Ajker Patrika

৩০ কেজি গাঁজা জব্দ করে ৭ কেজি দেখিয়ে মামলা, এসআই প্রত্যাহার

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
এসআই আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত
এসআই আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৩০ কেজি গাঁজা জব্দের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, ৩০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হলেও পুলিশ জব্দ দেখিয়েছে মাত্র সাত কেজি। এ ঘটনায় বনপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই আব্দুর রাজ্জাককে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভন চন্দ্র হোড় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড় থেকে গাঁজাসহ একটি কাভার্ড ভ্যান ও একজনকে আটক করে স্থানীয় জনতা। এ সময় আরও দুজন পালিয়ে যান। গ্রামবাসী পুলিশে খবর দিলে বনপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

প্রত্যক্ষদর্শী ছাতিয়ানগাছা গ্রামের বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে এলাকাবাসী একটি নীল রঙের কাভার্ড ভ্যান থেকে দুজন লোককে একটি বড় পলি বস্তা নামাতে দেখেন। চোর সন্দেহে ধাওয়া দিলে তাঁরা বস্তা ফেলে পালিয়ে যান। কিন্তু কাভার্ড ভ্যানসহ চালককে গ্রামবাসী আটক করেন। পরে পুলিশ এসে গাঁজা ও কাভার্ড ভ্যান জব্দ করে এবং চালককে গ্রেপ্তার করে।

ওই গ্রামের আরও এক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিজেরা ১৪টি পলিথিনের ব্যাগভর্তি গাঁজা পুলিশকে দিয়েছি। প্রতিটি ব্যাগে কমপক্ষে ২ কেজি করে গাঁজা ছিল, সে হিসাবে ২৮ কেজির কম হবে না। আমরা দাঁড়িপাল্লা এনে মাপতে চাইলে পুলিশ তাতে রাজি হয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এসআই আব্দুর রাজ্জাক জনসম্মুখে বস্তা খুলে ১৪টি প্যাকেট গুণে গুণে জব্দ করলেও পরে মামলার নথিতে মাত্র সাত কেজি গাঁজা উদ্ধারের কথা উল্লেখ করেন। এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে জব্দ করা ও মামলার তথ্যের অমিল পাওয়া যাওয়ায় এসআই আব্দুর রাজ্জাককে বনপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।

এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা হলেন লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার সিংগাদার গ্রামের রশিদ মণ্ডলের ছেলে সায়েম মণ্ডল (৩৪), উপজেলার ছাতিয়ানগাছা গ্রামের পিয়ার আলীর ছেলে আশরাফ আলী (৪৫) ও লালপুরের গোধরা গ্রামের কৈয়রা প্রামাণিকের ছেলে ফয়েজুল্লাহ প্রামাণিক (৪৮)।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, কাভার্ড ভ্যানচালককে নাটোর আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং পলাতক অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়াইগ্রাম সার্কেল শোভন চন্দ্র হোড় বলেন, প্রাথমিক তদন্তে উদ্ধার ও জব্দ করা গাঁজার মিল না থাকায় তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত