Ajker Patrika

আমানতের অর্থে অনিয়ম: উত্তরা ফাইন্যান্সের পর্ষদ পুনর্গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আমানতের অর্থে অনিয়ম: উত্তরা ফাইন্যান্সের পর্ষদ পুনর্গঠন

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন চারজনকে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর আগের পরিষদের তিনজনকে বহাল রাখা হয়েছে।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আমানতকারীর অর্থে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক। তিনি জানান, আগেই প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে এই চারজনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। আর আগের পর্ষদ থেকে ২-৩ জনকে পুনবহাল করা হতে পারে। 

মেজবাউল হক আরও জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে ১২ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে থেকে এই চারজনকে পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। তবে এখনো চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়নি। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রমতে, নতুনভাবে যাদের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন মেজর জেনারেল (অব) মো. মাকসুদুর রহমান, মোহাম্মদ মইনুর চৌধুরী, মাহমুদ হোসাইন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী। আর আগের পর্ষদ থেকে পুনর্বহাল হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন, পরিচালক তাহমিনা রহমান এবং আগের পর্ষদের স্বতন্ত্র পরিচালক এএস জহির মুহাম্মদ ও মায়া রানী রায়। 

প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে (২০১৯) উত্তরা ফাইন্যান্সের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর ওপর পরিদর্শন করে আমানতকারীদের অর্থ নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার বিভিন্ন তথ্য পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতের টাকা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা না করা, কলমানির টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালকের ব্যক্তিগত কাজে খাটানো, অগ্রিম ও প্রি-পেমেন্টের নামে নিয়মবহির্ভূতভাবে অর্থ বের করাসহ অন্তত ৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকার অনিয়ম ধরা পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির তখনকার এমডি ও কয়েকজন পরিচালক মিলে এ অনিয়ম করেন। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘আমানতের অর্থে উত্তরা ফিন্যান্সের স্বেচ্ছাচার’ শিরোনামে প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

পরে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা ফিন্যান্সের ২০১৯ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর ওপর পরিদর্শন করে। ২০২০ সালে দীর্ঘ পরিদর্শন শেষে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে দিকনির্দেশনা দেয়। পরে বহিনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান রহমান হকের বিশেষ নিরীক্ষায়ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। গত ২৩ জুন তৎকালীন এমডি এসএম শামসুল আরেফিনকে অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

এক সময় দেশের অন্যতম সেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ছিল উত্তরা ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে মূলত উত্তরা গ্রুপের কর্তৃত্বে। তবে জালিয়াতির তথ্য ফাঁসের পর প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত চিত্র সামনে আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত