নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিশ্ব অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ কিছুটা উন্নতি করতে পেরেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের অর্থনীতি কিছুটা গতিপথ বদলেছে। এতে টাকার অঙ্কে জিডিপি বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। বর্তমান নানা সমস্যার মধ্যে দেশের অর্থনীতি সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, এটিই একধরনের সান্ত্বনা। যদিও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের প্রবৃদ্ধি বিশেষত দরিদ্র জনগণের জন্য লাভজনক নয়; কারণ, এটি তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের পথ সুগম করে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রতিবেদন তথ্যমতে, এই সময়ে চলতি মূল্যে দেশের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা বেড়েছে দেশের জিডিপির আকার। তবে এসব ইতিবাচক তথ্যের মধ্যে কিছু বিরূপ দিকও রয়েছে। যেমন স্থির মূল্যে জিডিপির আকার ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা হয়েছে, যা কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতের উন্নতি প্রতিবন্ধকতার জন্য দায়ী। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছর পর প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়লেও তা এতটা উল্লেখযোগ্য নয়। তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।
প্রতিবেদন তথ্যানুযায়ী, প্রথমত, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের অর্থনীতি কিছুটা স্থবিরতা দেখিয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে অর্থনীতি অনেকটাই অচল হয়ে পড়ে, তবে সরকারের পদক্ষেপের ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা কিছুটা সচল হয়। ফলে এই সামান্য উন্নতি।
বিভিন্ন খাতের প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা অনেকটাই হতাশাজনক। এই খাতের সংকট শুধু কৃষকের আয় বা উৎপাদন কমানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং গ্রামীণ জীবনের টেকসই উন্নতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি খাতে এ ক্ষেত্রে আরও অধিক সেবা ও সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে তা বৃদ্ধি পায় এবং দেশের বৃহত্তর জনগণের উপকার হয়।
অন্যদিকে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বেশ উল্লেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা জানান, শিল্প খাতে এই প্রবৃদ্ধি মূলত চাহিদানির্ভর এবং উৎপাদিত পণ্যের মজুত কম থাকার কারণে হয়েছে। এর আগে প্রথম প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা তুলনায় কিছুটা কম ছিল।
সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও কৃষি এবং সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় কমেছে। এটি মোটেও সুখকর চিত্র নয়, বিশেষ করে যাঁরা কৃষির ওপর নির্ভরশীল বা যাঁদের জীবিকা সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল।
ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরি মন্তব্য করেছেন, এই প্রবৃদ্ধি যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে দরিদ্র জনগণের অবস্থা পাল্টাতে কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। বিশেষ করে খাদ্যনিরাপত্তা এবং গ্রামীণ জীবিকার ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর সমাধান আসবে না।
এ ছাড়া স্থির মূল্যে জিডিপির আকারে বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভবত এই উন্নতির জন্য একটি ভালো সংকেত হলেও এর গতি অনেক কম এবং এর পেছনে যে কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। সুতরাং, দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও কৌশলগুলো আরও লক্ষ্যভিত্তিক হওয়া উচিত, যাতে দেশের সব শ্রেণির মানুষের জন্য উন্নতির সুযোগ তৈরি হয়, বিশেষত যাদের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে একটি অস্থির সময় পার করছে, যেখানে কিছু খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, কিন্তু অন্য দিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতের প্রবৃদ্ধি কমেছে। সরকারের উচিত হবে একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা, যাতে প্রতিটি খাতের প্রবৃদ্ধি এবং উন্নতি দেশের সব মানুষের জন্য উপকারী হয়ে উঠবে।
আরও খবর পড়ুন:
বিশ্ব অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ কিছুটা উন্নতি করতে পেরেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের অর্থনীতি কিছুটা গতিপথ বদলেছে। এতে টাকার অঙ্কে জিডিপি বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। বর্তমান নানা সমস্যার মধ্যে দেশের অর্থনীতি সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, এটিই একধরনের সান্ত্বনা। যদিও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের প্রবৃদ্ধি বিশেষত দরিদ্র জনগণের জন্য লাভজনক নয়; কারণ, এটি তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের পথ সুগম করে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রতিবেদন তথ্যমতে, এই সময়ে চলতি মূল্যে দেশের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা বেড়েছে দেশের জিডিপির আকার। তবে এসব ইতিবাচক তথ্যের মধ্যে কিছু বিরূপ দিকও রয়েছে। যেমন স্থির মূল্যে জিডিপির আকার ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা হয়েছে, যা কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতের উন্নতি প্রতিবন্ধকতার জন্য দায়ী। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছর পর প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়লেও তা এতটা উল্লেখযোগ্য নয়। তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।
প্রতিবেদন তথ্যানুযায়ী, প্রথমত, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের অর্থনীতি কিছুটা স্থবিরতা দেখিয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে অর্থনীতি অনেকটাই অচল হয়ে পড়ে, তবে সরকারের পদক্ষেপের ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা কিছুটা সচল হয়। ফলে এই সামান্য উন্নতি।
বিভিন্ন খাতের প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা অনেকটাই হতাশাজনক। এই খাতের সংকট শুধু কৃষকের আয় বা উৎপাদন কমানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং গ্রামীণ জীবনের টেকসই উন্নতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি খাতে এ ক্ষেত্রে আরও অধিক সেবা ও সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে তা বৃদ্ধি পায় এবং দেশের বৃহত্তর জনগণের উপকার হয়।
অন্যদিকে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বেশ উল্লেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা জানান, শিল্প খাতে এই প্রবৃদ্ধি মূলত চাহিদানির্ভর এবং উৎপাদিত পণ্যের মজুত কম থাকার কারণে হয়েছে। এর আগে প্রথম প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা তুলনায় কিছুটা কম ছিল।
সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও কৃষি এবং সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় কমেছে। এটি মোটেও সুখকর চিত্র নয়, বিশেষ করে যাঁরা কৃষির ওপর নির্ভরশীল বা যাঁদের জীবিকা সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল।
ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরি মন্তব্য করেছেন, এই প্রবৃদ্ধি যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে দরিদ্র জনগণের অবস্থা পাল্টাতে কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। বিশেষ করে খাদ্যনিরাপত্তা এবং গ্রামীণ জীবিকার ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর সমাধান আসবে না।
এ ছাড়া স্থির মূল্যে জিডিপির আকারে বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভবত এই উন্নতির জন্য একটি ভালো সংকেত হলেও এর গতি অনেক কম এবং এর পেছনে যে কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। সুতরাং, দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও কৌশলগুলো আরও লক্ষ্যভিত্তিক হওয়া উচিত, যাতে দেশের সব শ্রেণির মানুষের জন্য উন্নতির সুযোগ তৈরি হয়, বিশেষত যাদের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে একটি অস্থির সময় পার করছে, যেখানে কিছু খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, কিন্তু অন্য দিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতের প্রবৃদ্ধি কমেছে। সরকারের উচিত হবে একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা, যাতে প্রতিটি খাতের প্রবৃদ্ধি এবং উন্নতি দেশের সব মানুষের জন্য উপকারী হয়ে উঠবে।
আরও খবর পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়া ও বে টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে চায় চায় সরকার। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা চার গুণ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেদেশের বড় রপ্তানিমুখী ব্যাগ ও লাগেজ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ছিল মোংলার ইপিজেডে থাকা ভারতীয় মালিকানাধীন ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড। ২০১৪ সাল থেকে এখানে তাদের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছিল এবং সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ভিআইপির মোংলা কারখানায় অগ্নিকাণ্ড
৯ ঘণ্টা আগেকাস্টমসের নতুন শুল্কনীতির কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে মাছ আমদানি বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকেরা। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দুই দিনে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। ভারত থেকে যেসব খাদ্যদ্রব্য আমদানি করা হয়, তার মধ্যে বড় একটি অংশ হচ্ছে হিমায়িত মিঠাপানির ও সামুদ্রিক মাছ।
৯ ঘণ্টা আগেচাকরি পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এ অভিযোগ এনে ঘটনার বিচার ও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের দাবি জানান। তাঁরা চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ারের নিকটাত্মীয়
১০ ঘণ্টা আগে