Ajker Patrika

অন্যের দোষ প্রকাশ করা অনুচিত

রায়হান রাশেদ
অন্যের দোষ প্রকাশ করা অনুচিত

ইসলামে অন্যের দোষ খোঁজা ও গিবত করা নিষেধ। কারও গোপন দোষ সম্পর্কে অন্যকে সংবাদ দেওয়াও নিষেধ। একান্ত প্রয়োজনে বৃহৎ স্বার্থে কারও দোষ প্রকাশ করা জরুরি হয়ে পড়লে পরিমিত পরিমাণে মার্জিতভাবে প্রকাশ করা উচিত।

মহানবী (সা.) আসরের নামাজের পর পালাক্রমে স্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতেন। প্রত্যেকেই চাইতেন, নবীজি তাঁর ঘরে বেশি সময় যাপন করুন। নবীজির সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সদিচ্ছায় জয়নাব (রা.) তাঁকে বিকেলে মধু খাওয়াতেন। ফলে তাঁর ঘরে একটু বেশি সময় থাকতেন। অন্য স্ত্রীরা বিষয়টা পছন্দ করতেন না।

একদিন আয়েশা (রা.) ও হাফসা (রা.) ঈর্ষামাখা কথাবার্তা বললে নবীজির মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। এরপর তিনি মধু না খাওয়ার সংকল্প করেন। তাঁর এমন সংকল্পকে ‘না’ বলে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন। আল্লাহ নবীজিকে এ ব্যাপারে অনেক কিছু জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু নবীজি স্ত্রীদের বিস্তারিত জানাননি। যতটুকু জানানো একান্ত জরুরি ছিল, ঠিক ততটুকুই জানিয়েছেন। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছেন।

নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ত্রাণ নিতে গিয়ে বেনিয়ামিন যখন ইউসুফ (আ.)-এর পরিকল্পনা মোতাবেক পাত্র চুরির অপরাধে অভিযুক্ত হলেন, তখন ভাইয়েরা বলেছিলেন, ‘সে যদি চুরি করে তবে আশ্চর্যের কিছু নেই। কেননা, এর আগে তার ভাইও চুরি করেছিল।’ তাঁর সামনেই তাঁকে চোর বলা হচ্ছে—অথচ এটা ডাহা মিথ্যা কথা। তিনি এড়িয়ে গেলেন। ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাননি।

মুমিন জীবনে তথ্য হলো আমানত। আমানত রক্ষা করা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সব বৈঠক আমানতস্বরূপ।’ (আবু দাউদ: ৪৮৬৯)

সাহাবি আলি ইবনে আবি তালিব (রা.) বলেন, ‘তোমার গোপন তথ্য তোমার বন্দিস্বরূপ। যখন তুমি তা প্রকাশ করে দিলে, তখন তুমি তার বন্দীতে পরিণত হলে।’ (আদাবুদ দুনিয়া ওয়াদ দ্বিন: ৩০৬)

কারও ব্যাপারে কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় জানা থাকলেই তা দিয়ে তাকে আক্রমণ করা উচিত নয়। বা তা নিয়ে অহেতুক ঘাঁটাঘাঁটি করা উচিত নয়। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত