Ajker Patrika

মার্কিন পাল্টা শুল্ক

শুল্কের দর-কষাকষিতে বোয়িং উড়োজাহাজ

  • বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি
  • গম, তুলা ও সয়াবিন আমদানিতে আগাম চুক্তি
  • আলোচনায় বসতে বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল আজ ওয়াশিংটন যাচ্ছে
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৬: ১৫
শুল্কের দর-কষাকষিতে বোয়িং উড়োজাহাজ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত পাল্টা শুল্ক কমাতে দর-কষাকষির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে দেশটি থেকে বেশি পরিমাণে গম, তুলা ও সয়াবিন আমদানিতে আগাম চুক্তি হয়েছে। এতেও ট্রাম্পের মন গলবে কি না, সংশয় রয়েছে। তাই এবার মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। বড় কেনাকাটার এমন প্রতিশ্রুতি ঘোষণার পর শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন যাচ্ছে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে আজ সন্ধ্যায় ঢাকা ছাড়বে প্রতিনিধিদলটি। তিন দিনব্যাপী এই সফরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। আলোচনায় থাকবে উচ্চ শুল্কহার, বাজারে প্রবেশাধিকার এবং আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য নিয়ে সরাসরি দর-কষাকষি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাল্টা শুল্ক কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে রাজি করাতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কিছু কৌশলগত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি বিমান কেনার অর্ডার, দেশটি থেকে প্রতিবছর ৭ লাখ টন গম আমদানির চুক্তি এবং তুলা ও সয়াবিন আমদানি তিন গুণ বৃদ্ধির ঘোষণা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩০ কোটি ডলারের ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়। সেটি বাড়িয়ে ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘বাজারের বাস্তবতা মাথায় রেখে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থে আলোচনা করছি। এখন কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পালা, যাতে পাল্টা শুল্কের চাপ কিছুটা কমানো যায়।’ তিনি বলেন, ‘আগে ১৪টি বোয়িং কেনার অর্ডার থাকলেও এখন তা বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে।

পাশাপাশি গম, তুলা ও সয়াবিন আমদানিতে আগাম চুক্তি হয়েছে। এটি শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, সরবরাহ চেইন নিরাপদ রাখতে এবং বিকল্প বাজার গড়ে তুলতে এই সিদ্ধান্ত। এতে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সহজ হবে বলে আশা করছি।’

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রতিশ্রুতি কোনো একতরফা নির্ভরতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং ভবিষ্যতে প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য উৎস থেকেও আমদানির সুযোগ থাকবে। তবে এখন আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে মার্কিন শুল্কহার কমানোর বিষয়টি। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক দিয়ে বাজার ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রতিটি অনুচ্ছেদের জবাব দিয়েছি। এবার সময় এসেছে সরাসরি আলোচনার। চীনের বাজার থেকে সরানো কিছু উৎপাদন বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। আমরা তা ধরতে চাই।’

এদিকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশ যে অবস্থানে রয়েছে, তা ধরে রাখতে ভারত ও ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগীদের মতো শুল্কছাড় দরকার। তা না হলে এই বাজার হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত