Ajker Patrika

আগুন নিয়ে ব্যবসা, নেই প্রশাসনের নজরদারি

প্রতিনিধি, দিনাজপুর
আগুন নিয়ে ব্যবসা, নেই প্রশাসনের নজরদারি

দিনাজপুরে যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন দোকানে অবৈধভাবে এলপি গ্যাসসহ সিলিন্ডার অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে ঝুঁকিতে আছেন ক্রেতাসহ পথচারী ও আশেপাশের এলাকার জনগণ। যে কোন সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। 

সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মুদি দোকান, পানের দোকান, চায়ের দোকান, ওষুধের দোকান, রড-সিমেন্টের দোকান, বিকাশ-ইজিলোড়ের দোকান, এমনকি লন্ড্রির দোকানে অগ্নিনিরোধক বা কোনোরূপ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। 

জানা যায়, দিনাজপুরে সরকারিভাবে গ্যাসের সংযোগ না থাকায় বাসাবাড়িতে রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডারের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। ফলে লাভজনক এ ব্যবসাকে ঘিরে জমে উঠেছে একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। নগদ লাভের আশায় ডিলার ও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কোনোরূপ যাচাই বাছাই ছাড়াই সকলের নিকট গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। অত্যন্ত সংবেদনশীল ও দাহ্য পদার্থ হওয়া সত্ত্বেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে জানান স্থানীয়রা। 
 
দিনাজপুরের প্রবীণ চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী বালুবাড়ির রাধূনী চুলা ঘরের স্বত্বাধিকারী মনসুর আলী জানান, গ্যাস সিলিন্ডার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য। যে কোন সময় এতে বিস্ফোরণ ঘটে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অথচ এ দিকে কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। ১০ / ২০ টাকা লাভের আশায় যে কেউ ব্যবসার ভাইল হিসেবে গ্যাস সিলিন্ডার রাখছে। 
 
ফরিদপুর গোরস্থান মোড়ের বাশার এন্টার প্রাইজের মালিক আবুল বাশার জানান, অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি পণ্য হওয়ার পরও এটিতে প্রশাসনের নজরদারি না থাকা নজিরবিহীন ঘটনা। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর এ ব্যাপারে ন্যূনতম জ্ঞানও নেই। এ যেন আগুন নিয়ে খেলা করার শামিল। 
 
মুদি দোকানে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডারফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের খুচরা সিলিন্ডার কিনতে আসা রেজাউল ইসলাম বলেন, হাতের কাছে পাই, দূরে যেতে হয় না তাই বাড়ির পাশের মুদি দোকান থেকেই কিনি। সিলিন্ডারেরও মেয়াদ থাকে এটি জানা ছিল না। এখন থেকে বড় দোকান থেকেই কিনব। 

জানা গেছে, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কেউ গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান দিতে পারে না। কোন ডিলার বা ব্যবসায়ী গ্যাস বা তৈলাক্ত পদার্থ বিক্রির জন্য আবেদন করলে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি বিক্রির স্থান পরিদর্শন করে দোকান ও গুদামের নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে সার্বিক রিপোর্ট দিলে এবং স্থানীয় প্রশাসনের ছাড়পত্র পেলে ব্যবসার অনুমতি পেতে পারেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশাসনের সঠিক তদারকি ও দুর্বলতার সুযোগে অধিকাংশ ব্যবসায়ীই নিয়ম মানার প্রয়োজন বোধ করেন না। 

এ ব্যাপারে বিস্ফোরক পরিদপ্তর, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের রাজশাহী অঞ্চলের বিস্ফোরক পরিদর্শক ড. মো: আসাদুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের বিধিমালায় বলা আছে, এক্সক্লুসিভ লাইসেন্স ছাড়া নিরাপত্তা বজায় রেখে আটটি সিলিন্ডার রেখে যে কেউ ব্যবসা করতে পারবে। সবাই এই সুযোগটিই গ্রহণ করে। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব পায় না। এ ছাড়া রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ষোলোটি জেলার জন্য তিনি একমাত্র তদারককারী ব্যক্তি। যার কারণে তার পক্ষে এত বড় এলাকা তদারক করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জিল হক বলেন, কেউ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে যথাযথ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত