Ajker Patrika

২০ বছর ধরে জীবন্ত গাছ দিয়ে চলছে বিপিডিবির বিদ্যুৎ-সংযোগ লাইন

আশিস রহমান, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৪২
২০ বছর ধরে জীবন্ত গাছ দিয়ে চলছে বিপিডিবির বিদ্যুৎ-সংযোগ লাইন

খুঁটির বদলে কোথাও বাঁশ, কোথাও মরা গাছ আবার কোথাও জীবন্ত গাছে টানানো হয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বিদ্যুৎ-সংযোগ লাইন। ঝুঁকিপূর্ণ এসব লাইন অনেক জায়গায় হাতের নাগালে বিপৎসীমার মধ্যে টানানো হয়েছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বিপিডিবি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার গিরিশনগর গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গিরিশনগর গ্রামের ফায়জুর রহমানের বাড়ির পাশ থেকে শুরু করে এখলাস ফরাজির বাড়ির পুকুর পাড় হয়ে আশপাশের প্রতিটি বাড়িতে বাঁশ, জীবন্ত গাছ ও নড়বড়ে খুঁটির মাধ্যমে টুটেয়েন্টি বিদ্যুৎ-সংযোগ লাইন নেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় হাতের নাগালে ঝুলছে বিদ্যুৎ-সংযোগ লাইন। 

স্থানীয় গ্রাহকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০০০ সালে এলাকায় বিদ্যুৎ আসে। এ সময় গিরিশনগর গ্রামও বিপিডিবি বিদ্যুতের আওতাভুক্ত হয়। গ্রামের এখলাস ফরাজি ও ফায়জুর রহমানের বাড়ির আশপাশে প্রায় ৫০টি বৈধ মিটারধারী গ্রাহক রয়েছেন। তাঁরা নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল, সরকারি ভ্যাটসহ সব চার্জ পরিশোধ করে আসছেন। তবুও বিদ্যুৎ অফিস থেকে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ অফিসে খুঁটির দাবি জানিয়ে এলেও দায়সারা আশ্বাস ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। ফলে নিজস্ব অর্থায়নে স্থানীয়ভাবে খুঁটি নির্মাণ করে বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেওয়া হয়েছে। আর্থিক সংকুলান না হওয়ায় অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশ ও জীবন্ত গাছে করে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিতে বাধ্য হয়েছেন।

কোথাও বাঁশ, কোথাও মরা গাছ দিয়ে টানানো হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনগিরিশনগর গ্রামের বাসিন্দা গ্রাহক ফায়জুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আমরা বিভিন্নভাবে টাকা খরচ করেও কাজ করাতে পারিনি। নিজেদের টাকায় গ্রামে ফোরটি বিদ্যুৎ লাইন আনছি। এরপরও আমাদের কপালে বিদ্যুতের খুঁটি জোটেনি। বছরের পর বছর ধরে বাঁশ, গাছ দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছি। কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না।’ 

একই গ্রামের বাসিন্দা গ্রাহক এখলাস ফরাজী বলেন, বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে করতে আমরা হয়রান। কেউ নিজের টাকায় পিলার বানিয়ে, কেউ বাঁশ দিয়ে আবার কেউ গাছে করে বিদ্যুৎ নিয়েছি। প্রায় ২০ বছর ধরে আমরা এই অবস্থায় আছি। আমাদের এই দুরবস্থা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কোনো মাথাব্যথা নাই। 

বিপিডিবির স্থানীয় লাইনম্যান ঈসমাইল মিয়া বলেন, ‘আমি লাইনম্যান হিসেবে যোগদানের আগে থেকেই এখানে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই লাইনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলতে পারবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ছাতকের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সর্দার বলেন, ‘আমি বিষয়টা দেখব। আমাদের অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত