আক্কেলপুরে একই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর বিএনপির দুই পক্ষের একই স্থানে একই সময়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। 
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পৌরশহরের রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে এই আইন বলবৎ থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে আজ দুপুরে পৌরশহরে মাইকিং করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিএনপির দুই পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে কর্মসূচি ডাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সরেজমিনে আজ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় মাঠে নেতাদের বসার জন্য ডেকোরেশন করা হয়েছে। মাঠে বসার জন্য চেয়ারও আনা হয়েছিল। অনেকেই সভাস্থল ঘুরে যাচ্ছেন।

এ সময় জানতে চাইলে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ নির্ধারণ করেছিলাম। দলের একটি পক্ষ ইচ্ছা করে একই স্থানে সমাবেশ ডেকেছে। এ কারণে প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আমরা আইন মেনে অন্য কোনো স্থানে কমিটি গঠন করব।’

পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই পকেট কমিটি মেনে নেব না। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে। তিন দিন আগে সেই ওয়ার্ডে মাইকিং করে সম্মেলনের স্থান ও তারিখ জানাতে হবে। অন্যথায় দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এর দায়দায়িত্ব আহ্বায়ক কমিটিকে নিতে হবে।’

উত্তরাঞ্চল জাতীয়তাবাদী ফোরামের সহসম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘মামলা খেয়ে আমি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে থাকলাম। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিএনপির কমিটি হচ্ছে সেটির বিষয়ে কিছুই জানতে পারলাম না। তাঁরা ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে নিজেদের পছন্দের লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়ার জন্য তিন ওয়ার্ড একত্র করে নির্বাচন ছাড়াই পকেট কমিটি গঠন করছে। তাতে দলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।’

পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘আমি মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে ঘর ছেড়ে রাতের পর রাত মাঠে কাটিয়েছি। দলের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করার পরও আজ তারা আমাকে মূল্যায়ন করে না। অথচ তারা ওই সময় ঘরে বসেছিল। আজ আমার মতো ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ রেখে দলের গঠনতন্ত্র না মেনে কমিটি করার পাঁয়তারা করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এক কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টহল দিচ্ছেন। কেউ আইন ভেঙে সভা-সমাবেশ করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।