Ajker Patrika

মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

বাসস, ওয়াশিংটন ডিসি 
আপডেট : ০৩ মে ২০২৩, ১৩: ৫৪
মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল ও ফার্মাসিউটিক্যালে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি শুধু মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ চালুর প্রস্তাব করেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের আমাদের নবায়নযোগ্যযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদিসহ অনেক গতিশীল ও সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

‘ইউএস-বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশিপ: শেয়ার্ড ভিশন ফর স্মার্ট গ্রোথ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিলের মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ইউএস বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট পোর্টাল উদ্বোধন করেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ইউএস চেম্বার অব কমার্স ওয়াশিংটন, ডিসির গ্রেট হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের যাত্রায় অংশীদার হিসেবে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আমি আজকে এখানে আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ২৯টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করছে। 

প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলে বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে আইন দ্বারা বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা, ট্যাক্স হলিডে, রয়্যালটি রেমিট্যান্স, বাধাহীন প্রস্থান নীতি, লভ্যাংশ ও মূলধন সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তনের সুবিধা রয়েছে। 
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ জলবায়ু উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করছে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে আমাদের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের বৃহত্তম উৎস, দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন অংশীদার এবং প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।’ 

দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের জন্য পারস্পরিক সুবিধা ও সমৃদ্ধি অর্জন করা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১-২০২২ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ দশমিক ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।’ 

উপকূলীয় অঞ্চলে বাংলাদেশে একটি শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাপানের প্রস্তাবের উদাহরণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নীত করা। সরকারের প্রচেষ্টায় গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ইদানীং বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভ্যালু দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্র্যান্ড ফাইন্যান্স ইউকে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভ্যালু গত বছর ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ এবং গ্লোবাল সফট পাওয়ার ইনডেক্স ২০২৩ অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা। এই রূপকল্প ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত দেশে পরিণত করবে।’ 

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক এবং চেয়ারম্যান এক্সেলরেট এনার্জি স্টিভেন কোবোস, বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের গ্লোবাল চেয়ার ইমেরিটাস (বিসিজি) হ্যান্স-পল বার্কনার, মাস্টারকার্ডের গ্লোবাল পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক পলিসি অপারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রবি আরোরা, বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এরিক ওয়াকার এবং গ্লোবাল হেড অব এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড নিউজ এক্সনমোবিলের ভেঞ্চার জন আর্ডিল উচ্চ স্তরের গোলটেবিলে বক্তৃতা করেন। 

উপস্থিত ছিলেন টইউজের পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স-এশিয়া প্যাসিফিক মাইক অরগিল, ইউএস চেম্বার অব কমার্সের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান মিলার, ইউএস চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী পরিচালক সন্দীপ মাইনি এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক সিদ্ধান্ত মেহরা। 

প্রধানমন্ত্রী এর আগে ইউএস চেম্বার অব কমার্সের ব্রিফিং সেন্টারে ইউএসবিবিসির সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে দুটি পৃথক বৈঠকে এবং ইউএস চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইওদের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে যোগ দেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি গর্বিত নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছে। বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি এবং বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি। অনুমান করা হচ্ছে, এই অর্থনীতি ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত