপি পরিবার থেকে ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছে। তার বাবা গোলাম রফি অপু জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বর্তমান জেলা যুবদলের এক নম্বর সদস্য হিসেবে দায়িত্বে আছেন। জেলা ছাত্রলীগের আগের (বুলবুল-মামুন) কমিটিতে মিমকে জেলা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক পদ দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি সংগঠনের দায়িত্বশীল পদ পাওয়ার পর থেকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উগ্র-বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মনিরুল হক মিম। এরপর ইরাদ কোরাইশী সুমন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর তার ছত্র ছায়ায় থেকে একই এলাকার জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউর রহমান কম্পনকে সঙ্গে নিয়ে পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেন তিনি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার জানান, সোমবার রাতে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত