Ajker Patrika

ওয়াসার পানিতে উৎকট গন্ধ, দুর্ভোগে রাজশাহীবাসী

প্রতিনিধি, রাজশাহী
ওয়াসার পানিতে উৎকট গন্ধ, দুর্ভোগে রাজশাহীবাসী

রাজশাহী নগরীতে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) দেওয়া পানির দুর্গন্ধ কাটছেই না। পাইপলাইনের ওয়াশ আউট পয়েন্ট নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে ময়লা জমে পানিতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও পানির সঙ্গে ভেসে আসছে ময়লা ও শেওলা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর কালাবাগান, হেতেমখাঁ, হড়গ্রাম, দড়িখড়বোনা, রাণীবাজার, মাস্টারপাড়া ও লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন ওয়াসার পাইপের পানিতে প্রকট দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এতে ওই পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে। প্রত্যেকদিন সকালের দিকে তুলনামূলকভাবে পানিতে বেশি দুর্গন্ধ পাওয়া যায়।

কলাবাগান এলাকায় রাস্তার ধারে সবজি বিক্রি করেন সাবিয়া বেগম। তিনি বলেন, দোকানে আসার তাড়া থাকে বলে সকাল বেলা বাড়ির সব কাজ শেষ করে আসতে হয়। ওই সময় পাইপের পানিতে খুব দুর্গন্ধ থাকে। ফলে পানি পান করা যায় না। ইদানীং পানিতে ময়লাও আসছে। তাই পানি দিয়ে কোন কাজ করা যাচ্ছে না। এতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

হেতেমখাঁ এলাকার বাসিন্দা রাশিদা পারভীন বলেন, প্রত্যেকদিন ভোর ৬টার দিকে পাইপে পানি আসে। কিন্তু দুর্গন্ধের কারণে ১৫-২০ মিনিট পানির ট্যাপ ছেড়ে রাখতে হয়। তারপর কিছুটা গন্ধ কমে। কিন্তু পানির আয়রন কোন সময়ই কমে না। পাত্রে রাখলে নিচে আয়রনের স্তর পড়ে যায়। ওই পানিতে গোসল করায় চুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপরও বাধ্য হয়ে ওই পানিই ব্যবহার করতে হয়। 
 
হড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, আমাদের পাড়ার গলিতে ওয়াসার পাইপলাইনের একটি ওয়াশ আউট পয়েন্ট আছে। সেটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে ময়লা জমে যায়। এতে পানিতে দুর্গন্ধ হয়। অভিযোগ দেওয়ার পর ওয়াসার লোকজন পরিষ্কার করে। কিছুদিন পানি ঠিক থাকে। এরপর আবার পানিতে দুর্গন্ধ হয়। ভাসমান ময়লা আসতে থাকে।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান বাদশা বলেন, পানি খারাপ হলে ফুড পয়জনিং, জন্ডিস, ডায়রিয়া ও টাইফয়েডসহ পানিবাহিত নানা রোগ হয়। আমাদের কাছে প্রতিনিয়তই এ ধরনের রোগী আসছে। তাই নগরবাসী যেন বিশুদ্ধ পানি পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে অনেক রোগবালাই কমে যাবে।

পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে চাননি রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ। তবে ওয়াসার সচিব মুহাম্মদ আবদুল হাকিম টলস্টয় বলেন, জনবল সংকটের কারণে আমরা অনেক সমস্যায় আছি। তাও চেষ্টা করছি যেন প্রতি মাসে অন্তত প্রতিটি পাইপের ওয়াশ আউট পয়েন্ট পরিষ্কার করা হয়। মাঝে মাঝে অভিযোগ পেলে আগেও পরিষ্কার করা হয়।

উল্লেখ্য, নগরবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে ২০১১ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পানি সরবরাহ বিভাগকে আলাদা করে রাজশাহী ওয়াসা গঠিত করা হয়। বর্তমানে নগরীতে ৭১২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওয়াসার পাইপলাইন বিস্তৃত রয়েছে। এতে মোট গ্রাহকসংখ্যা ৪২ হাজার ৬৮০ জন। প্রত্যেকদিন পানির চাহিদা রয়েছে ১১ দশমিক ৩৩ কোটি লিটার। কিন্তু ওয়াসা উৎপাদন করতে পারে ৭ দশমিক ৭৮ কোটি লিটার পানি। ফলে ভূগর্ভস্থ স্তর থেকে আসে ৯৬ শতাংশ। তারপরও পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে পানিতে থাকে উৎকট দুর্গন্ধ। ভেসে আসে ময়লা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

লাইভ-২ (২৩ জুন, ২০২৫) ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইসরায়েল, তেহরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি থেকে বিদায় নিচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত