Ajker Patrika

ব্রহ্মপুত্রের পেটে ৩০০ ঘরবাড়ি

প্রতিনিধি, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) 
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১৯: ৫০
ব্রহ্মপুত্রের পেটে ৩০০ ঘরবাড়ি

‘এমন ভাঙন জীবনেও দেহি নাই। বাড়িঘর সরানোর সময় পর্যন্ত দেয় না। সারা রাত ঘুমাতে পারি নাই। কেবল একটাই চিন্তা কখন যে ঘরসহ বসতভিটা নদীতে চলে যায়।

ভোররাত থেকে ঘর ভাঙা শুরু করেছি, খাওয়া দাওয়া নাই। শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে পারব কিনা জানি না। ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথায় আশ্রয় নিব, ভাবতেই কান্না আসে।’ কথাগুলো বলছিলেন পিপুলিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান ফকির (৭০)। তাঁর মতো অনেকেই ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের শিকার হয়ে দিশেহারা। কেউ মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

গাইবান্ধার ফুলছড়ির পিপুলিয়া গ্রামে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এবারের বর্ষায় ওই এলাকার ৩ শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ব্রহ্মপুত্রের পেটে চলে গেছে। নদীপাড়ের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন। ঈদের আগের দিন থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে গত শনিবার পর্যন্ত ৪৫ পরিবারের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গাছপালা ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে একটি আদর্শ গ্রাম, দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মসজিদ, একটি ঈদগাহ মাঠ, কয়েকশ পরিবারের ঘরবাড়িসহ শত শত একর ফসলি জমি।

ভাঙন এলাকার লোকজন জানান, ঈদের পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ৫৭টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। মানুষগুলো আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন উঁচু ফাঁকা স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, পিপুলিয়া গ্রামের সবাই নদী পাড়ে বসে চোখে শুধু ভাঙনের দৃশ্য দেখছেন। আর ঝুঁকির সম্মুখীন পরিবারগুলো বাড়িঘর, আসবাবপত্র ও গাছপালাসহ সম্ভাব্য জিনিসপত্র সরাতে ব্যস্ত।

পিপুলিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদ (৭০) বলেন, ২০ বছর আগে নদীভাঙনে জমিজমা বসতভিটা হারিয়ে এখানে এসে ঠাঁই নিয়েছিলাম। কিন্তু এবারের ভাঙনে এখান থেকেও বিতাড়িত হলাম। স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিব, বলতে পারছি না।

একই গ্রামের আনোয়ারা বেগম বলেন, নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছাপড়া তুলে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। এখন কি করব কোথায় যাব ভেবে দুচোখে অন্ধকার দেখছি। প্রায় একই ধরনের কথা বলেন ভাঙনের শিকার সুরুজ্জামান, বেলাল হোসেন, আবুল কাশেম, মাজেদা বেগম, মালেক উদ্দিনসহ অনেকে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর মন্ডল বলেন, এবারের ভাঙনে পিপুলিয়া গ্রামে ৩ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। গৃহহীন পরিবারগুলো উঁচু স্থানে অথবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকার লোকজনের মাঝে জিআর ও ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থসহ চাল বিতরণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত