Ajker Patrika

অপরূপ মুহুরি প্রকল্প এলাকা

নিজাম চৌধুরী
অপরূপ মুহুরি প্রকল্প এলাকা

ফেনী শহর থেকে দূরে মনোরম পরিবেশে কোলাহল মুক্ত নির্জনতা, চারদিকে সুন্দর পরিবেশ, সবুজ গাছপালা, মাঝে মাঝে পাখির ডাক, শীতল বাতাস, পানির গুনগুন শব্দ আর নদীতে জোয়ার ভাটায় খেলা। অপরূপ এক অনুভূতি এনে দেবে নৈসর্গিক সৌন্দর্যরূপের লীলাভূমি ফেনীর সোনাগাজীর সমুদ্র উপকূলীয় মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকাটি। এটি দেশের সবার কাছে তেমন পরিচিত না হলেও স্থানীয় ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বিনোদনের এক পরিচিত জায়গা।আর ভ্রমণ কার না ভালো লাগে? 

তেমনি ভ্রমণ জীবনের এমন একটি অংশ যাকে অস্বীকার করে কোনোভাবেই ভালো থাকতে পারা যায় না। ক্লান্তি আর গ্লানিতে ভরে ওঠা মনকে 
পুনরায় সতেজ করে তোলে ভ্রমণ। ঠিক তেমনি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরা মুহুরি সেচ প্রকল্পের এ অঞ্চলে তৈরি হয়েছে পর্যটনশিল্পের এক অপার সম্ভাবনা। রেগুলেটরের চারদিকে বাঁধ দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম জলরাশি, বনায়ন, মাছের অভয়ারণ্য, পাখির কলরবে শব্দ, বাঁধের দু পাশে নিচে থেকে পাথর দিয়ে বাঁধানো; ওপরে দুর্বা ঘাসের পরিপাটি বিছানা।

নৌভ্রমণের সময় খুব কাছ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস এবং হাজার হাজার পাখির দেখা পাওয়া যায়। পাশাপাশি নদীর পানির স্রোতের শব্দ আর সবুজ বনানী ঘেরা মায়াবী পরিবেশ, বঙ্গোপসাগরের উপকূলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যসহ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখলে যেন হারিয়ে যায় মন। উদ্ভূত এক মায়াবী নীরব নিস্তব্ধতা সমগ্র প্রকৃতিকে যেন ঘিরে রেখেছে এ অঞ্চলটি।

এখানে দেখা মেলে বিভিন্ন ধরনের বক, মাছরাঙা পাখি ইত্যাদি। পাশাপাশি জীবিকার তাগিদে আপন গতিতে জেলেরা ছুটছে মাছ ধরতে। সেই নদীতে মিলছে বিলুপ্ত প্রজাতির দেশি প্রজাতির বিভিন্ন প্রকার মাছ। আবার তীর ঘেঁষে বিক্রিও হচ্ছে সেগুলো।

স্থানটিকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পর্যটন কেন্দ্র বা নগরী হিসেবে গড়ে উঠলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা ব্যক্তিগত সদিচ্ছার থাকলে পর্যটনের আলো ছড়াতো দূরদূরান্তে। দেশে পর্যটনের সম্ভাবনাময় স্থানগুলো খুঁজে দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, তেমনি সুন্দর দেশের তালিকায় যুক্ত হবে বাংলাদেশের নাম।

এখনো এ অঞ্চলে নেই হোটেল–মোটেল বা ভালো মানসম্মত দোকানপাট। তবু প্রকৃতির টানে ছুটে আসেন অনেক পর্যটকপ্রেমী। তাদের হৃদয় সৌন্দর্যরূপে ভরপুর হলেও থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থার অভাবে অনেকে নিরাশ হচ্ছেন। অথচ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আধুনিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে সরকারের যেমন কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতো তেমনি দেশের মধ্যে ফেনীকে পর্যটনের একটি ব্র্যান্ড হিসেবে মনে করা যেত।

ইতিমধ্যে এ অঞ্চলে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করতে স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। মুহুরি নদীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভাসমান মাছ চাষ, নদীতে জাল ফেলে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, নৌকার সারি, নৌকা ভ্রমণের দৃশ্য ভ্রমণ পিয়াসি মানুষদের আকৃষ্ট করে। পাশেই রয়েছে দেশের প্রথম নির্মিত বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। 
করোনাকালীন পরিস্থিতির মাঝে এবারও ঈদুল ফিতরে পর্যটকদের পদভারে সরগরম হয়ে উঠে এলাকাটি। এক কথায় প্রকৃতির টানে যে আসে তাকেই মুগ্ধ কর চোখ জুড়ানো দৃশ্য। তাই স্থানটিকে দৃষ্টিনন্দন করা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করলে এ স্থানটি পর্যটন শিল্পে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে নতুন মাত্রা যোগ হবে জেলার অর্থনীতিতে। দূর হবে বেকারত্ব, তৈরি হবে কর্মসংস্থান। 

নিজাম চৌধুরী
চেয়ারম্যান, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত