শাহরিয়ার হাসান, বকশীগঞ্জ, জামালপুর থেকে
একের পর এক খবর প্রকাশ করায় জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের ওপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। সেই ক্ষোভে ঘি ঢালে আদালতের এক রায়। নাদিমের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান বাবুর মামলার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। এ রায় শোনার পর তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে নাদিমকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বাবু। এক হাত ঘুরে এ কাজের দায়িত্ব যায় তিন দিন আগে উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া সহিদুর রহমান লিপনের কাছে। লিপন বিনিময়ে কোনো অর্থ-কড়ি নয় বরং দাবি করেন একটি ‘মদ পার্টির’। দুই পক্ষই এই চুক্তিতে রাজি। সেদিন সন্ধ্যাতেই লিপন তাঁতী লীগের নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের নিয়ে অংশ নেন সাংবাদিক হত্যার মিশনে।
জামালপুরের বকশীগঞ্জে নাদিম হত্যায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডের প্রথম দিনে ১৩ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার বাবু চেয়ারম্যান জিজ্ঞাসাবাদে নানা ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে যে লুঙ্গি পার্টিকে দেখেছি, তারা অনেকেই তাঁতী লীগের সদস্য। এই হত্যাকাণ্ডে তাঁদের ব্যবহার করা হয়েছে।’
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এখনো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ আসামি পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে। বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় গত বুধবার রাতে হামলার শিকার হন বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানি নাদিম। পরের দিন তিনি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে নাদিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার মূল অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের এই চেয়ারম্যানকে গতকাল সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
খুনের চুক্তি তাৎক্ষণিক
স্থানীয় লোকজন ও বকশীগঞ্জের সাংবাদিকদের ভাষ্যমতে, চেয়ারম্যান বাবুর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা আক্তারের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এ নিয়ে গত মে মাসে স্থানীয় অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক নাদিম। এতে ক্ষিপ্ত হন চেয়ারম্যান বাবু। নাদিমসহ কয়েকজনের নামে সাইবার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন বাবু। কিন্তু তা খারিজ করে দেন বিচারক। আর এই মামলা খারিজের চার ঘণ্টার মধ্যেই হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র, পুলিশ ও রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আবেদন গত বুধবার খারিজ করে দেন ময়মনসিংহের সাইবার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের কপি হাতে পেয়েই সাংবাদিক নাদিম ফোন করেন চেয়ারম্যান বাবুর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম ফয়সাল রিফাতকে। রিফাত তখন বলেন, ‘মামলা থেকে মুক্তি পেলেও তোকে ছাড়ব না।’ এরপর রিফাত বিষয়টি তাঁর বাবাকে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হন। ডেকে পাঠান উপজেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক রাকিবিল্লাহ রাকিবকে। রাকিবই উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে এই মিশন শেষ করার চুক্তি দেন। তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন। বিনিময়ে কথা দেন সদ্য সাবেক নেতা হিসেবে নতুন কমিটিসহ উপজেলার তাঁতী লীগের বিশ্বস্ত কর্মীদের নিয়ে একটি ‘মদ পার্টি’ করবেন। লিপন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন ও থানা তাঁতী লীগের কর্মী ও অনুসারীদের নিয়ে অংশ নেন সাংবাদিক নাদিম হত্যার মিশনে। সঙ্গে যুক্ত হয় ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের আরও আট-দশজন নেতা-কর্মী। লিপনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
২২ আসামির ১৬ জনই ক্ষমতাসীন দলের নেতা, বহিষ্কৃত ৬
নাদিম হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম।মামলায় মূল হোতা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করা হয়। আজকের পত্রিকা থেকে খোঁজ নিয়ে প্রত্যেকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। দেখা গেছে নামে থাকা ২২ আসামির মধ্যে ১৬ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদধারী নেতা-কর্মী।
স্থানীয় সূত্র বলছে, মামলার প্রথম আসামি বাবু চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দ্বিতীয় আসামি বাবুর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম ফয়সাল রিফাত। আসামির তালিকায় আরও আছেন গত সপ্তাহে কমিটি হওয়া তাঁতী লীগের আহ্বায়ক ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এম ডি রাকিবিল্লাহ রাকিব, উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মো. শহিদুর রহমান লিপন, সাধুপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সহসভাপতি আবু সাঈদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গাজী আমর আলী মেম্বার। উপজেলা যুবলীগ নেতা ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গোলাম কিবরিয়া সুমন, যুবলীগ নেতা ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইসমাইল হোসেন স্বপন মণ্ডল, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খন্দকার শামীম, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের তথ্য ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক মিলন মিয়া, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা যুবলীগ নেতা শেখ ফরিদ, ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা রফিকুল মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আমানুল্লাহ।
সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের পর এদের ভেতর থেকে এখন পর্যন্ত ছয় নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানতে চাইলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্বৃত্তদের কোনো দল নেই। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যাদের যাদের জড়িত থাকার তথ্য মিলবে, সবাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
অস্ত্র হাতে চেয়ারম্যানপুত্র
চেয়ারম্যানপুত্র রিফাতের পিস্তলসহ একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, আকাশি রঙের শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট পরিহিত রিফাত ডান হাতে পিস্তল নিয়ে একটি মাঠে কারও সঙ্গে দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছেন। বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এখনো রিফাতকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। রিফাত গ্রেপ্তার হলে এ অস্ত্রের রহস্য বেরিয়ে আসবে।
বরখাস্ত হচ্ছেন চেয়ারম্যান বাবু
চেয়ারম্যান বাবুকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গতকাল সোমবার এ-সংক্রান্ত নথি চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে চূড়ান্তভাবে অপসারণের লক্ষ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেন জানান সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব নূরে আলম ছিদ্দিক বলেন, সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন কাল (মঙ্গলবার) জারি হবে। সেই সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
একের পর এক খবর প্রকাশ করায় জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের ওপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। সেই ক্ষোভে ঘি ঢালে আদালতের এক রায়। নাদিমের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান বাবুর মামলার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। এ রায় শোনার পর তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে নাদিমকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বাবু। এক হাত ঘুরে এ কাজের দায়িত্ব যায় তিন দিন আগে উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া সহিদুর রহমান লিপনের কাছে। লিপন বিনিময়ে কোনো অর্থ-কড়ি নয় বরং দাবি করেন একটি ‘মদ পার্টির’। দুই পক্ষই এই চুক্তিতে রাজি। সেদিন সন্ধ্যাতেই লিপন তাঁতী লীগের নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের নিয়ে অংশ নেন সাংবাদিক হত্যার মিশনে।
জামালপুরের বকশীগঞ্জে নাদিম হত্যায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডের প্রথম দিনে ১৩ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার বাবু চেয়ারম্যান জিজ্ঞাসাবাদে নানা ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে যে লুঙ্গি পার্টিকে দেখেছি, তারা অনেকেই তাঁতী লীগের সদস্য। এই হত্যাকাণ্ডে তাঁদের ব্যবহার করা হয়েছে।’
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এখনো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ আসামি পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে। বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় গত বুধবার রাতে হামলার শিকার হন বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানি নাদিম। পরের দিন তিনি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে নাদিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার মূল অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের এই চেয়ারম্যানকে গতকাল সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
খুনের চুক্তি তাৎক্ষণিক
স্থানীয় লোকজন ও বকশীগঞ্জের সাংবাদিকদের ভাষ্যমতে, চেয়ারম্যান বাবুর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা আক্তারের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এ নিয়ে গত মে মাসে স্থানীয় অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক নাদিম। এতে ক্ষিপ্ত হন চেয়ারম্যান বাবু। নাদিমসহ কয়েকজনের নামে সাইবার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন বাবু। কিন্তু তা খারিজ করে দেন বিচারক। আর এই মামলা খারিজের চার ঘণ্টার মধ্যেই হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র, পুলিশ ও রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আবেদন গত বুধবার খারিজ করে দেন ময়মনসিংহের সাইবার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের কপি হাতে পেয়েই সাংবাদিক নাদিম ফোন করেন চেয়ারম্যান বাবুর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম ফয়সাল রিফাতকে। রিফাত তখন বলেন, ‘মামলা থেকে মুক্তি পেলেও তোকে ছাড়ব না।’ এরপর রিফাত বিষয়টি তাঁর বাবাকে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হন। ডেকে পাঠান উপজেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক রাকিবিল্লাহ রাকিবকে। রাকিবই উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি সহিদুর রহমান লিপনকে এই মিশন শেষ করার চুক্তি দেন। তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন। বিনিময়ে কথা দেন সদ্য সাবেক নেতা হিসেবে নতুন কমিটিসহ উপজেলার তাঁতী লীগের বিশ্বস্ত কর্মীদের নিয়ে একটি ‘মদ পার্টি’ করবেন। লিপন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন ও থানা তাঁতী লীগের কর্মী ও অনুসারীদের নিয়ে অংশ নেন সাংবাদিক নাদিম হত্যার মিশনে। সঙ্গে যুক্ত হয় ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের আরও আট-দশজন নেতা-কর্মী। লিপনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
২২ আসামির ১৬ জনই ক্ষমতাসীন দলের নেতা, বহিষ্কৃত ৬
নাদিম হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম।মামলায় মূল হোতা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করা হয়। আজকের পত্রিকা থেকে খোঁজ নিয়ে প্রত্যেকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। দেখা গেছে নামে থাকা ২২ আসামির মধ্যে ১৬ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদধারী নেতা-কর্মী।
স্থানীয় সূত্র বলছে, মামলার প্রথম আসামি বাবু চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দ্বিতীয় আসামি বাবুর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম ফয়সাল রিফাত। আসামির তালিকায় আরও আছেন গত সপ্তাহে কমিটি হওয়া তাঁতী লীগের আহ্বায়ক ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এম ডি রাকিবিল্লাহ রাকিব, উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মো. শহিদুর রহমান লিপন, সাধুপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সহসভাপতি আবু সাঈদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গাজী আমর আলী মেম্বার। উপজেলা যুবলীগ নেতা ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গোলাম কিবরিয়া সুমন, যুবলীগ নেতা ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইসমাইল হোসেন স্বপন মণ্ডল, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খন্দকার শামীম, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের তথ্য ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক মিলন মিয়া, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা যুবলীগ নেতা শেখ ফরিদ, ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা রফিকুল মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আমানুল্লাহ।
সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের পর এদের ভেতর থেকে এখন পর্যন্ত ছয় নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানতে চাইলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্বৃত্তদের কোনো দল নেই। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যাদের যাদের জড়িত থাকার তথ্য মিলবে, সবাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
অস্ত্র হাতে চেয়ারম্যানপুত্র
চেয়ারম্যানপুত্র রিফাতের পিস্তলসহ একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, আকাশি রঙের শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট পরিহিত রিফাত ডান হাতে পিস্তল নিয়ে একটি মাঠে কারও সঙ্গে দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছেন। বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এখনো রিফাতকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। রিফাত গ্রেপ্তার হলে এ অস্ত্রের রহস্য বেরিয়ে আসবে।
বরখাস্ত হচ্ছেন চেয়ারম্যান বাবু
চেয়ারম্যান বাবুকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গতকাল সোমবার এ-সংক্রান্ত নথি চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে চূড়ান্তভাবে অপসারণের লক্ষ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেন জানান সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব নূরে আলম ছিদ্দিক বলেন, সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন কাল (মঙ্গলবার) জারি হবে। সেই সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
রাজধানীর মিরপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইমরান খান সাকিব ওরফে শাকিল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা-পুলিশ। ডিএমপি জানায়, শাকিল পেশাদার ছিনতাইকারী। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে গাজীপুরের পুবাইল থানার কুদাব পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়...
২১ দিন আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় ‘আপন কফি হাউসে’ তরুণীকে মারধরের ঘটনায় কফি হাউসের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন।
২৪ দিন আগেক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ল অমানবিক দৃশ্য— মেয়েটিকে বেশ কিছুক্ষণ ধমকানো হলো। এরপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে যেন মানুষ নয়, পথের ধুলো। এর মধ্যেই এক কর্মচারী হঠাৎ মোটা লাঠি নিয়ে আঘাত করে তাঁর ছোট্ট পায়ে। শিশুটি কাতরাতে কাতরাতে পাশের দুটি গাড়ির ফাঁকে আশ্রয় নেয়। কিন্তু নির্যাতন থামে না, সেই লাঠি আব
১৪ এপ্রিল ২০২৫টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘ধর্ষণ’ শব্দ ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। তিনি এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অপরাধকে লঘু করার কোনো...
১৬ মার্চ ২০২৫