Ajker Patrika

উচ্চ পর্যায়ের নীরবতায় বেসামাল অর্থ পাচার

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১৫: ২৯
উচ্চ পর্যায়ের নীরবতায় বেসামাল অর্থ পাচার

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনও বেনামী এবং ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনও ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল। 

এখন সরকারের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে নানা মহলের আলোচনা নতুন করে উঠছে। একই সঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ তাঁর সহচরদের দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিও টেনে আনা হচ্ছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীরাই এখন সব বিষয় সামনে আনছেন। তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। দাবি করছেন পদত্যাগেরও। একটা পর্যায়ে গতকাল বুধবার গভর্নরের অন্যতম সহচর হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ আরও দুই গভর্নরের পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন ক্ষুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে কাজী সাইদুর রহমান ছাড়া অন্যরা কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি। হদিস নেই গভর্নরসহ অনেকের। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গভর্নরের বিষয়ে জানা নেই। ডেপুটি গভর্নর এবং বিএফআইইউ প্রধানদের পদত্যাগের বিষয়ে দাবি তুলেছেন কিছু ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলাপি এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিএফআইইউয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কাজ অর্থ পাচার রোধ করা। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না। পাচারকারী ধরার মতো আইনি এবং কাঠামোগত সক্ষমতা নেই তাদের। পাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন, ব্যাংক এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত পাচার হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের ঋণ ও করখেলাপি এবং অর্থ পাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণেই এগুলো বেড়েছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার ফলে জাতি আজ অনেক কিছু দেখছে। তিনি এ পরিস্থিতির উত্তরণে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সম্ভাব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খেলাপি ঋণ আদায় এবং পাচার রোধ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। 

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার-সংকট দেখা দিলে পাচার কমাতে বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিশেষ করে আমদানি এবং রপ্তানি করা পণ্যের অনলাইন দর মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার প্রায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া ব্যাংকের ঋণের নামে অর্থ লুট ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে শর্ত আরোপ এবং হুন্ডি ঠেকাতে খোলাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অর্থ পাচার বেসামাল হয়ে পড়ে। সরকারের বিশেষ মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠজন ও একটি বিশেষ গ্রুপকে বাঁচাতে হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের মতো সংস্থাগুলো। 

এ বিষয়ে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএফআইইউর একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব না। পাচার রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে পাচার বেড়ে গেছে। এমনকি ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে। 
বাংলাদেশে অর্থের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনটির নাম ছিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২। এ আইনের বিধানাবলি অপর্যাপ্ত থাকায় ২০০৮ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে লন্ডারিং আইন-২০০৯ বাতিল করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ নামেই পরিচিত। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার রোধে দুটি প্রক্রিয়া উল্লেখ্য। প্রথমটি প্রতিকারমূলক এবং অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু সংস্থাগুলো ঠিকমতো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। 

সূত্র জানায়, দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পুনঃ পুনঃ পুনঃ তফসিলের কারণে ব্যাংক খাতে অর্থের টান পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

দেশের ব্যাংকিং সেবাকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিজিটাল পরিসরে। এ লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে অ্যাপনির্ভর ব্যাংক গঠনের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে দেশি ও বিদেশি ১২টি প্রতিষ্ঠান নতুন প্রজন্মের এই ব্যাংক স্থাপনে আগ্রহ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদনের আবেদন করেছে। প্রস্তাবিত এসব ব্যাংকের থাকবে না কোনো শাখা, অবকাঠামো বা এটিএম বুথ; গ্রাহকেরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই ২৪ ঘণ্টায় যেকোনো সময় পাবেন সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।

নতুন যুগের আবেদনকারীরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক (বাংলালিংক ও স্কয়ার), মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক। আবেদনের শেষ সময় ২ নভেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে এই ১২ প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়েছে।

মূলধনে বড় শর্ত

২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রণীত বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানি আইন অনুসারে পরিচালিত হতে হবে এবং প্রচলিত ব্যাংকের মতোই সিআরআর (নগদ জমা অনুপাত) ও এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা অনুপাত) বজায় রাখতে হবে।

এই ব্যাংকগুলো বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না এবং কোনো ধরনের ঋণপত্র (এলসি) খুলতেও পারবে না। কেবল ক্ষুদ্রঋণ, খুচরা পর্যায়ের লেনদেন এবং ডিজিটাল সেবা প্রদানের সুযোগ থাকবে। অনুমোদনের পাঁচ বছরের মধ্যে আইপিও আনতে হবে, যার পরিমাণ উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের সমান হতে হবে।

অ্যাপেই পুরো ব্যাংকিং

প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকগুলো হবে সম্পূর্ণ অ্যাপনির্ভর। কোনো শাখা বা এটিএম থাকবে না; বরং গ্রাহকেরা ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড এবং মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে সব সেবা নিতে পারবেন। প্লাস্টিক কার্ডের পরিবর্তে সব লেনদেন হবে ডিজিটাল উপায়ে। গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম বা এজেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। সব সেবা পরিচালিত হবে বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন, ২০১৪-এর আওতায়; যা ডিজিটাল লেনদেনে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

যোগ্যতার কঠোর মানদণ্ড

কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের সদস্য এই ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হতে ব্যাংকিং পেশায় অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া পর্ষদের অন্তত ৫০ শতাংশ সদস্যকে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং, সাইবার নিরাপত্তা ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।

ক্যাশলেস সমাজের পথে

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকের লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া।’ তিনি জানান, এসব ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং ক্যাশলেস সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

যাচাইয়ের পর অনুমোদন

প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর টেকনিক্যাল ও বিজনেস কমিটি নম্বরের ভিত্তিতে যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে। নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণরা ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ পেয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবে। চূড়ান্ত সনদ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নতুন বছরের প্রথমে শুরু হতে পারে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম।

চ্যালেঞ্জ এখন দক্ষতার

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রথাগত ব্যাংকে ডিজিটাল সেবা হালনাগাদ রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক সময়ের দাবি। তবে এই ব্যাংক পরিচালনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দক্ষ জনবল পাওয়া, পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা, জনসচেতনতা ও বিপণন কৌশল তথা নিয়ন্ত্রণ কাঠামো শক্ত রাখা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ডেনিম শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো’-এর ১৯ তম আসর আজ। দুই দিনের এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে ৫ ও ৬ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)।

এ বছর প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১০টি দেশ থেকে ৪৫ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

এরা মূলত ফ্যাব্রিক মিল (ডেনিম ও নন-ডেনিম), গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক, সুতা উৎপাদক, ওয়াশিং ও লন্ড্রি, অ্যাকসেসরিজ ও ট্রিমস, কেমিক্যালস, মেশিনারি বা প্রযুক্তি এবং লজিস্টিকস ক্যাটাগরিতে পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি

সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিবিধান ভঙ্গের দায়ে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আজ মঙ্গলবার সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৮০ তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভা শেষে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১ হাজার কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক এবং অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি। মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশীপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে; কিন্তু ব্যাংকটি ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়।

বিএসইসি এও জানায়, এর আগে ৯৬৫ তম কমিশন সভায় ওই বন্ডের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। একই অপরাধে এবার ব্যাংকের তৎকালীন এমডি শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন তুলায় শুল্কছাড়ে স্পষ্টতা চায় বিজিএমইএ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পোশাক উৎপাদনে ন্যূনতম ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক থেকে বাংলাদেশের আনুপাতিক ছাড় পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা বাস্তবায়ন নির্দেশনা না থাকায় দ্রুত স্পষ্টীকরণ চেয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরে বিজিএমইএ। বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে মার্কিন তুলার ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ঘোষিত শুল্ক সুবিধা বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান ও পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা। মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন ইকমের লি ইন, কারগিলের ক্রিস্টা রিকম্যান, এলডিসির ডিয়েগো লোজাদা, ওলাম এগ্রির ওয়েসলি রেন্টজ, ক্যারোলিনা কটন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েন বোসম্যানসহ আরও অনেকে।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন শুল্কছাড় বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য এক বড় সুযোগ। কিন্তু এই সুবিধা কার্যকরভাবে পেতে কারখানাগুলোকে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, বর্তমানে আমদানি করা তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, যা দ্বিগুণ বা ৩ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। তবে এ জন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সুচিন্তিত কৌশলগত পদক্ষেপ। মার্কিন তুলার উচ্চ গুণগত মান ও তুলনামূলক সুবিধার বিষয়ে গবেষণা করে সুতা উৎপাদনকারীদের তথ্য সরবরাহ করা হলে তাঁরা আমদানি বাড়াতে উৎসাহিত হবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত