Ajker Patrika

বংশীপারের খাসজমিতে এখনো হাজারো স্থাপনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২২, ১২: ২২
বংশীপারের খাসজমিতে এখনো হাজারো স্থাপনা

ঢাকা জেলার বংশী নদী ও দুই পারের খাসজমিতে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে সাভার নামাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বহাল তবিয়তেই রয়েছে বাকি স্থাপনাগুলো।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাভারের ফুলবাড়িয়া থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কয়েক যুগ ধরে বংশী নদী ও তীর দখল হয়ে আসছে। এর মধ্যে সাভারের খঞ্জনকাঠি, সাভার ও বাগধনিয়া মৌজায় দখলের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

গত শনিবার সাভার মৌজার নামাবাজার এলাকায় গিয়ে একপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়ে। বাজারের একাংশে বংশী নদী ও তীরের খাস জমিতে গড়ে ওঠা স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এই ব্যবস্থা নেয়। তবে পাশের মুক্তিযোদ্ধা পল্লিসহ কিছু স্থাপনা এখনো অক্ষত রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সাভার থানা ভবন থেকে ১০০ ফুট দূরে মুক্তিযোদ্ধা পল্লি। প্রায় এক যুগ আগে বংশী নদী ও তীরের খাসজমিতে গড়ে ওঠা ওই পল্লিতে পাকা ও আধা পাকা ৬০টি বাড়ি ছিল। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানকার ১৫টি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে নদীর তীর থেকে ৫০ ফুট দূরে বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আলী হোসেনের দ্বিতীয় তলা বাড়ি। এই বাড়িটির পশ্চিম পাশের ১৫টি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হলেও তাঁর বাড়ি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।

জানতে চাইলে এস এম আলী হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতাদের মাধ্যমে বংশী নদীর তীরে তিন শতাংশ করে খাসজমির দখল পেয়েছিল ৫৪টি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। পরবর্তী সময়ে আরও ছয়টি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নদী ও তীর দখল করে বাড়ি নির্মাণ করে। ওই ছয়টি বাড়িসহ ১৫টি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমার বাড়িসহ অন্য সব বাড়ি কেন ভেঙে দেয়নি, তা আমার জানা নেই।’

মুক্তিযোদ্ধা পল্লির বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল বাড়ি বলেন, ‘আমরা মাত্র ১৪টি পরিবার একসঙ্গে রয়েছি। বাকি ৪৫টি পরিবারের কেউ এখানে থাকেন না। বাড়ি ভাড়া দিয়ে নিজেদের বাড়ি অথবা ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। মাসের শেষে এসে শুধু ভাড়া নিয়ে যান।’

জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা পল্লির আহ্বায়ক মোবারক হোসেন বলেন, ‘সরকারের প্রয়োজনে ১৫টি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। প্রয়োজন হলে বাকি বাড়িও ভেঙে দেবে। এটা সরকারের মর্জির ব্যাপার। আমরা কী করে বলব? তবে আমরা বন্দোবস্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি, যাতে বাকি বাড়িগুলো ভাঙা না পড়ে।’

খঞ্জনকাঠি মৌজায় বংশী নদীর তীরে খাস জমিতে গড়ে উঠেছে বিশাল পল্লি, স্থানীয়ভাবে এটি সিরাজগঞ্জ পল্লি হিসেবে পরিচিত। ওই পল্লিতে কয়েক হাজার দখলদার রয়েছেন।

জানতে চাইলে পল্লির বাসিন্দারা বলেন, তাঁরা এলাকার প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যুদের শতাংশপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে খাসজমির দখল নিয়ে বসবাস করছেন।

এদিকে নয়ারহাট বাজার এলাকায় গিয়ে দোকানের সামনে উপজেলা প্রশাসনের নোটিশ চোখে পড়ে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ওই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত তাঁরা একটি স্থাপনাও অপসারণ করেননি।

ব্যবসায়ী গোপাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ সরকারি দলের নেতারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে আমাদের দোকানগুলো ভাঙা না পড়ে। এ কারণে আমরা স্থাপনা অপসারণ করিনি।’

জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর জায়গা অবৈধভাবে দখলে রাখার কোনো সুযোগ নেই। সাভার নামাবাজার এলাকায় নদীর দখলদারদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। তবে খাসজমির দখলদারদের বিষয়ে বিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্কর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

পাকিস্তানে হামলায় ভারত এক দিনেই হারিয়েছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি রুপির সামরিক সরঞ্জাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত