Ajker Patrika

সিলেট বিভাগের স্থলভাগের ৮০% পানির নিচে

আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৮: ৩০
সিলেট বিভাগের স্থলভাগের ৮০% পানির নিচে

সিলেট বিভাগের স্থলভূমির ৮০ শতাংশই পানির নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ভিত্তিক বন্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। 

সিলেট বিভাগের আগামী তিন দিনে বিভাগটির বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনমন হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাষ কেন্দ্র। এ পূর্বাভাস ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ নির্ভুল ধরে নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। 

এ বিষয়ে মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেলগুলো সাধারণত তিন দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাষ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ নির্ভুলভাবে দিতে পারে। তিনি বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাষ অনুসারে আগামী তিন দিনে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী মেঘালয় পর্বত এলাকায় বিপুল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মডেলভেদে এতে বৃষ্টিপাত হতে পারে ৬০০ থেকে ১১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত। এই তিন দিনে ভারতের আসাম রাজ্যের ব্রহ্মপুত্র নদ অববাহিকায় ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আগামী রোববারের মধ্যে তিস্তা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী জেলাগুলোতে বন্যা আরও প্রবল হবে। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা পূর্বাভাষ কেন্দ্রের তথ্যমতে, শুক্রবার সকাল ৬টার পর থেকে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে সুরমা নদীতে সেকেন্ডে ১২ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। পানির উচ্চতা বিপৎসীমার প্রায় ১ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর পরিমাণ আরও বাড়বে। 

সিলেটের কিছু অঞ্চলে বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনীভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে বিগত ৩৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুসারে গত (শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত) ২৪ ঘণ্টায় ওই অঞ্চলে প্রায় ৯৭২ মিলিমিটার বা ৯৭ দশমিক ২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ভারী বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ভাটির প্রতিবেশী বাংলাদেশ। দেশের সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলা এই এরই মধ্যে ভয়াবহ ভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। 

প্রসঙ্গত, আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে ১৩২ / ৩৩ কেভির মেইন গ্রিডের চার ইঞ্চি নিচে রয়েছে পানি। চারটি উপকেন্দ্রের মধ্যে পানি ঢুকে যাওয়ায় বরইকান্দি ও উপশহর উপকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জের সবগুলো বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও বৈদ্যুতিক খুঁটি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বেশ কিছু অঞ্চলে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কুমারগাঁও ১৩২ / ৩৩ কেভি গ্রিডও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনটা হলে পুরো সিলেট বিভাগ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নও হয়ে পড়বে এই জনপদ। তবে কুমারগাঁওস্থ ১৩২ / ৩৩ কেভির মেইন গ্রিডটি চালু রাখার জন্য কাজ করছে সেনাবাহিনীর একটি দক্ষ টিম। 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা গেছে, বাসাবাড়ির মিটার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নগরীর উপশহর এলাকায় এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা বিদ্যুতের সাবস্টেশনে পানি ওঠায় পুরো দক্ষিণ সুরমা উপজেলা গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। 

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানায়, সমিতির সিলেট-১-এর অধীন ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক এবং সিলেট-২-এর অধীন ২ লাখ ১২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছে। 

বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলো থেকে খবর পাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। বিচ্ছিন্নভাবে যেসব খবর পাওয়া গেছে, তাতে পুরো অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্মরণকালে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত