Ajker Patrika

হুন্ডির ঝুঁকিতে প্রবাসী আয়

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৪৩
হুন্ডির ঝুঁকিতে প্রবাসী আয়

করোনাকালে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের রেকর্ডপ্রবাহ থাকলেও করোনা সহনীয় হতে থাকায় এ ধারা অব্যাহতভাবে নেতিবাচক হচ্ছে। টানা চার মাস প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর হার কমছে। হুন্ডি বেড়ে যাওয়া এবং শ্রমবাজার সংকুচিত হওয়ায় রেমিট্যান্সপ্রবাহে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যাংকাররা জানান, রেমিট্যান্সপ্রবাহ নেতিবাচক হলেও তাঁরা আশাবাদী। কারণ ডলারের দামে চাঙাভাব থাকায় প্রবাসীরা বাড়তি সুবিধা পাবেন বলে বেশি টাকা পাঠাবেন। আবারও খাতটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, করোনার শুরু থকেই প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। তবে টানা চার মাস এটি কমছে। গত বছরের আগস্টে ১৯৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। চলতি বছরের আগস্টে তা নেমে এসেছে ১৮১ কোটি মার্কিন ডলারে। এর আগে জুলাইয়ে ১৮৭ কোটি ডলার ও জুনে ১৯৪ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। ওই দুই মাসেও আগের বছরের চেয়ে কম এসেছে। সামনে এটি আরও কমবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার মধ্যে সবকিছু নেতিবাচক থাকলেও দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসার গতি ছিল ইতিবাচক। ওই সময়ে অনিশ্চয়তার কারণে অনেক প্রবাসী তাঁদের জমানো টাকা দেশে পাঠান। আর ওই সময় মানুষের চলাচল কম থাকায় হুন্ডি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া, সরকার বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ায় রেমিট্যান্স আসা বেড়ে যায়। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হতে থাকায় এবং আকাশপথে যোগাযোগ চালুর পর হুন্ডির আশঙ্কাও বেড়ে গেছে। অনেকে মনে করেন, হুন্ডির চক্রটি আবারও সক্রিয় হতে পারে। এর ফলে অবৈধ পথে টাকা পাঠানো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া করোনার কারণে গত দুই বছরে প্রায় ৫ লাখ কর্মী ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ ফিরে গেলেও বড় অংশ এখনো ফিরতে পারেনি।

রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রেমিট্যান্সে একটু নেতিবাচক ধারা আছে। তবে আমি মনে করি না, এটা দীর্ঘায়িত হবে। কারণ, এখন লোকজনের বিদেশে যাওয়া শুরু হয়েছে। রোমানিয়াসহ কয়েকটি দেশে নতুন আরও লোকজন যাবে। ইউরোপের আউটলেটগুলো খুলছে, সেখানে লোকের চাহিদা বাড়ছে, কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। প্রবাসীদের আয় বাড়বে সন্দেহ নেই। তাঁরা আবারও টাকা পাঠাতে শুরু করবেন।’ সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ায় এখন হুন্ডি বেড়ে যাবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হুন্ডিও একটু বেড়ে গেছে বলে মনে হয়। হুন্ডি হয়তো আমরা পুরো নির্মূল করতে পারব না। তবে এটা যে কমে আসবে, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’

এদিকে, বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার কিছুটা সংকুচিত হওয়ার কারণেও রেমিট্যান্সপ্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। জানা যায়, পুরোনো শ্রমবাজারে মন্দা ও নতুন শ্রমবাজার তৈরি করতে না পারায় চার বছর ধরে বিদেশে কর্মী পাঠানো কমছে। এর মধ্যে করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি কমেছে গত দুই বছরে। রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রা বলছে, এককভাবে সৌদি আরবই সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। তবে গত দুই বছরে সেখানেও নানা প্রতিবন্ধকতা, বিধিনিষেধের কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত