Ajker Patrika

পুনরুদ্ধারের জন্য খুব একটা সহায়ক হবে না

ফাহমিদা খাতুন
পুনরুদ্ধারের জন্য খুব একটা সহায়ক হবে না

ঢাকা: বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য খুব একটা সহায়ক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। গতকাল প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, রাজস্ব বাড়ানো না গেলে সরকারের পক্ষে বড় ধরনের প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব নয়। আর সামগ্রিক কর ব্যবস্থার সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানো না গেলে কর আহরণ কর সংগৃহীত হচ্ছে, তা দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেই চাহিদা পূরণ করা কোনোভাবেই সম্ভব না। ফলে বাজেটে সামষ্টিক অর্থনীতির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

তিনি বলেন, কোভিডের অভিঘাত এখনো অনুভূত হচ্ছে। কত দিন তা থাকবে, নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট আসবে, আমরা তা জানি না। তাই পরিকল্পনা শুধু এক বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, যদিও বাজেট এক বছরের জন্য প্রণীত হয়। ফলে একধরনের মধ্যমেয়াদি প্রক্ষেপণ থাকা উচিত। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, অথচ এ খাতে বরাদ্দ জিডিপির সেই ১ শতাংশের মধ্যেই আছে। এই বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের চাহিদা মিটবে না। অন্য দিকে বরাদ্দ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য খাত পিছিয়ে আছে। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্য খাত বড় ধাক্কা সামলাতে পারবে না।

স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে অনেক মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের কাতারে নেমে এসেছেন। অনেক মানুষের আয় কমেছে। অন্য দিকে আমরা দেখছি, সরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। অথচ বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কয়েক বছর ধরে এক জায়গায় আটকে আছে। কোভিডের কারণে তা আরও কমে গেছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ না হলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে কীভাবে—এ প্রশ্ন তোলেন ফাহমিদা।

তিনি বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশের ওপরে ধরা হয়েছে, কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ দরকার, তা কীভাবে হবে বলা হয়নি। বিশেষ করে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কয়েক বছর ধরে এক জায়গায় আটকে আছে। কোভিডের কারণে তা আরও কমে গেছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ না হলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে কীভাবে? শুধু সরকারি বিনিয়োগ দিয়ে হবে না। আবার গত এক বছরে অনেক সরকারি প্রকল্পে ধীর গতি দেখা গেছে। এই বাস্তবতার সঙ্গে প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ মেলে না। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থেকে গেছে। কর-জিডিপির অনুপাতও বাড়েনি। সরকারি ব্যয় আশানুরূপ হয়নি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়। এবার তা আরও কম হয়েছে। শিল্পোৎপাদনও কম। ছোট ছোট শিল্পের উৎপাদন কমেছে। অন্য দিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য খুব একটা সহায়ক হবে না।

লেখক: নির্বাহী পরিচালক, সিপিডি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত