Ajker Patrika

বেরোবি: একই মামলার আসামি এক শিক্ষকের ছুটি বাতিল, অপরজনকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব প্রদান

বেরোবি সংবাদদাতা
অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক ও সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক ও সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুই শিক্ষককে ঘিরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একই মামলায় অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও একজন শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে নতুন প্রশাসনিক দায়িত্ব, আর অন্যজনের উচ্চশিক্ষার ছুটি আটকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক, পিএইচডি করার জন্য মালয়েশিয়ায় যেতে শিক্ষা ছুটির আবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় তাঁর ছুটি আটকে দেওয়া হয়। সূত্র অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানের মামলায় তাঁর নাম থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজাহারে তাঁর নাম রয়েছে ৭৩ নম্বর আসামি হিসেবে।

অন্যদিকে সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক, একই মামলার ১৩৩ নম্বর আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে সম্প্রতি সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

একই মামলায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের প্রতি প্রশাসনের এই ভিন্ন আচরণে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলনের ওপর দাঁড়িয়ে বর্তমান প্রশাসন কীভাবে একজন আসামিকে সহকারী প্রক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারে? আবার একই মামলার অন্য একজন শিক্ষকের শিক্ষা ছুটি আটকে দেয়, এটা প্রশাসনের দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছুই না।’

জানা যায়, বর্তমান প্রক্টর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. ফেরদৌস রহমানের বিশেষ সুপারিশেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও মো. মনিরুল ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব প্রদান করে। কারণ, তিনি প্রক্টরের আস্থাভাজন ও একই বিভাগের শিক্ষক।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুলাই আন্দোলনে রংপুর শহরে আহত মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ ১৪০ জনের নাম উল্লেখ করে রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে শহিদুল উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ৮০০ থেকে ১০০০ ছাত্র-জনতা বেলা ৩টার দিকে রংপুর শহরের টাউন হলের মোড়ে পৌঁছালে সেখানে উল্লিখিত আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালালে শহিদুল মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজে ১০ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনি সুস্থ হন।

এ বিষয়ে জানতে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জুলাই মামলার আসামিকে কেন সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘মামলাটা ভুয়া। মামলার বাদী বলেছে এরা জড়িত না। বাদী অ্যাফিডেভিট করে দিয়েছে। এই জন্য আমরা তাকে রেখেছি।’

একই প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রক্টর তাঁর সহকারী প্রক্টরকে পছন্দ করেন। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি ফেরত চান ট্রাম্প, লক্ষ্য চীনের পারমাণবিক স্থাপনা

সেনা আশ্রয় ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী

স্ত্রী পুরুষ নন—আদালতে প্রমাণ করতে হবে মাখোঁকে

দায়িত্বে অবহেলায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়ছে

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: গণভোটের সময়-প্রশ্ন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত