Ajker Patrika

সাদাপাথর লুট ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার, প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

সিলেট প্রতিনিধি
প্রশাসনের সীমিত অভিযানের মধ্যেই প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দিয়ে পাথর তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রশাসনের সীমিত অভিযানের মধ্যেই প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দিয়ে পাথর তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে চলছে প্রকাশ্যে পাথর লুট। প্রশাসনের সীমিত অভিযানের মধ্যেই প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দিয়ে পাথর তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

লুটপাট ঠেকাতে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ফটোগ্রাফাররা সরাসরি বাধা দিলে শনিবার তাঁদের একজন সদস্য এমাদ উদ্দিন লাঞ্ছিত হন। হামলায় আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি। হামলার ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে রোববার সাদাপাথর এলাকায় এক প্রতিবাদ সভায় ব্যবসায়ী, মাঝি, ফটোগ্রাফার ও স্থানীয়রা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লুটকারীদের গ্রেপ্তার না হলে পর্যটনস্পট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

প্রশাসনের সীমিত অভিযানের মধ্যেই প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দিয়ে পাথর তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রশাসনের সীমিত অভিযানের মধ্যেই প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দিয়ে পাথর তোলা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কোম্পানীগঞ্জ ফটোগ্রাফি সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনোয়ার সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রকাশ্য সাদাপাথর লুট হচ্ছে। প্রশাসন দু-একটি অভিযান চালালেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই লুটপাট বন্ধ করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতি ও শুক্রবারে ফটোগ্রাফাররা সম্মিলিতভাবে গিয়ে লুটপাটে বাধা দেন। এর ফলস্বরূপ শনিবার আমাদের একজন ফটোগ্রাফারকে ওই লুটপাটকারীরা মারধর করে গুরুতর আহত করে এবং তার সঙ্গে থাকা মোবাইল, ক্যামেরাসহ নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। সে এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমরা রোববার সকালে সাদাপাথরে গিয়েও লুটকারীদের তাড়িয়ে দিয়ে আসছি। যারা নৌকা নিয়ে যেতে পারছে, তারা গেছে। আর যারা পারেনি, তারা নির্দিষ্ট চিহ্ন দিয়ে ডুবিয়ে চলে গেছে। তার মানে তারা আবারও আসবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় না আনা হলে আমরা সবাই সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে দেব। প্রশাসন চাইলে এই স্পটটি রক্ষা করতে পারে।’

স্থানীয়রা জানান, লুটপাটে বাইরের জেলার লোকজন বেশি জড়িত। নদীপথে আসা পাথর ট্রাকে করে সরাসরি উপজেলা পরিষদের সামনে দিয়ে দেশজুড়ে যাচ্ছে, অথচ প্রশাসনের কঠোর নজরদারি নেই।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই সাদাপাথর লুটপাট বন্ধ না করলে খুব দ্রুতই শাহ আরেফিন টিলা, বাঙ্কারের মতো এটিও ধ্বংস হয়ে যাবে। যেভাবে প্রতিদিন পাথর লুট হচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন এটি ইজারা দেওয়া। প্রশাসন যদি শক্তভাবে পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পাথর লুট বন্ধ করা সম্ভব না। ফটোগ্রাফারদের ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। না হলে এরা আরও বেপরোয়া হয়ে যাবে। প্রশাসন চাইলে এই লুটপাট বন্ধ করা সম্ভব।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, ‘মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অভিযুক্তদের আটক করতে। আর সাদাপাথরে লুটপাট বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। আজও তিনজনকে দুই মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘সাদাপাথর লুট বন্ধ করতে আজকেও অভিযান হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফটোগ্রাফারদের ওপর হামলার ঘটনা এখন জানলাম। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাত্র একটি: গবেষণা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের নাটক সাজানো হয়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

শুধু নোটিশে চাকরি হারাবেন সরকারি কর্মচারীরা, আপিলের সুযোগ নেই

আপনার ছেলেমানুষি মানায় না: প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে দুদু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত