Ajker Patrika

চীনা বিনিয়োগ হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, তহবিল পাচ্ছে যুক্তরাজ্য-সৌদি আরব

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ০৫
চীনা বিনিয়োগ হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, তহবিল পাচ্ছে যুক্তরাজ্য-সৌদি আরব

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি ইকুইটি খাতে নতুন করে বিনিয়োগ থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত চীনা ফান্ডগুলো। এতে মার্কিন আর্থিক খাতে দীর্ঘদিনের চীনা প্রভাব কমতে পারে। এটি বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রবণতায়ও বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চলতি বছর মার্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা রপ্তানি পণ্যের ওপর নতুন করে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর পাল্টায় চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসায়। এই ‘ইটের বদলে পাটকেল’ নীতি বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা ও বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তার ধরে রাখার চীনা কৌশলকে মুখোমুখি সংঘাতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশনের (সিআইসি) মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ১.৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার এবং স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগ ছিল ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। দুটি প্রায় ২৫ শতাংশ বিকল্প ফান্ডে বিনিয়োগ করে, যার বড় অংশই ছিল মার্কিন বেসরকারি ইকুইটি খাতে।

কিন্তু চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে সিআইসি আর যুক্তরাষ্ট্রে নতুন কোনো ইকুইটি তহবিলে বিনিয়োগ করছে না। এমনকি আগের প্রতিশ্রুত কিছু বিনিয়োগ থেকেও পিছিয়ে এসেছে বলে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত দুই দশকে ব্ল্যাকস্টোন, টিপিজি, কারলাইল, থোমা ব্র্যাভো ও ভিসটা ইকুইটির মতো নামকরা মার্কিন ফার্মে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে এই চীনা দুই প্রতিষ্ঠান। ২০০৭ সালে ব্ল্যাকস্টোনে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল সিআইসি। পরে ২০১৮ সালে সেটা বিক্রি করে দেয়।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য সিআইসি ও গোল্ডম্যান স্যাশ যৌথ তহবিল গঠন করেছিল।

শুধু চীন নয়, কানাডা ও ইউরোপের বড় পেনশন ফান্ডগুলোও এখন মার্কিন প্রাইভেট ইকুইটি ফার্মে নতুন বিনিয়োগ করা নিয়ে ভাবছে। কারণ, মার্কিন রাজনৈতিক নীতি ও বাণিজ্য প্রতিরোধমূলক অবস্থান বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।

ব্ল্যাকস্টোনের প্রেসিডেন্ট জনাথন গ্রে এক আয় প্রতিবেদনে বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা এখন জিজ্ঞাসা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসলে কী ঘটছে এবং কোথায় নিরাপদ বিনিয়োগ করা সম্ভব?

এখন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সরাসরি মার্কিন কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করে যৌথ বিনিয়োগ কাঠামোর মাধ্যমে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, জাপান ও ইতালির মতো দেশগুলোতে তহবিল স্থানান্তর করছে সিআইসি। বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব ধরে রাখার জন্য এটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।

চীনের পিছু হটা শুধু ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার ফল নয়, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য আর্থিক সংঘাত এড়ানোর পদক্ষেপও এটি। ফলে মার্কিন প্রাইভেট ইকুইটি খাত একদিকে যেমন অর্থায়নের একটি বড় উৎস হারাতে বসেছে, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী বিকল্প বিনিয়োগ প্রবণতাও নতুন দিকে মোড় নিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত