Ajker Patrika

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়ে গেছে: ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ২২: ১৪
লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ছবি: এএফপি
লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ছবি: এএফপি

দুই দিনের আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রয়োজনে চীনের কাছ থেকে দুর্লভ খনিজ পদার্থ পাবে। অন্যদিকে চীনা শিক্ষার্থীরা পাবেন মার্কিন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দুর্লভ খনিজ পদার্থের ‘চীনা রপ্তানি’ ছিল মূল বিষয়। দুই দিনব্যাপী আলোচনার পর একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তবে চূড়ান্ত বাস্তবায়নের আগে এটি ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, এখন কেবল প্রেসিডেন্ট সি ও আমার অনুমোদন প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় দুর্লভ খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে রাজি হয়েছে চীন। একইভাবে আমরা চীনের শিক্ষার্থীদের আমাদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেব।’

মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, এই চুক্তির ফলে দুর্লভ খনিজ পদার্থ ও ম্যাগনেটের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোর সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিল, চীন স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক যান তৈরির জন্য অপরিহার্য এই ধাতুগুলোর রপ্তানিতে ধীরগতি দেখাচ্ছে।

অন্যদিকে ওয়াশিংটন চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পর্কিত প্রযুক্তি যেমন—সেমিকন্ডাক্টর ও অন্যান্য পণ্যে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে।

লুটনিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জেনেভা ঐকমত্য বাস্তবায়নের জন্য একটি কাঠামোতে পৌঁছেছি। একবার দুই প্রেসিডেন্ট এটি অনুমোদন করলে আমরা তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’

গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সি চিন পিংয়ের মধ্যে ফোনকলের পর এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। চীনের উপবাণিজ্যমন্ত্রী লি চেংগ্যাং নিশ্চিত করেছেন, ‘উভয় পক্ষ ৫ জুন ফোনকলের সময় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে পৌঁছানো ঐকমত্য এবং জেনেভার বৈঠকে পৌঁছানো ঐকমত্য বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে একটি কাঠামোতে পৌঁছেছে।’

উল্লেখ্য, এই বছরের শুরুতে যখন ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানিতে ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, তখন চীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বেইজিং এর জবাবে মার্কিন আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে, যা পাল্টাপাল্টি বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

গত মে মাসে জেনেভায় দীর্ঘ আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের পণ্যের ওপর থেকে সাময়িকভাবে শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, ৯০ দিনের আলোচনা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করে। অন্যদিকে চীনও তাদের পাল্টা শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে।

তবে এর দুই সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার অভিযোগ করেন, চীন কিছু মার্কিন কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করেছিল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে চীনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা এখনো সেটা করেনি। অন্যদিকে বেইজিং অভিযোগ করে, যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের চিপ ব্যবহারে সতর্কতা, চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও সফটওয়্যার রপ্তানি বন্ধ করে চুক্তি ভঙ্গ করেছে।

এই সপ্তাহের আলোচনার আগে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা কিছু দুর্লভ খনিজ রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে, যদিও কোন দেশগুলো এই অনুমোদনের আওতায় পড়েছে, তা জানায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত