Ajker Patrika

কাউন্সিলর হত্যাকাণ্ড: সম্ভাব্য কারণ ও সন্দেহের তির যাদের দিকে

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ০১
কাউন্সিলর হত্যাকাণ্ড:  সম্ভাব্য কারণ ও সন্দেহের তির যাদের দিকে

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও আওয়ামী লীগ নেতা হরিপদ সাহা হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় দুই ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন স্বজনেরা। নগরীর সুজানগর পূর্বপাড়ার বউবাজারের জানু মিয়ার ছেলে শাহালম ও কানু মিয়ার ছেলে সুমনের দিকেই তাঁদের সন্দেহে তির। তাঁরা আপন চাচা-ভাতিজা। 

কাউন্সিলর ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেলের ভাগনে মোহাম্মদ হানিফ মিয়ার অভিযোগ, এই দুই চাচা-ভাতিজার নেতৃত্বেই হামলা করা হয়। সম্প্রতি কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ায় তাঁরা প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। 

এদিকে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। তাঁদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। খোঁজও মিলছে না। 

স্থানীয়রা জানান, সুজানগর বউবাজার এলাকার জানু মিয়ার ছেলে শাহালম, আলম, তাঁদের ভাতিজা কানু মিয়ার ছেলে সুমন, নবগ্রাম এলাকার জেল সোহেল ও সাব্বির এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। 
 
মহানগর আওয়ামী লীগের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া জানান, পার্শ্ববর্তী ১৬ নম্বর ওয়ার্ড সুজানগর বউবাজার এলাকার সুমন, শাহালমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী দল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাউন্সিলর সোহেলকে গতকাল রাতে তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে গুলি করে। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিতে তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাও মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বেশ কয়েকজন। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাথুরিয়া পাড়ায় এক মেয়েকে হয়রানি করাকে কেন্দ্র করে সুজানগর মিলন সমিতির সামনে ১৫ নভেম্বর রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। 

বউবাজারের শাহালমের সহযোগী টিক্কাচর সুইপার কলোনির রফিক মিয়ার ছেলে সাব্বির পাথুরিয়া পাড়ায় এক মেয়েকে হয়রানি করেন। স্থানীয়রা ধাওয়া করলে তিনি পালিয়ে সুজানগর মিলন সমিতির সামনে এসে শাহালমের কাছে আশ্রয় নেন। পরে ধাওয়াকারীরা এগিয়ে এলে শাহালম ও তাঁর সহযোগী জেল সোহেলের কাছে থাকা পিস্তল বের করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তখন ধাওয়াকারীসহ আশপাশের লোকজন চলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনাটিসহ শাহালমদের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে কাউন্সিলর সোহেল প্রায়ই প্রতিবাদ করতেন। নারী হয়রানির ঘটনাটি নিয়ে সালিস বৈঠক করারও কথা ছিল। 

ওই রাতে গোলাগুলি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কাউন্সিলর সোহেল স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছিলেন, ‘শাহালম, সাব্বির ও জেল সোহেলের অত্যাচারে আমার ওয়ার্ডবাসী খুবই আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। আমার ওয়ার্ডের মানুষ অনেক শান্তিপ্রিয়। কিন্তু সন্ত্রাস, মাদক, হত্যা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলাসহ একাধিক মামলার আসামিরা পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা এ অঞ্চলকে মাদক ব্যবসার আখড়া বানিয়ে ফেলছে। এ বিষয়ে সামাজিকভাবে বসে তাদের বয়কট করা হবে।’ 

এই সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন কাউন্সিলর। সন্ত্রাসীদের দাপটে কাউন্সিলর সোহেল তাঁর অসহায়ত্বের কথা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন। সেই সাক্ষাৎকার স্থানীয় একটি অনলাইন পোর্টালে ১৬ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছিল। 

স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই ওয়ার্ডের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে কাউন্সিলরের বিরোধ চলছিল। তাঁদের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলকে হত্যা করা হয়েছে। 

এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রহিম বলেন, ‘ঘটনা ঘটার পরপরই আমরা মাঠে কাজ করছি। দুষ্কৃতকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছি। সন্দেহভাজনসহ অপরাধীদের ধরতে একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় দুই কোম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ

মহিলা মাদ্রাসা থেকে দুই শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত