Ajker Patrika

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দী ৩ সহস্রাধিক পরিবার

নীলফামারী ও ডিমলা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৩, ২০: ০০
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দী ৩ সহস্রাধিক পরিবার

তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডিমলায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার ১৫টি চরাঞ্চলের তিন সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজের সব কটি জলকপাট (৪৪টি) খুলে দেওয়া হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুরে পানিপ্রবাহ কিছুটা কমলেও বিকেলে আবারও বৃদ্ধি পায়। বেলা ৩টায় ১৭ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি ও খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ১৫টি চরাঞ্চলের তিন সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বুধবার রাত থেকে নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব ছাতনাই এবং ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। দুপুরের দিকে পানি কিছুটা কমলে স্বস্তি ফিরে পরিবারগুলোর মধ্যে। কিন্তু বেলা ৩টায় ফের পানি বৃদ্ধিতে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে।’

ডিমলায় তিস্তার অববাহিকার কিসামত চরউপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের টাপুর চর, পাগলার চর, টেপাখড়িবাড়িসহ কয়েক গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুপুরে পানি কিছুটা কমলেও বিকেলে ফের বাড়তে শুরু করেছে। সন্ধ্যার দিকে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় চরের মানুষকে মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানের ঢলে গতকাল রাতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আজ সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি প্রবাহ ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়। যা বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে।

সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকার পর দুপুরে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা ৩টায় ফের ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

ডিমলায় তিস্তার অববাহিকার কিসামত চর।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফা-উদ-দৌলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুরে পানিপ্রবাহ কমলেও সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর অববাহিকায় চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়ার জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।’ 

ডিমলা উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ২০ টন চাল ও দুই লাখ টাকা মজুত রয়েছে।’ 

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের পানিবন্দী মানুষের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তালিকাটি হাতে পেলে জানা যাবে কী পরিমাণ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।

‘এ ছাড়া পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাজ শুরু করেছে। আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে। রাতের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত