Ajker Patrika

ঢলের সঙ্গে আসছে বালু, হাওরের নতুন হুমকি

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৪৪
ঢলের সঙ্গে আসছে বালু, হাওরের নতুন হুমকি

সুনামগঞ্জের মানুষের বেশির ভাগ হাওরের ফসলের ওপর নির্ভরশীল। পাহাড়ি ঢলে ফসলহানির আশঙ্কায় কাটে তাঁদের দিন। এখন বেধেছে আরেক নতুন বিপত্তি। পাহাড়ি ঢলে আসছে বিপুল পরিমাণ বালু। এই বালু জমছে কৃষিজমিতে। এতে উর্বরা শক্তি হারাবে ভূমি। ফসল উৎপাদন যাবে কমে। এ যেন হাওরের মানুষে জন্য এক নতুন হুমকি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন্ড্রু সলমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০০৭ সাল থেকে পাহাড়ি বালু আসছে। তবে সবচেয়ে বেশি আসছে এ বছর। এসব বালু-পাথর হাওরে যাচ্ছে। এভাবে বালু আসতে থাকলে ভবিষ্যতে তা হাওরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

হাওর অধ্যুষিত জেলা সুনামগঞ্জ। জেলার ২৭ লাখ জনগোষ্ঠীর ৭৫ শতাংশ মানুষ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল জেলার মানুষ বোরো মৌসুমে দুশ্চিন্তায় থাকেন ফসলডুবি নিয়ে। আর এই ফসলডুবি থেকে রক্ষায় সরকার প্রতিবছর প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করে। ২০১৭ সালে ভয়াবহ বন্যার কারণে এবং ঠিকাদারদের বাঁধ নির্মাণের অনিয়মের ফলে শতভাগ ফসল তলিয়ে যায় পানিতে। এরপর বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষায় সরকারের নানামুখী তৎপরতায় বন্যায় ফসল হানির দুশ্চিন্তা কিছুটা কমেছে।

তার পরও চলতি বছরের আগস্টেই তিন দফা পাহাড়ি ঢলে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রামের কৃষিব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত মাসের প্রথম ও তৃতীয় সপ্তাহে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢল তীব্র স্রোত হয়ে ওই এলাকা দিয়ে নামে। এতে চানপুর ও রজনী লাইনের প্রায় ৫০০ মিটার পাকা সড়ক সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে এখন খালে রূপ নিয়েছে।

তাহিরপুর সীমান্তে ঢলের সঙ্গে বালু-পাথর এসে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি ও বসতভিটা। ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে এসব বালু ও পাথর আসা বন্ধ না হলে অচিরেই টাঙ্গুয়ার হাওরসহ এলাকার বিস্তৃত জলাভূমি ও হাওর ভরাট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিভিন্ন সময় পাহাড়ি ঢলে আসা বালু জমে ওইসব এলাকার প্রায় ৭৫০ হেক্টর কৃষিজমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে।

এ বছর কৃষিজমিতে বেশি বালু জমেছে তাহিরপুরে দক্ষণ বড়দল ইউনিয়নের চানপুর ও রজনী লাইন এলাকা, দক্ষিণ শ্রীপুর এলাকার লাকমাছাড়া এবং বাঁধাঘাট ইউনিয়নের লাউড়ের গড় এলাকায়।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি সুখেন্দু সেন বলেন, পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ভারতের খাসিয়া ও মেঘালয় থেকে বালু-পাথর এসে নদীগুলো তার নিজস্ব প্রাণ হারাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে হাওরে। জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলো খনন করা হলে হাওরে পানির চাপ কমবে। অন্যথায় পাহাড়ি ঢল এলে নদী উপচে সহজে হাওরে পানি প্রবেশ করবে। এতে ফসলহানিসহ জমিতে বালু জমে দীর্ঘমেয়াদ উৎপাদন কমে যাবে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ি বালু-পাথর ঢলের সঙ্গে আসবেই। তবে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে ছড়াগুলো খনন করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে হচ্ছে নতুন আইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত