কামরুল হাসান

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে