Ajker Patrika

ডলার সংকটের মধ্যে নীতির ভুলে রিজার্ভের ঝুঁকি বাড়ছে

ফারুক মেহেদী ও জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১১: ৫৪
ডলার সংকটের মধ্যে নীতির ভুলে রিজার্ভের ঝুঁকি বাড়ছে

রপ্তানি আয়ে খরা চলছে। রেমিট্যান্সেও একই হাল। দেশে ডলার আসার প্রধান এই দুটি পথ সংকীর্ণ হওয়ায় টান পড়েছে রিজার্ভে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর উচিত ছিল প্রবাসী কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়িয়ে রিজার্ভকে সমৃদ্ধ করা। কিন্তু তা না করে উল্টো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সহজে ডলার কেনার জন্য বসে থাকছে তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ডলার সরবরাহ করে যাচ্ছে তাদের। এতে ঝুঁকি বাড়ছে রিজার্ভে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত বলছে, গত তিন মাসে রিজার্ভ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ গতকালও বিক্রি করেছে ৮০ মিলিয়ন ডলার। ফলে আইএমএফের হিসাবে রিজার্ভ ২১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। সবকিছু যেভাবে চলছে, তাতে ডলারের সংকট শিগগির কাটার কোনো লক্ষণ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রিজার্ভ কমছে, তবু ডলার বিক্রি করার মানে হয় না।এসব বন্ধ করতে হবে। হুন্ডি বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে বৈধ পথে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। এসব অল্প সময়ে হবে না। অন্তত কয়েক মাস লাগবে। তার মানে রিজার্ভ খরচ কমাতে না পারলে সামনে ঘাটতি বাড়বে।’

দেশে ডলারের বড় জোগান আসে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বরে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ।

সংকটের এই রেমিট্যান্স প্রবাহ এভাবে কমার পেছনে কয়েকটি কারণকে দায়ী করেছেন বিশ্লেষকেরা। সবচেয়ে বড় কারণটি হলো ব্যাংকিং চ্যানেল ও  হুন্ডির মধ্যে ডলারের দামের বড় ব্যবধান। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা পান ১০৯ টাকা। আর হুন্ডিতে পাঠালে কোনো খরচ ছাড়া, বাকিতে পরিশোধ করেও খুব সহজে, কম সময়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে তাঁরা পান ৯-১০ টাকা বেশি।

এ ছাড়া সামনে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে কিছুটা অনিশ্চয়তাও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার অন্যতম  কারণ। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডলারের আগাম দরের (বুকিং রেট) ঘোষণা দিয়েছে। এটিও রেমিট্যান্স কমার আরেকটি কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। তাঁদের ধারণা, বুকিং রেটের এই ঘোষণায় প্রবাসীরা পরে লাভ পাওয়ার আশায় ডলার ছাড়ে আরও বেশি রক্ষণশীল হবেন। এটা হলে সামনে রেমিট্যান্স প্রবাহে আরও ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

২০২৩ সালের পুরো সময় ডলার-সংকট থাকবে—চলতি বছরের শুরুতেই এমন আভাস দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। ডলারের গতি-প্রকৃতি এবং রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন সেই বার্তাই দিচ্ছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ভালো অবস্থানে নেই। নির্বাচনের আগপর্যন্ত চাল, ডাল, তেল ইত্যাদি আমদানি করতেই হবে।

এতে রিজার্ভের আরও ঘাটতি সৃষ্টি হবে। তবে নির্বাচনের আগে রিজার্ভ বাড়ানোর তেমন কোনো উপায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থাকছে না বলে গভর্নর স্বীকার করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এ জন্য নির্বাচনের পর সরকারের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক সুদহার ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ডলারে আয় বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উৎস খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে রিজার্ভে যে আরও পতন অপেক্ষা করছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’

চলমান ডলার-সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে  ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ঋণের প্রথম কিস্তি এসেছে। কিন্তু শর্ত পূরণ না হওয়ায় আইএমএফ দ্বিতীয় কিস্তি এখনই ছাড় করবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। শর্তের দোহাই দিয়ে আইএমএফ যদি নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় না করে, তাহলে রিজার্ভ পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে।

সংকটের এই সময়ে ডলার সাশ্রয়ে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। একসময় প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বিল পরিশোধ করা হতো। পরে তা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। গত জুনে প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল নিষ্পত্তি করা হয়। তবু রিজার্ভ কমছে। জুলাই থেকে আবার আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। ওই মাসে বিল নিষ্পত্তি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও তা প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই রয়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সামনে রিজার্ভে চাপ আরও তৈরি করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের অভাব, ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদল, ডলার কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়া, ডলারের প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় দর না দেওয়া, প্রবাসীদের দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে না পারা, সংকটের শুরু থেকে বিশেষজ্ঞদের মতামত আমলে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপে গড়িমসি সংকট বাড়িয়ে তুলেছে দিন দিন।

 এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এখন গত ছয় বছরের ভুলের মাশুল দিচ্ছে। তারা ডলারের দর ধরে রেখেছিল। অনেক ভুল করেছে। এখন সংশোধন হতে শুরু করেছে। এখানে অনেক সংস্কার করতে হবে। সুদের হার বাড়াতে হবে। ঋণ সহজলভ্য হলে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য ঋণ নিয়ে ডলার কিনে রাখবে। এতে ডলার-সংকট বাড়বে। তাই ঋণের সুদ বাড়াতে হবে। এতে টাকার প্রভাব কমবে। মূল্যস্ফীতি কমবে। তখন এমনিতেই ডলারের দরও সহনীয় হয়ে আসবে।’

সম্প্রতি আকুর লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বাংলাদেশকে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার নগদে পরিশোধ করতে হতে পারে সামনে, যা আগে দুই মাস অন্তর পরিশোধের সুযোগ ছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছর দেশে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার ও ২০২২-২৩ অর্থবছর ৯৮ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি বছরে ছাড় কমেছে। আবার ঋণের সুদ ও কিস্তি শোধের চাপও বাড়ছে। এতেও ডলার মজুতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক অবশ্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ডলার-সংকট রয়েছে। তা নিরসনে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের যে রিজার্ভ আছে তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ওপরে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৬
২৪ ঘণ্টা অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিং আসছে

দেশের ব্যাংকিং সেবাকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিজিটাল পরিসরে। এ লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে অ্যাপনির্ভর ব্যাংক গঠনের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে দেশি ও বিদেশি ১২টি প্রতিষ্ঠান নতুন প্রজন্মের এই ব্যাংক স্থাপনে আগ্রহ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদনের আবেদন করেছে। প্রস্তাবিত এসব ব্যাংকের থাকবে না কোনো শাখা, অবকাঠামো বা এটিএম বুথ; গ্রাহকেরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই ২৪ ঘণ্টায় যেকোনো সময় পাবেন সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।

নতুন যুগের আবেদনকারীরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক (বাংলালিংক ও স্কয়ার), মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক। আবেদনের শেষ সময় ২ নভেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে এই ১২ প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়েছে।

মূলধনে বড় শর্ত

২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রণীত বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানি আইন অনুসারে পরিচালিত হতে হবে এবং প্রচলিত ব্যাংকের মতোই সিআরআর (নগদ জমা অনুপাত) ও এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা অনুপাত) বজায় রাখতে হবে।

এই ব্যাংকগুলো বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না এবং কোনো ধরনের ঋণপত্র (এলসি) খুলতেও পারবে না। কেবল ক্ষুদ্রঋণ, খুচরা পর্যায়ের লেনদেন এবং ডিজিটাল সেবা প্রদানের সুযোগ থাকবে। অনুমোদনের পাঁচ বছরের মধ্যে আইপিও আনতে হবে, যার পরিমাণ উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের সমান হতে হবে।

অ্যাপেই পুরো ব্যাংকিং

প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকগুলো হবে সম্পূর্ণ অ্যাপনির্ভর। কোনো শাখা বা এটিএম থাকবে না; বরং গ্রাহকেরা ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড এবং মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে সব সেবা নিতে পারবেন। প্লাস্টিক কার্ডের পরিবর্তে সব লেনদেন হবে ডিজিটাল উপায়ে। গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম বা এজেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। সব সেবা পরিচালিত হবে বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন, ২০১৪-এর আওতায়; যা ডিজিটাল লেনদেনে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

যোগ্যতার কঠোর মানদণ্ড

কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের সদস্য এই ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হতে ব্যাংকিং পেশায় অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া পর্ষদের অন্তত ৫০ শতাংশ সদস্যকে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং, সাইবার নিরাপত্তা ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।

ক্যাশলেস সমাজের পথে

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকের লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া।’ তিনি জানান, এসব ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং ক্যাশলেস সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

যাচাইয়ের পর অনুমোদন

প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর টেকনিক্যাল ও বিজনেস কমিটি নম্বরের ভিত্তিতে যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে। নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণরা ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ পেয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবে। চূড়ান্ত সনদ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নতুন বছরের প্রথমে শুরু হতে পারে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম।

চ্যালেঞ্জ এখন দক্ষতার

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রথাগত ব্যাংকে ডিজিটাল সেবা হালনাগাদ রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক সময়ের দাবি। তবে এই ব্যাংক পরিচালনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দক্ষ জনবল পাওয়া, পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা, জনসচেতনতা ও বিপণন কৌশল তথা নিয়ন্ত্রণ কাঠামো শক্ত রাখা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ডেনিম শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো’-এর ১৯ তম আসর আজ। দুই দিনের এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে ৫ ও ৬ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)।

এ বছর প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১০টি দেশ থেকে ৪৫ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

এরা মূলত ফ্যাব্রিক মিল (ডেনিম ও নন-ডেনিম), গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক, সুতা উৎপাদক, ওয়াশিং ও লন্ড্রি, অ্যাকসেসরিজ ও ট্রিমস, কেমিক্যালস, মেশিনারি বা প্রযুক্তি এবং লজিস্টিকস ক্যাটাগরিতে পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি
আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ার। ফাইল ছবি

সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিবিধান ভঙ্গের দায়ে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আজ মঙ্গলবার সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৮০ তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভা শেষে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১ হাজার কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক এবং অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি। মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশীপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে; কিন্তু ব্যাংকটি ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়।

বিএসইসি এও জানায়, এর আগে ৯৬৫ তম কমিশন সভায় ওই বন্ডের অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। একই অপরাধে এবার ব্যাংকের তৎকালীন এমডি শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন তুলায় শুল্কছাড়ে স্পষ্টতা চায় বিজিএমইএ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পোশাক উৎপাদনে ন্যূনতম ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক থেকে বাংলাদেশের আনুপাতিক ছাড় পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা বাস্তবায়ন নির্দেশনা না থাকায় দ্রুত স্পষ্টীকরণ চেয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মার্কিন তুলা রপ্তানিকারক সংগঠন কটন ইউএসএর এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরে বিজিএমইএ। বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে মার্কিন তুলার ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ঘোষিত শুল্ক সুবিধা বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান ও পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা। মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন ইকমের লি ইন, কারগিলের ক্রিস্টা রিকম্যান, এলডিসির ডিয়েগো লোজাদা, ওলাম এগ্রির ওয়েসলি রেন্টজ, ক্যারোলিনা কটন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েন বোসম্যানসহ আরও অনেকে।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন শুল্কছাড় বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য এক বড় সুযোগ। কিন্তু এই সুবিধা কার্যকরভাবে পেতে কারখানাগুলোকে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, বর্তমানে আমদানি করা তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, যা দ্বিগুণ বা ৩ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। তবে এ জন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সুচিন্তিত কৌশলগত পদক্ষেপ। মার্কিন তুলার উচ্চ গুণগত মান ও তুলনামূলক সুবিধার বিষয়ে গবেষণা করে সুতা উৎপাদনকারীদের তথ্য সরবরাহ করা হলে তাঁরা আমদানি বাড়াতে উৎসাহিত হবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত