Ajker Patrika

সাজার মেয়াদ শেষ হলেও মুক্তি মিলছে না ৭ ভারতীয়ের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
সাজার মেয়াদ শেষ হলেও মুক্তি মিলছে না ৭ ভারতীয়ের

অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগের সময় শেষ হলেও নানা জটিলতায় মুক্তি মিলছে না সাত ভারতীয় নাগরিকের। 

কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার কারা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে জানালেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা না পাওয়ায় তাঁদের মুক্তি মিলছে না। 

জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে নয়জন ভারতীয় নাগরিক বন্দী আছেন। এর মধ্যে সাতজনের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে। অপর একজন হাজতি এবং একজন সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। 

কারা সূত্র জানায়, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়ে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ভারতের নাগরিক সেলিম মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও মাহা আলম শেখকে কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁদের বাড়ি আসামের ধুবরি জেলার দক্ষিণ মানকারচরের হাট শিঙ্গিমারী থানার কানাইমারি দক্ষিণ শালমারা গ্রামে। তিন মাসের সাজাপ্রাপ্ত ভারতের এই তিন নাগরিকের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি। 

আর ভারতীয় নাগরিক গোলজার ও তৈয়ব আলী ২০২১ সালের ২ এপ্রিল রৌমারী সীমান্তে আটক হন। তাঁদের বাড়ি ধুবরি জেলার দক্ষিণ শালমারার দ্বীপচর গ্রামে। 

গোলজার ও তৈয়ব আলীকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাঁদের ১০ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তাঁদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি। 

অপরজন ভারতের কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার সাদিয়ালের কুটি গ্রামের বাসিন্দা আলম মিয়া। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হলে চার মাসের কারাদণ্ড হয় আলমের। ২০২১ সালের ২১ মে থেকে কুড়িগ্রাম কারাগারে বন্দী আলমের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে একই বছর ২২ সেপ্টেম্বর। 

একই জটিলতায় সাজার মেয়াদ শেষে হওয়ার পর প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দী ভারতের নাগরিক নুরুজ্জামান। তিনি ভারতের আসামের ধুবরি জেলার হাট শিঙ্গিমারি থানার কানাইমারা গ্রামের ছরুদ আলীর ছেলে। 

অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক নুরুজ্জামান ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন। আদালত তাঁর দুই মাস ১৫ দিনের সাজা দেন। সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ। 

এ ছাড়া আরও দুই ভারতীয় নাগরিক কুড়িগ্রাম কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বন্দী আছেন হারেছ আলী। তাঁর বাড়ি ভারতের ধুবরি জেলার নীলক্ষীয়া পাট্রু গ্রামের আলী জামালের ছেলে। আদালত তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের সাজা দিয়েছেন। তিনি ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে কারাভোগ করছেন। 

আর চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি সীমান্ত এলাকায় আটক হয়ে জেলা কারাগারে বন্দী আছেন আনোয়ারুল শেখ। তিনি ভারতের কোচবিহার জেলার সাইফুল আলীর ছেলে। তাঁর মামলা এখনো বিচারাধীন। 

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যারা কারাগারে বন্দী আছেন তাঁরা মূলত রিলিজড ফরেন প্রিজনার। পুশব্যাকের সম্মতি পাওয়ায় তাঁদের ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। 

কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার মো. ইসমাইল হোসেন ভারতীয় নাগরিকদের মুক্তি নিয়ে জটিলতা ও বিড়ম্বনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়গুলো সময় মতো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত অনুমোদন পাওয়া গেছে। সে মোতাবেক বিজিবি, রংপুর সেক্টর কমান্ডারকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিজিবি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগযোগ করে প্রত্যাবাসনের তারিখ জানাবে। কিন্তু এখনো অনুমোদন মেলেনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের। তাঁরা তথ্য যাচাই বাছাই করছেন। ভারতীয় পক্ষের ক্লিয়ারেন্স ও বিজিবির সম্মতি পেলে আমরা পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে সাজা পূরণ হওয়া বন্দীদের পুশব্যাক করব।’ 

অনেক সময় আটক ভারতীয়রা ঠিকানা ভুল দেওয়ার কারণে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য যাচাইয়ে বেশি সময় লাগে বলে জানান জেলার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত