Ajker Patrika

ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামির হুমকিতে এলাকা ছাড়া স্কুলছাত্রী

বরগুনা প্রতিনিধি
ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামির হুমকিতে এলাকা ছাড়া স্কুলছাত্রী

ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে এখন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। আসামি ও তার স্বজনদের হুমকিতে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে ওই ছাত্রী। এমন ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরগুনা সদর উপজেলার নদর ইউনিয়নে।

স্কুলছাত্রীর ও তার পরিবারের অভিযোগ, আসামি নাইম জামিনে মুক্ত হয়ে আপসের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে এলাকা ছেড়েছে ওই ছাত্রী। আইনগত সহায়তা চেয়ে মামলার বাদী স্কুলছাত্রীর মা বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন। 

গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে সদর উপজেলার বরগুনা সদর ইউনিয়নের আমতলী-নিমতলী এলাকার মোশারফ হোসেন হাওলাদারের ছেলে মো. নাইম হাওলাদারের (২২) বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। 

বরগুনা সদর থানায় করা মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, নাইম হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া আসার পথে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তার চিৎকারে বড় দুই বোন ছুটে এলে নাইম পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনজন মিলে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নাইমের দুই বোন ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনার পর থেকে ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ। মামলার পর গত ১৪ মার্চ নাইমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৭ দিন হাজতবাসের পর গত ১১ এপ্রিল জামিন মুক্ত হন নাইম। 

স্কুলছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, জামিনে আসার পর প্রথমে এলাকার লোকজনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব দেয় নাইমের পরিবার। আপসে রাজি না হওয়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেন নাইম। তিনি বলেন, ‘আমি মেয়েকে নিয়ে বিপদগ্রস্ত। মেয়েকে এখানে রাখা নিরাপদ মনে করছি না। ঢাকায় আমার অন্য দুই মেয়ের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’ 

স্কুলছাত্রীর বড় বোন বলেন, ‘আমার বাবা আমাদের ছোটকালে মারা গেছে। পাঁচ বোনকে পিঠা বিক্রি করে মা বড় করেছে। আমাদের তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। এই বোনটা স্কুলে পড়ত, সে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। নাইমের কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হয়েছে। এরপর সে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। মামলা করার পর জামিনে এসে নাইম ও তার পরিবার আমার বোনকে ধর্ষণ ও মাকে খুনের হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। নিরাপত্তার কারণে আমি বোনকে ঢাকায় নিয়ে গেছি।’ 

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নাইমের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। নাইমের বাবা মোশাররফ হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ওরা বোনেরা কেউ ভালো না, সবাই জানে এলাকায় ওই মেয়েগুলা কী করে! ওদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার ছেলেকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলার তদন্তে আসল সত্য বের হয়ে আসবে।’ 

বরগুনা সদর থানার আলী আহম্মেদ বলেন, ‘মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। ভুক্তভোগী যদি অনিরাপদ মনে করে তবে আইনগত সহায়তা নিতে পারে। আমরা এ ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত