Ajker Patrika

দেশে মূল্যস্ফীতিতে সিমেন্ট বিক্রি তলানিতে

মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঊর্ধ্বমুখী প্রবৃদ্ধির ধারায় হঠাৎ আশঙ্কাজনক হারে কমছে সিমেন্টের চাহিদা। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি অব্যাহত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমেছে। তাতেই শিল্পটি প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে ঋণাত্মক ধারার মুখে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একদিকে কোম্পানিগুলোর অসম প্রতিযোগিতা, অন্যদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা নতুন সরকার মেগা প্রকল্প নেয়নি। বরং আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেওয়া প্রকল্পগুলের বেশির ভাগ বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগও কমেছে। এককথায় সিমেন্ট খাত স্থবির রয়েছে। ফলে এ খাতে নতুন কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ রয়েছে, তাতে সরকারের রাজস্ব আয়ও কমছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ২০২০ সালের করোনার ধাক্কা কাটতে না কাটতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়। এই মন্দার ধাক্কা পড়েছে নির্মাণ খাতে। একদিকে ডলার-সংকট, অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানিতেও খরচ বেড়েছে। এর সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে এ খাতে।

জানতে চাইলে আমান সিমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খন্দকার কিংশুক হোসেইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৫ আগস্টের পর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন, কিংবা বড় বড় স্থাপনার কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে যেখানে বছরে শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০-১২ শতাংশ, সেখানে গত চার মাসে ৪-৫ শতাংশ ঋণাত্মক হয়েছে। কারখানাগুলো সক্ষমতার ৫০ শতাংশ উৎপাদন করছে।

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) তথ্যমতে, দেশে ৩০টি বড় কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানির ৪০টি কারখানা রয়েছে। চলতি বছর কারখানাগুলো ৪ কোটি টন সিমেন্ট উৎপাদন করেছে। বিপরীতে এ সময়ে চাহিদা ছিল ৩ কোটি ১১ লাখ টন।

এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালের কোম্পানিগুলোতে সিমেন্ট উৎপাদিত হয়েছিল ৩ কোটি ৮৫ লাখ টন; আর গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত একই সময়ে হয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ টন। অর্থাৎ ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের একই সময়ে সিমেন্ট বিক্রি কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

তবে কোম্পানিগুলোর পরিসংখ্যানমতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর ২ কোটি ৭২ লাখ ৬৮ হাজার ৪২ টন সিমেন্ট বিক্রি হয়েছে; যা ২০২৩ সালে ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৬ টন। অর্থাৎ প্রায় এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে সিমেন্ট বিক্রি। ২০২২ সালে ছিল ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭১ টন এবং ২০২১ সালে ছিল ৩ কোটি ৯১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৮ টন।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে মুনাফা কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির

চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৬টির। এগুলোর মধ্যে দুটি কোম্পানি মুনাফা থেকে লোকসানি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে মুনাফা বেড়েছে একটি কোম্পানির।

প্রতিষ্ঠানটি হলো কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসি। জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৬ টাকা; যা ২০২৩ সালে ছিল ২ দশমিক ১৬ টাকা।

একই খাতের আরেক কোম্পানি ক্রাউন সিমেন্ট পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারে আয় হয়েছে ২৫ পয়সা; যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৩২ পয়সা। গত তিন মাসে লোকসান কিছুটা কমেছে আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের। সর্বশেষ তিন মাসে এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৩ পয়সা; যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক শূন্য ২ টাকা।

একই সময়ে মুনাফা থেকে লোকসানের মুখে পড়েছে মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের শেয়ার। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ দশমিক ২৯ টাকা; যা ২০২৩ সালে ছিল ১৩ পয়সা। প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলসের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৪ পয়সা; যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ৫৪ পয়সা।

বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৪ পয়সা। অথচ ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৮ পয়সা। এ ছাড়া লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি আয় ৭৬ পয়সা; যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৩৮ পয়সা।

কেন কমছে সিমেন্ট বিক্রি

সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তারা বলছেন, ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫ থেকে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে সিমেন্ট খাতে। কিন্তু তারপর থেকে এই খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে; বিশেষ করে চলতি বছরের জুলাইয়ের পর থেকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তার পেছনে থাকা কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইস্যু। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সরকারি প্রকল্পের স্থবিরতা, কমেছে নতুন প্রকল্প এবং বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ প্রসঙ্গে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ইকবাল চৌধুরী বলেন, প্রতিনিয়ত রাস্তায় আন্দোলন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় সিমেন্টের চাহিদা প্রায় অর্ধেক কমেছে। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঠিকাদারেরা পালিয়ে যাওয়ায় অনেক সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি খাত থেকে সিমেন্টের চাহিদা কমেছে; যা বার্ষিক সিমেন্ট ব্যবহারের ৩৫ শতাংশ।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

সুদিনে ফিরতে যা প্রয়োজন

ঋণাত্মক ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে সিমেন্ট খাতে নীতিসহায়তা দিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা থাকতে হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, সিমেন্ট খাতে এখন দুর্দিন যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প বাড়াতে হবে। নতুন করে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে হবে।

বিশ্বে অবস্থান

গ্লোবাল সিমেন্ট প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বিশ্বে ৪১২ কোটি ৯০ লাখ টন সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়। তখন উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৬১৩ কোটি ৮০ লাখ টন। বাজারের আকার ছিল ৩৯৫ বিলিয়ন ডলার বা ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এই আকারের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম। দুই বছর আগেও যা ছিল ২৩তম। দেশভিত্তিক সিমেন্ট ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে চীন। এর পরের অবস্থান ভারতের।

বাজার পরিস্থিতি

বাংলাদেশে প্রতি মাসে ৩০ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণের পর বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে সিমেন্ট। মাসে ৬০-৭০ হাজার টন সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে। বছরে ৬ থেকে ৭ লাখ টন সিমেন্ট রপ্তানি হয়। বর্তমানে প্রতি বস্তা সিমেন্ট ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। গড়ে প্রতি টনের দাম ১২ হাজার টাকা। এ হিসাবে দেশে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার সিমেন্টের বাজার রয়েছে।

জনপ্রতি সিমেন্টের ব্যবহার

২০০৯ সালে দেশে জনপ্রতি সিমেন্টের ব্যবহার ছিল মাত্র ৬৫ কেজি। ২০২৩ সালে তা বেড়ে ২১৮ কেজি হয়েছে। ২০২২ সালে ছিল ২২৫ কেজি, ২০২১ সালে ছিল ২২৭ কেজি। তবে এখনো অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। চীনে মাথাপিছু সিমেন্টের ব্যবহার ১ হাজার ৭০০ কেজি। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও দেড় শ কেজির বেশি। শ্রীলঙ্কায় ৫০০ কেজি, মালয়েশিয়ায় ৫২৯ কেজি ও থাইল্যান্ডে এর ব্যবহার ৪২৫ কেজি। সিঙ্গাপুরে মাথাপিছু ১ হাজার ৭০০ কেজি সিমেন্ট ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি এম ফজলুল হক বলেন, শিল্পোৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধির কারণে বেশ কিছু সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে এ খাত। একদিকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। এর পাশাপাশি শিল্প খাতের অন্যান্য খরচও বাড়ছে। এ ছাড়া ব্যাপক মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমায় কেনাকাটাও কমেছে। গত মার্চ থেকে ভোক্তা মূল্যসূচক ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। শিল্প খাতের নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধির কারণে অনেক ছোট প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারছে না।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, শিল্পোৎপাদন কমছে। কারণ, অভ্যন্তরীণ বাজারভিত্তিক ও রপ্তানিভিত্তিক—উভয় কারখানাই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিপুল জ্বালানি ব্যয়ের কারণে শিল্প খাত অনেক চাপে আছে, অন্যদিকে গ্যাস সরবরাহেও ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, শিল্প খাতের দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে অনেক কোম্পানি আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।

কর্মসংস্থান

পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে এই খাতে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। উৎপাদন বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং সরকার এ খাত থেকে রাজস্ব আরও বেশি পাবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ডলার ও জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যক্তিগত নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় সিমেন্ট খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনে ভোটার ও রাজনীতিবিদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে: দেবপ্রিয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৯
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা।
বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা।

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’

সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’

সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’

তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্রেতাদের হাতে উপহারের ফ্রিজ-টিভি হস্তান্তর করল ওয়ালটন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ-টিভি উপহার পাওয়া কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: বিজ্ঞপইত
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ-টিভি উপহার পাওয়া কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: বিজ্ঞপইত

ইলেকট্রনিকস পণ্য ক্রয়ে গ্রাহকদের বিশেষ সুবিধা দিতে দেশব্যাপী চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন। ক্যাম্পেইনের ২৩তম সিজনে ওয়ালটন ফ্রিজ, এসি, টিভি, ওয়াশিং মেশিন বা বিএলডিসি ফ্যান কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি ও নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন এলাকার ওয়ালটন প্লাজা থেকে ফ্রিজ কিনে সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও টিভি ফ্রি পাওয়া পণ্য ছয় ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। তাঁরা হলেন— মুন্সিগঞ্জের গোলাম রাব্বানি সিফাত ও গৃহিণী আফসানা আক্তার, নারায়ণগঞ্জের আজমির খান, রূপগঞ্জের সবুর হোসাইন এবং সিদ্ধিরগঞ্জের তারিকুল ইসলাম ও আসমা জাহান বিথী।

গত বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট ক্রেতাদের হাতে উপহার পাওয়া পণ্য তুলে দেন চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। সে সময় আরও ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের প্রধান মো. ফিরোজ আলম প্রমুখ।

বিজয়ী ক্রেতাদের মধ্যে গোলাম রাব্বানি সিফাত, আফসানা, আজমির খান ও আসমা জাহান বিথী ফ্রিজ কিনে উপহার পেয়েছেন ওয়ালটনের অত্যাধুনিক সিক্সএনাইন মডেলের সাইড বাই সাইড স্মার্ট ফ্রিজ। অন্যদিকে তারিকুল ইসলাম ফ্রিজ কিনে ফ্রি পেয়েছেন ২১৩ লিটারের ফ্রিজ এবং সবুর হোসাইন ফ্রিজ কিনে পেয়েছেন ওয়ালটনের ৪৩ ইঞ্চি স্মার্ট টেলিভিশন।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. রায়হান বলেন, ‘ওয়ালটন ক্রেতাদের সব সময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং সম্মান করে। সারা দেশে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতা ওয়ালটন পণ্য কিনে নানান উপহার পাচ্ছেন যা তাদের যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের মাঝে কয়েকজনের হাতে করপোরেট অফিসে অনুষ্ঠান করে প্রাপ্য পণ্য বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। গ্রাহকদের জন্য আমাদের এ ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩ এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে।

পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। ২০২৬ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের ওপর কেন ৫০ শতাংশ শুল্ক দিল মেক্সিকো, নয়াদিল্লির ক্ষতি কতটা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৩
ভারতের ওপর মেক্সিকোর শুল্ক আরোপের কারণে দেশটির বেশ বড় রকমের ক্ষতিই হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ওপর মেক্সিকোর শুল্ক আরোপের কারণে দেশটির বেশ বড় রকমের ক্ষতিই হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকো। এই শুল্ক বহাল থাকলে মেক্সিকোর বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রবেশ অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে। মূলত, ভারতের সঙ্গে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি থাকায়, তা পুষিয়ে নিতেই ট্রাম্পের মতো করেই ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর মেক্সিকোর এই শুল্ক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোলের খবরে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর জবাবে নয়াদিল্লিও জানিয়েছে, তারা নিজেদের রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষায় ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নিতে পারে। এক সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে এই কথা জানিয়েছেন।

এর আগে, এ সপ্তাহের শুরুতে মেক্সিকোর সিনেট এক নতুন শুল্ক ব্যবস্থা অনুমোদন করে, যা ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াসহ যেসব দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নেই, সেসব দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর এই শুল্ক বসানো হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারত মেক্সিকোর সঙ্গে তাদের অংশীদারত্বকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় এবং স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ এক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি করতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে দুই দেশের ব্যবসা ও সাধারণ মানুষ লাভবান হয়।’

এই শুল্কের প্রভাব কমাতে ভারত ইতিমধ্যেই মেক্সিকোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখে মেক্সিকোতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে, যাতে ভারতীয় রপ্তানি সুরক্ষিত করার জন্য বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। ভারতীয় ওই কর্মকর্তা জানান, ‘বাণিজ্য দপ্তর মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশ্ব বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পারস্পরিক সুবিধাজনক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।’

দুই দেশই একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে তৈরি হচ্ছে। আলোচনা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা যায়, যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের এই শুল্ক থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিমধ্যেই বাণিজ্যসচিব রাজেশ আগরওয়াল ও মেক্সিকোর উপ-অর্থমন্ত্রী লুইস রোসেন্ডোর মধ্যে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও প্রযুক্তিগত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও যোগ করেন, ‘গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে চললেও, ভারত তার রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার নিজের হাতে রেখেছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, এই শুল্কের প্রভাব নির্ভর করবে ‘মেক্সিকোর অভ্যন্তরীণ সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারতীয় রপ্তানির গুরুত্ব কতখানি এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলি শুল্কের ছাড় পেতে বা এই বাড়তি খরচ মেক্সিকোর উপভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিতে কতটা সক্ষম, তার ওপর।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের সতর্কবার্তার পরই এই শুল্ক বাড়ানো হলো, যেখানে বলা হয়েছিল যে, সস্তায় চীনা পণ্য মেক্সিকো হয়ে আমেরিকাতে ঢুকছে। মেক্সিকো এটিকে তাদের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে রক্ষা, চাকরি সংরক্ষণ এবং সস্তা আমদানির কারণে তৈরি হওয়া বাজারের ভারসাম্যহীনতা দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখিয়েছে। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সাহাই বলেন, এই পদক্ষেপের ফলে অটোমোবাইল, অটো যন্ত্রাংশ, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিকস, অরগানিক কেমিক্যাল, ওষুধ, টেক্সটাইল এবং প্লাস্টিকের মতো ক্ষেত্রগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সাহাই পিটিআইকে বলেন, ‘এত বেশি শুল্ক আমাদের প্রতিযোগিতার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে এবং বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা সরবরাহ শৃঙ্খলে সমস্যা তৈরির ঝুঁকি বাড়াবে।’

এদিকে, ২০২৪ সালে ভারত মেক্সিকোতে ৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যেখানে মেক্সিকো থেকে আমদানি হয়েছিল ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারত ও মেক্সিকোর মধ্যে চলমান আলোচনা, যার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার সম্ভাবনাও যুক্ত, তা এই ক্রমবর্ধমান শুল্কের মুখে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করতে এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকদের স্বার্থ রক্ষা করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৫
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।

আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন এক সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার পর যেহেতু ফয়সাল করিম মাসুদ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত, সেহেতু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁর বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান করবে। আমরাও তাঁর আর্থিক কোনো অপরাধ আছে কি না, সেগুলোর অনুসন্ধান করব।’

এনবিআরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে এবং অনেক আলোচনা রয়েছে যে এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার জন্য এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ভারত থেকে অনেক ফান্ডিং হচ্ছে। ফলে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য মূলত হিসাবগুলো ফ্রিজ করা হয়েছে।’

জানা গেছে, ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্য।

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশের বিবৃতিতে সন্দেহভাজন তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদির সঙ্গে দেখা গেছে। তবে কয়েক দিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণই যে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত