Ajker Patrika

প্রতারণার ফাঁদ পাততে একে একে সাত বিয়ে

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রতারণার ফাঁদ পাততে একে একে সাত বিয়ে

দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে একজন ধনাঢ্য কাতারপ্রবাসী বলে বিয়ে করতেন প্রতারক শাকিল মাহমুদ আজাদ। অর্থ হাতিয়ে নিতে করেছেন সাত বিয়ে। একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অস্থায়ীভাবে থেকে স্থানীদের দান-খয়রাত দিয়ে নিজেকে ধনাঢ্য হিসেবে জাহির করতেন। পরে ওই এলাকায় বিয়ে করে স্থানীয়দের কাতার কিংবা সৌদিতে হজে নেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হয়ে যেতেন লাপাত্তা।

এমনই এক প্রতারণা করতে গিয়ে র‍্যাবের ফাঁদে আটকা পড়েন শাকিল মাহমুদ আজাদ। র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে র‍্যাব-১১, সিপিসি-২-এর শাকতলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের উপপরিচালক মেজর সাকিব হোসেন। তিনি বলেন, প্রতারক শাকিল মাহমুদ আজাদ কাতারফেরত। বিভিন্ন জেলায় কাতারপ্রবাসী বলে বিয়ে করতেন। পরে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনের কাতারে ও হজে নেওয়ার কথা বলে আদায় করতেন লাখ লাখ টাকা। তিনি কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার অশ্বদিয়া এলাকার বাসিন্দা।

প্রতারক আজাদ শাকিল চতুর্থ প্রতারণামূলক বিয়েটি করেন খুলনায়। সেখানকার নানান মানুষকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে পলাতক ছিলেন তিনি। এ সময় এলাকাবাসীর রোষানলে পড়ে প্রতারক আজাদের চতুর্থ স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অনেকটা বাধ্য হয়েই নারী নির্যাতন দমন আইনে আজাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেন তাঁরা।

পরে ভুক্তভোগীরা তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে মামলা করলে তাঁরাও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। আজাদ শাকিলের আসল বাড়ি কুমিল্লার বরুড়ায় জানতে পেরে ১৫ দিন আগে কুমিল্লায় আসেন আজাদের চতুর্থ স্ত্রী এবং র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‍্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে কুমিল্লার বরুড়া থানায় মামলা হয়েছে। 

ভুক্তভোগীরা বলেন, আজাদ শাকিল বিয়ের পর স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন করতেন। স্বজনদের কাছ থেকে বিদেশে লোক নেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। কেউ টাকা ফেরত চাইলে দেওয়া হতো নানান হুমকি-ধমকি। একসময় তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে হয়ে যেতেন লাপাত্তা।

র‍্যাব আরও জানায়, তিনি প্রতারণার প্রধান অস্ত্র হিসেবে বিয়েকে বেছে নেন। প্রথমে স্বল্প পরিচিত কারও এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার বাহানায় দরিদ্র-অসচ্ছল পরিবারের মেয়েকে প্রবাসী পরিচয়ে বিয়ে করতেন। এরপর এলাকায় কাতারপ্রবাসী জামাই হিসেবে নিজের পরিচয় তৈরি করতেন। এরপর নানান কৌশলে শ্বশুরবাড়ির এলাকার বেকার যুবকদের প্রবাসে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। এ সময় বিশ্বাস অর্জনের জন্য ভুক্তভোগীদের ব্যাংক চেকও দিতেন এ প্রতারক। কিন্তু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকটি থাকত ফাঁকা। এ ক্ষেত্রে বিয়ে করার সময়ই আজাদ সেসব পরিবারের মেয়েদের টার্গেট করতেন, যাঁদের তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সামর্থ্য নেই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত