Ajker Patrika

বিমানের অসহযোগিতায় বন্ধ হচ্ছে না সোনা চোরাচালান: কাস্টমস গোয়েন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ২২: ৪৯
বিমানের অসহযোগিতায় বন্ধ হচ্ছে না সোনা চোরাচালান: কাস্টমস গোয়েন্দা

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন দেশ ফ্লাইটে আসা সোনার অবৈধ চালান বন্ধ না হওয়ার পেছনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইলে কাস্টমস গোয়েন্দা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ আবদুর রউফ। 

মুহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা জানতে পারে দুবাই থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৪০৪৮ ফ্লাইটে চোরাচালানের মাধ্যমে একটি বড় চালান আসছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন কাস্টমস গোয়েন্দা সদস্যরা। পরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি অবতরণ করলে তল্লাশি চালানো হয়। বিশেষ এই তল্লাশিতে উড়োজাহাজের দুটি টয়লেটে থাকা টিস্যু বক্সের ভেতরে ও নিচ থেকে তিনটি করে মোট ছয়টি কালো স্কচটেপ মোড়ানো বান্ডিল উদ্ধার করা হয়। পরে বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট সবার সামনে বান্ডিল খুলে ১২০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়, যার ওজন প্রায় ১৪ কেজি। এর আনুমানিক বাজারমূল্য ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। 

কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘অভিযানে আমরা উড়োজাহাজের প্রতিটি সিটের নিচে তল্লাশি চালিয়েছি। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী আমরা এ তল্লাশি চালাতে গেলে বিমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। কারণ, উড়োজাহাজের বডির কিছু অংশ খুলে সোনা রাখা হয়। অতীতেও আমরা এমন প্রমাণ পেয়েছি। আমরা সে জায়গাগুলো তল্লাশি চালাতে চেয়েছি। কিন্তু তারা টেকনিশিয়ান নেই, বডি খুলতে হলে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে—এমন নানা ধরনের অসহযোগিতামূলক কথা বলেছে।’ 

বিমানের অসহযোগিতার কারণে কাস্টমসের অভিযানে বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আবদুর রউফ বলেন, ‘টেকনিশিয়ান নেই, কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখতে হবে—এমন নানা ধরনের অজুহাতের কারণে আমরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারিনি। 

বাংলাদেশ বিমানের যে ফ্লাইটে সোনার চোরাচালান এসেছে সে ফ্লাইটের পাইলট, কর্মীদের গ্রেপ্তার ও উড়োজাহাজটি জব্দ কেন করা হয়নি—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উড়োজাহাজ জব্দ করে সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারলে হয়তো ভালো হতো। কিন্তু বিমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রী আনা নেওয়া করে। জব্দ করলে জাতীয় সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর আমরা যেখানে মালামাল পাই, সেটা উদ্ধার করি। যদি কারও কাছে পাওয়া যায়, তখন তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কারণ, কারও কাছে পাওয়া যায়নি। এর পরের কাজ হলো তদন্তকারী সংস্থার। তারা অনুসন্ধান করে কে এনেছে বা কে পাঠিয়েছে সেটি বের করবে। আমরা মালামাল উদ্ধারের পর ফৌজদারি মামলা করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে দিই।’ 

আবদুর রউফ বলেন, ‘গতকালের অভিযানে আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও বিমানের ক্যাপ্টেন ও অন্য কর্মীদের নামের তালিকা সংগ্রহ করেছি। এ ছাড়া এই ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের নামের তালিকাও সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো তদন্তকারী সংস্থার কাছে দেওয়া হবে। এত বড় একটি সোনার চালান এল, আর কেউ দায় নেবে না—সেটা হতে পারে না। কাস্টমস আইন অনুযায়ী বিমান কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে শোকজ করা হবে।’ 

দুবাই থেকে ঢাকায় আসা সরকারি সংস্থার এই উড়োজাহাজে কতজন পাইলট ও ক্রু ছিল, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি মুহাম্মদ আবদুর রউফ। তিনি বলেন, এই উড়োজাহাজে ৪০০ সিট আছে। এমন একটি উড়োজাহাজে ২৫ থেকে ৩০ জন্য কর্মী থাকে। তদন্তে যদি এই চালানের সঙ্গে জড়িত কারও নাম আসে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

আমাকে ধর্ষণের সময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল দুই যুবক: ধর্ষণের শিকার তরুণী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত